হলদিয়া মডেলেই যেন পুরাতন মালদহ পুরসভা দখল করল তৃণমূল। অন্তত, তৃণমূলের জেলা নেতাদের অনেকেই তাই মনে করছেন। কারণ, দলের সাংসদ-নেতা শুভেন্দু অধিকারী রবিবার মালদহে পা দেওয়ার পরেই সিপিএমের ১ জন ও বিজেপির ২ জন কাউন্সিলর দল ছেড়ে তৃণমূল যোগ দেন এবং তৃণমূলের বোর্ড গঠন প্রায় নিশ্চিত হয়ে যায়।
সোমবার দুপুর সাডে় ১২টা নাগাদ ভোটাভুটিতে ৯ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর কার্তিক ঘোষ চেয়ারম্যান হিসেবে জয়ী হন। তাঁর বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন বহিষ্কৃত তৃণমূল নেতা বশিষ্ট ত্রিবেদী। ২০টি ভোটের মধ্যে ১৩টি ভোট পেয়ে জয়ী হন তৃণমূলের কার্তিকবাবু। এর পরেই তৃণমূলের কর্মী সমর্থকেরা বিজয় মিছিল শুরু করে দেন। তবে বিরোধী দলের তিন কাউন্সিলর আচমকা দল ছাড়ায় সংশ্লিষ্ট এলাকার বাসিন্দাদের অনেকেই ক্ষুব্ধ।
পুরাতন মালদহ পুরসভার ২০টি আসনের মধ্যে তৃণমূল একক ভাবে পেয়েছিল ১০ টি আসন। বিজেপি ৫টি, নির্দল দু’টি এবং সিপিএম দু’টি আসন পেয়েছিল। বোর্ড কে গড়বে তা নিয়ে ছিল নানা জল্পনা। রবিবার রাতেই পুরসভার ২ ও ৭ নম্বর ওয়ার্ডের দুই বিজেপি কাউন্সিলর নেপাল হালদার ও গৌরাঙ্গ সাহা এবং ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিএমের কাউন্সিলর চন্দনা হালদার তৃণমূলে যোগ দান করেন। পুরবোর্ড গঠনের আগের দিন তাঁরা তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় শোরগোল পড়ে যায়। অভিযোগ ওঠে অর্থ এবং নানা প্রলোভনে যোগ দিয়েছেন তাঁরা। কাউন্সিলরদের এমন আচরণে ক্ষুব্ধ ওয়ার্ডের বাসিন্দারা। ২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের অনেকেই জানান, ভোটে জেতার পরে দলত্যাগ করার আগে অনুমতি নেওয়াটা বাধ্যতামূলক করা দরকার।
যদিও তিন দলত্যাগী কাউন্সিলর দাবি করেন, ‘‘আমরা এলাকার উন্নয়নের জন্য তৃণমূলে সমর্থন করেছি। বিরোধী হিসেবে থাকলে এলাকার উন্নয়ন হতো না।’’
এদিন চেয়ারম্যান পদে ভোটে হারের পরে বশিষ্ঠবাবুর দাবি, ‘‘আমরা টাকার কাছে বিক্রি হয়ে যাইনি। মানুষ তৃণমূলের বিরুদ্ধে রায় দিয়ে আমাদের ভোটে জিতিয়েছেন। তাই আমরা চেয়ারম্যান পদে লড়েছি। তবে কিছু বেইমান টাকার কাছে বিক্রি হয়ে গিয়ে তৃণমূলকে সমর্থন করেছেন।’’ বিজেপির জেলা নেতা তথা ১৪ নম্বর ওর্য়াডের কাউন্সিলর সৌমেন মিত্র বলেন, ‘‘দল ও এলাকার মানুষের বিশ্বাসভঙ্গ করা একেবারেই উচিত হয়নি।’’ তবে চেয়ারম্যান হিসেবে শপথ নেওয়ার পর কার্তিক বাবু বলেন, ‘‘এই প্রথম পুরাতন মালদহে বোর্ড গঠন করল তৃণমূল। আগামীতে পুরসভার উন্নয়নই হবে মুল লক্ষ্য। অন্য কিছু ভাবছি না।’’