ভোট চক্করে তৃণমূলেও রাম বিনে ‘গীত’ নাই

কোচবিহার শহর যুব যুব তৃণমূলের নেতা রাকেশ চৌধুরী ফেসবুকে লিখেছেন, ‘শ্রীরাম আমাদের সকলের মধ্যে আছে, তাই শ্রীরাম আমাদের সকলের। জয় জয় শ্রীরাম।’

Advertisement

নমিতেশ ঘোষ

কোচবিহার শেষ আপডেট: ০৭ অগস্ট ২০২০ ০৬:২২
Share:

প্রতীকী ছবি।

কেউ লিখলেন, ‘জয় জয় শ্রীরাম’, কেউ ‘জয় শ্রীরাম’। কেউ বললেন, ‘রাম সবার’। অবশেষে রামের ‘আশ্রয়’ নিলেন কোচবিহার জেলা তৃণমূলের একাধিক নেতা-কর্মীও। যা দেখে অনেকেরই বক্তব্য, ‘‘আসলে তৃণমূলের অনেকেই বুঝেছেন, আগামী বিধানসভা ভোটে রাম ছাড়া গতি নেই।”

Advertisement

বুধবার রামমন্দিরের ভূমিপুজো উপলক্ষে গেরুয়া শিবিরের নেতা-কর্মীরা সোশ্যাল নেটওয়ার্কে ‘জয় শ্রীরাম’ লিখতে থাকেন। এই উন্মাদনার আবহে তৃণমূল নেতা-কর্মীরাও ময়দানে নেমে পড়েন। তাঁদের বক্তব্যেও ফুটে ওঠে, রাম নিয়ে তাঁরাও ‘পিছিয়ে’ নেই। যদিও দলনেত্রীর পথ ধরেই তৃণমূলের কোচবিহার জেলার সভাপতি পার্থপ্রতিম রায় ফেসবুকেই লিখেছেন, ‘বিবিধের মাঝে ঐক্য— এটাই মোদের ভারতবর্ষ। নানা ভাষা নানা মত নানা পরিধান/বিবিধের মাঝে দেখো মিলন মহান।’ তিনি আরও লেখেন, ‘প্রত্যেকেই ধর্ম নিয়ে রাজনীতির প্রতিবাদ করেছেন।’ তবে বিজেপির জেলা সভানেত্রী মালতী রাভা এর পাল্টা বলেন, “ধর্ম নিয়ে রাজনীতি তৃণমূলই করে। মানুষ তাই এখন কেউ আর তৃণমূলের সঙ্গে নেই।”

কোচবিহার শহর যুব যুব তৃণমূলের নেতা রাকেশ চৌধুরী ফেসবুকে লিখেছেন, ‘শ্রীরাম আমাদের সকলের মধ্যে আছে, তাই শ্রীরাম আমাদের সকলের। জয় জয় শ্রীরাম।’ সেখানে অনেক তৃণমূল কর্মী ‘লাইক’ ও ‘কমেন্ট’ও করেছেন। এ প্রসঙ্গে বৃহস্পতিবার রাকেশ বলেন, “ধর্ম নিয়ে রাজনীতি আমরা চাই না। রাম সবার, কারও একার নয়। সে কথাই লিখেছি। ধর্মীয় সহাবস্থান চাই।”

Advertisement

চকচকা অঞ্চল তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা বলে পরিচিত বিকাশ সূত্রধর তাঁর ফেসবুকে লিখেছেন, ‘জয় হোক শ্রীরাম, তুমি কারও একক কুক্ষিগত নও, তুমি সকলের, রামকে রাজনৈতিক স্লোগানে আটকে না রেখে সকলের করা হোক। জয় শ্রীরাম।’ সেখানেও তৃণমূল কর্মীদের ‘লাইক’ ও ‘কমেন্ট’ রয়েছে অনেক। এই দু’জনই তৃণমূলের একাধিক জেলা শীর্ষনেতার ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। বিকাশ এ দিন বলেন, “স্পষ্ট ভাবেই প্রতিবাদ করেছি ভগবান রামচন্দ্রকে কুক্ষিগত করে রাখার চেষ্টার বিরুদ্ধে।”

বিগত লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের হাত থেকে কোচবিহার আসন ছিনিয়ে নিয়েছে বিজেপি। এর পর থেকেই রাজ্যের শাসক দলের সংগঠন অনেকটাই দুর্বল হয়ে পড়ে। তাদের বিরুদ্ধে সংখ্যালঘু তোষণের অভিযোগ তুলে সরব হয় বিজেপি। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এই অবস্থায় সংখ্যাগুরু ভোটব্যাঙ্ক অনেকটাই শাসক দলের হাতের বাইরে চলে যায়। সেই ভোট ব্যাঙ্ক ফিরিয়ে আনতে মরিয়া হয়ে উঠেছে তৃণমূল। সে জন্যেই ‘রাম-রাজনীতি’র আশ্রয় নিতে হচ্ছে বলে মনে করছে জেলার রাজনৈতিক মহল। তৃণমূল অবশ্য তা মানতে নারাজ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন