ক্ষোভ শুনে মেজাজ হারালেন মন্ত্রী

সরকারি জমির উপর প্রায় ৩০ বছরের বেশি সময় ধরে বসে থাকা উত্তর একটিয়াশালের মানুষ দীর্ঘদিন থেকেই পাট্টার দাবি জানিয়ে আসছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২১ অগস্ট ২০১৯ ০৪:২৫
Share:

নালিশ: পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেবের কাছে ক্ষোভ জানাচ্ছেন শিলিগুড়ি পুরসভার ৪০ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দারা। নিজস্ব চিত্র

‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচিতে প্রচারে গিয়ে গত সোমবার পুরসভার ৪০ নম্বর ওয়ার্ডে বাসিন্দাদের নানা অভিযোগ শুনতে হয়েছিল তৃণমূল বিধায়ক গৌতম দেবকে। মঙ্গলবার সকালে উত্তর একটিয়াশাল এলাকায় দীর্ঘদিন থেকে পাট্টা না পেয়ে বিক্ষোভ দেখান প্রায় ৪০টি পরিবারের সদস্যরা। আর তা দেখে শুনে মেজাজ হারালেন স্থানীয় বিধায়ক তথা মন্ত্রী গৌতম দেব। এক সময় তিনি চিৎকার করে এক যুবককে মোবাইলে ছবি তুলতে বারণ করেন। ওই যুবককে সরিয়ে দেওয়ার জন্য সঙ্গে থাকা কর্মীদের নির্দেশ দেন। তার পরে মহিলাদের সামনে গিয়ে উত্তেজিত ভাবেও কথা বলতে শোনা যায় মন্ত্রীকে। পরে মন্ত্রী জানান, অনেক সমস্যাই রয়েছে এলাকায়। সেগুলির ধীরে ধীরে সমাধান হবে।

Advertisement

এলাকার বাসিন্দারা জানান, সরকারি জমির উপর প্রায় ৩০ বছরের বেশি সময় ধরে বসে থাকা উত্তর একটিয়াশালের মানুষ দীর্ঘদিন থেকেই পাট্টার দাবি জানিয়ে আসছেন। তাঁদের অভিযোগ, ভোটের আগে আশ্বাস দেওয়া হয় প্রতিবারই, কিন্তু তাদের কাজ হয় না। সোমবার ৪০ নম্বর ওয়ার্ডের বিভিন্ন এলাকায় জনসংযোগযাত্রা করেন গৌতম দেব। জল, আলো নিকাশি, রাস্তাঘাটের খারাপ অবস্থা নিয়ে প্রায় প্রতিটি গলি থেকে মহিলারা মন্ত্রীর কাছে অভিযোগ জানান। কারও মেয়ের কন্যাশ্রীর টাকা মেলেনি, কারও বাড়িতে মানসিক ভারসাম্যহীন বাচ্চার চিকিৎসা শিবির হয়নি, আলো নেই, নর্দমা পরিষ্কার হয় না, কারও বার্ধক্য ভাতার সমস্যা রয়েছে। মসজিদ রোড, ২ নম্বর জ্যোতিনগর, দক্ষিণ একটিয়াশাল, গৌরাঙ্গপল্লিতে সমর্থক ছাড়াও সাধারণ মানুষের বাড়ি গেলে প্রচুর সমস্যার কথা বলেন তাঁরা।

রাতে গৌতম ছিলেন এক সমর্থকের বাড়ি। মঙ্গলবার সকালে ইসকন মন্দিরে পুজো দেন। তার পর উত্তর একটিয়াশালের প্রধান মোড়ে গেলে ক্ষোভের মুখে পড়েন তিনি। তাতেই তিনি ধৈর্য হারান। স্থানীয় বাসিন্দা নমিতা রায়ের কথায়, ‘‘পাট্টার কথা বলে সব রাজনৈতিক দল মিছিলে নিয়ে গিয়েছে। কিন্তু ভোটে জেতার পর কারও টিকির নাগাল পাওয়া যায় না। কোনও সমস্যা হলে খবর পাঠালেও আসেন না কাউন্সিলর। কথা না শুনে আমাদেরই হুমকি দিচ্ছেন মন্ত্রী। তা হলে আমরা কার কাছে যাব?’’ নমিতার সুরেই ক্ষোভ জানান অন্যরাও।

Advertisement

পরে মন্ত্রী বলেন, ‘‘জমি আমাদের দফতরের নয়। পুরসভায় দীর্ঘদিন থেকে সিপিএম ক্ষমতায়। আমি সমস্যার কথা শুনেছি। অন্য দফতরের সঙ্গে কথা বলে চেষ্টা করব। তবে পাট্টা দেব— এই আশ্বাস দিতে পারি না।’’ ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সত্যজিৎ অধিকারী জানান, তাঁরা পাট্টার বিষয়টি জানেন। সত্যজিতের কথায়, ‘‘পাট্টার জন্য ফর্ম তুলে আমি প্রায় ২০ দিন আগে সকলের হাতে হাতে দিয়েছি। কিন্তু ফর্ম পূরণ করা বা নথি জোগাড় করতে পারেননি বাসিন্দারা।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন