Sydney Bondi Beach Attack

অস্ট্রেলিয়ায় নির্বিচারে গুলি চালিয়ে ১৫ জনকে হত্যা করা পিতা-পুত্রের পাকিস্তান যোগ! আর কী তথ্য প্রকাশ্যে এল

প্রাথমিক তদন্তে অস্ট্রেলিয়ার পুলিশ জানতে পেরেছে, ঘাতক পিতার নামে ছ’টি আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স ছিল। পুলিশ মনে করছে, রবিবারের হামলায় সব ক’টি আগ্নেয়াস্ত্রই ব্যবহার করা হয়।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ০৯:৪৩
Share:

দুই ঘাতক। (বাঁ দিকে) পুত্র নবিদ আক্রম এবং পিতা সাজিদ আক্রম (ডান দিকে)। ছবি: সংগৃহীত।

অস্ট্রেলিয়ার সিডনি শহরের বন্ডি সমুদ্রসৈকতে গুলি চালানোর ঘটনায় দুই ঘাতকের নাম আগেই জানিয়েছিল পুলিশ। এ বার তাঁদের সম্পর্কে সবিস্তার তথ্য দিল অস্ট্রেলিয়ার পুলিশ। পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, রবিবার ভিড়ে ঠাসা সমুদ্রসৈকতে নির্বিচারে গুলি চালিয়ে ১৫ জনকে হত্যা করেছেন দু’জনই। তাঁদের এক জন হলেন সাজিদ আক্রম (৫০)। অন্য জন তাঁরই বছর চব্বিশের পুত্র নবিদ আক্রম। অস্ট্রেলিয়ার একাধিক সংবাদসংস্থা সে দেশের গোয়েন্দা সংস্থা ‘আসিও’-কে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, ‘খুব সম্ভবত’ তাঁরা পাকিস্তানের নাগরিক কিংবা পাক বংশোদ্ভূত। পরে তাঁরা অস্ট্রেলিয়ায় চলে যান।

Advertisement

সিডনি অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলস প্রদেশের অন্তর্ভুক্ত। ওই প্রদেশের পুলিশ কমিশনার মার লানিয়ন সোমবার সাংবাদিক বৈঠক করে জানান, পিতা-পুত্র ছাড়া তৃতীয় কেউ এই হামলার সঙ্গে যুক্ত নন। তিনি এ-ও জানান যে, ঘটনাস্থলের খুব কাছ থেকে দু’টি বিস্ফোরক উদ্ধার করেছেন তদন্তকারীরা। সেগুলিকে পরে নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে। ‘এবিসি নিউজ়’ জানিয়েছে, ঘাতক পিতা-পুত্রের গাড়ি থেকে সন্ত্রাসবাদী সংগঠন ইসলামিক স্টেটস (আইএস)-এর পতাকা উদ্ধার করা হয়েছে।

প্রাথমিক তদন্তে অস্ট্রেলিয়ার পুলিশ এ-ও জানতে পেরেছে, ঘাতক পিতার নামে ছ’টি আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স ছিল। পুলিশ মনে করছে, রবিবারের হামলায় সব ক’টি আগ্নেয়াস্ত্রই ব্যবহার করা হয়।

Advertisement

রবিবার হামলার সময় বন্ডি সমুদ্রসৈকতে ইহুদিদের হানুকা উৎসব চলছিল। সিডনির ইহুদি গোষ্ঠীর মানুষ সেই উপলক্ষে সৈকতে ভিড় করেছিলেন। কিন্তু মুহূর্তে ছারখার হয়ে যায় সব আয়োজন। দুই বন্দুকধারী আচমকা সৈকতে চলে আসেন। ইহুদিদের লক্ষ্য করে নির্বিচারে গুলি চালাতে শুরু করেন। ১০ মিনিটের সেই হামলায় সিডনির সমুদ্রের ধারে মৃত্যু হয়েছে ১৫ জনের। পুলিশের গুলিতে মৃত্যু হয় ঘাতক পিতার। তাঁকে ধরলে মৃতের সংখ্যা ১৬! হামলাকারী পুত্র গুরুতর জখম অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁকে পুলিশি প্রহরায় রাখা হয়েছে। এ ছাড়া, আরও ৪০ জন জখম অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি। তাঁদের মধ্যে দু’জন পুলিশ আধিকারিকও রয়েছেন। চোট গুরুতর হলেও তাঁদের অবস্থা আপাতত স্থিতিশীল।

পুলিশ জানিয়েছে, রবিবার বন্ডি সৈকতের উৎসবে অন্তত ১০০০ জন শামিল হয়েছিলেন। সৈকতের একটি অংশে উৎসব চলছিল। ফলে সেই জায়গাটি ভিড়ে ঠাসা ছিল। আচমকা সেখানে বন্দুক নিয়ে ঢুকে পড়েন দু’জন আততায়ী। নির্বিচারে গুলি চালান। যাঁকে সামনে পেয়েছেন, মেরেছেন তাঁরা। মহিলা, শিশু বা বয়স্কদেরও রেয়াত করা হয়নি। নিহত ১৫ জনের মধ্যে ১০ থেকে ৮৭ বছর বয়সিরা রয়েছেন।

তবে কী কারণে এই হামলা, তা এখনও স্পষ্ট নয় বলে জানিয়েছে পুলিশ। পুলিশ কমিশনার এই প্রসঙ্গে বলেছেন, “হামলার কারণ খতিয়ে দেখছি আমরা। আমার ধারণা তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এটা।” ইতিমধ্যেই বন্ডি সৈকতের ঘটনাকে সন্ত্রাসবাদী হামলার তকমা দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া সরকার। হামলার প্রকৃত উদ্দেশ্য জানা না-গেলেও এটা জানা গিয়েছে, ঘাতক পিতার অস্ট্রলিয়ায় একটি ফলের দোকান রয়েছে। রবিবার হামলা চালানোর আগে গাড়ি চালিয়ে সমুদ্রসৈকতে এসেছিলেন পুত্র। তাঁর ড্রাইভিং লাইসেন্স উদ্ধার করেছে পুলিশ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement