ধৃত: গ্রেফতারের পরে কালীশঙ্কর রায়। —নিজস্ব চিত্র
ঘটনার বারো দিনের মাথায় দলের প্রতিবাদী কর্মী খুনে অভিযুক্ত তৃণমূলের নেতা কালীশঙ্কর রায় সহ ৫ জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। মঙ্গলবার গভীর রাতে কোচবিহার কোতোয়ালি থানার ঘুঘুমারি ও পাটছড়া এলাকা থেকে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ জানায়, ধৃতদের মধ্যে কালীশঙ্করবাবু ছাড়াও রয়েছে জোবরাজ মিয়াঁ, সমর মোদক, সুকুমার রায় সরকার ও জাহের হোসেন। ধৃতদের প্রত্যেকের বাড়ি পাটছড়ায়।
অভিযুক্তদের এ দিন কোচবিহার সিজেএম আদালতে তোলা হলে বিচারক দশ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন। আদালতে তোলার সময় বিক্ষোভ দেখান এলাকার মানুষ। দিন কয়েক আগে ওই অভিযোগে জয়শঙ্কর বর্মনকে গ্রেফতার করে। এ ছাড়াও আরও ৭ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ আটক করেছে। কোচবিহারের পুলিশ সুপার অনুপ জায়সবাল বলেন, “ঘটনার তদন্ত চলছে। বাকি অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।”
পুলিশ সূত্রের খবর, গত ১৮ মে পাটছড়া ডাঙারহাট বাজারে দলীয় পার্টি অফিসে সুভাষ রায় (৪৮) নামে তৃণমূলের এক কর্মীকে খুন করা হয়। গ্রাম পঞ্চায়েতের কাজের দুর্নীতি নিয়ে স্থানীয় সূত্রে খবর, দীর্ঘ দিন ধরে সরব ছিলেন সুভাষবাবু। এমনকি ১০০ দিনের কাজের বেনিফেসিয়ারিদের নিয়ে আদালতেও যান তিনি।
অভিযোগ, এরপরেই তৃণমূলের পাটছড়া অঞ্চল সভাপতি তথা উপপ্রধানের দায়িত্ব থাকা কালীশঙ্করবাবু ও তাঁর অনুগামীরা সুভাষবাবুকে পার্টি অফিসে নিয়ে গিয়ে লোহার রড, বাঁশের লাঠি, ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে। পরে পুলিশ গিয়ে সুভাষবাবুকে উদ্ধার করে এমজেএন হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে তাঁর মৃত্যু হয়।
ঘটনার চার দিনের মাথায় মৃত্যু হয় সুভাষবাবুর মা পবিত্রদেবীর। তাঁদের বাড়ির লোকের দাবি, সন্তানের শোকেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে। ওই ঘটনার পর থেকে ওই এলাকা তো বটেই কোচবিহার ১ নম্বর ব্লকের তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।
চাপে পড়ে ২৯ মে কালীশঙ্কর সহ অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা-কর্মীদের দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। মঙ্গলবার রাতে পুলিশ অভিযুক্তদের ৫ জনকে গ্রেফতার করে। বুধবার তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সহ সভাপতি আব্দুল জলিল আহমেদ ওই এলাকায় যান। তিনি বলেন, “আমরা সুভাষবাবুর পরিবারের পাশে আছি। অপরাধীদের কঠিন শাস্তির দাবি করছি আমরা।” সুভাষবাবুর আত্মীয় ওই গ্রামের বাসিন্দা গণেশ রায় বলেন, “আমরা অভিযুক্তদের ফাঁসি চাই।”