Bhetaguri

তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষে ভেটাগুড়িতে জখম শাসকদলের দুই কর্মী, অশান্তি নিয়ে তরজায় শাসক-বিরোধী

দিনহাটার ভেটাগুড়ি বাজারে সংঘর্ষের ঘটনায় শাসকদলের দাবি, এলাকায় সন্ত্রাস সৃষ্টি করে হামলা চালাচ্ছে বিজেপি। যদিও পদ্মশিবিরের পাল্টা দাবি, এটি তৃণমূলের গোষ্ঠী সংঘর্ষের ফল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কোচবিহার শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০২৩ ১৭:১০
Share:

ভেটাগুড়িতে সংঘর্ষের কিছু ক্ষণ পর ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে দিনহাটার থানার পুলিশবাহিনী। —নিজস্ব চিত্র।

পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণার আগে বিক্ষিপ্ত ঘটনায় উত্তপ্ত হল দিনহাটার ভেটাগুড়ি। অভিযোগ, এলাকায় বিজেপির সঙ্গে তৃণমূলের সংঘর্ষের জেরে জখম হয়েছেন শাসকদলের দু’জন কর্মী। দিনহাটা মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহতেরা। এই ঘটনার প্রতিবাদ মঙ্গলবার দিনহাটার থানার সামনে অবস্থান বিক্ষোভে বসেন তৃণমূল কর্মীরা। শাসকদলের দাবি, এলাকায় সন্ত্রাস সৃষ্টি করে হামলা চালাচ্ছে বিজেপি। যদিও পদ্মশিবিরের পাল্টা দাবি, এটি তৃণমূলের গোষ্ঠী সংঘর্ষের ফল। মঙ্গলবারের সংঘর্ষের ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ৭ জনকে আটক করেছে পুলিশ।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে খবর, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ ভেটাগুড়ি বাজারে উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হয়। তৃণমূলের অভিযোগ, বিশ্বজিৎ বর্মণ এবং অজিত বর্মণ নামে তাঁদের দলের দুই কর্মীর উপর লোহার রড নিয়ে হামলা চালায় গুন্ডাবাহিনী। তাতে মাথা ফেটে গিয়েছে ওই কর্মীদের। বাবলু বর্মণ নামে এক তৃণমূল কর্মীর দাবি, ‘‘কয়েক দিন থেকেই এলাকায় উত্তেজনা রয়েছে। ভেটাগুড়ির বাজার এলাকায় আজ (মঙ্গলবার) আচমকাই আমাদের কর্মীদের উপর হামলা চালানো হয়েছে।’’ আহতদের দিনহাটা মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যান তৃণমূল কর্মীরা।

এই ঘটনার নেপথ্যে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকের হাত রয়েছে বলেও দাবি শাসকদলের। তৃণমূলের ব্লক সভাপতি অনন্ত রায়ের দাবি, ‘‘ভেটিগুড়িতে নিশীথ প্রামাণিকের বাড়ি থেকে তাঁর গুন্ডাবাহিনী মাঝেমধ্যেই সন্ত্রাস ছড়িয়ে অশান্তির পরিবেশ তৈরি করে। কারণ, ২০২১ সালের উপনির্বাচনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী (নিশীথ) নিজের বুথেই পোলিং এজেন্ট দিতে পারেননি। নিজের বুথে মাত্র ৯৫টি ভোট পেয়েছেন তিনি। ভেটাগুড়ির মানুষদের উপর তাঁর ক্ষোভ রয়েছে। সে জন্যই তাঁর পোষা গুন্ডাদের দিয়ে এখানে আতঙ্কের সৃষ্টি করেন। ভেটাগুড়িতে তৃণমূলের পক্ষে মানুষের রায়কে মেনে নিতে পারেননি মন্ত্রী। আজও সেই গুন্ডারা রড দিয়ে মেরে দু’জন যুবকের মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে।’’

Advertisement

যদিও জেলা বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, পঞ্চায়েত নির্বাচনে টিকিট পাওয়ার লড়াইয়ে শাসকদলের অন্দরে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে সংর্ঘষ হয়েছে। বিজেপির কোচবিহার দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক নিখিলরঞ্জন দে-র পাল্টা দাবি, ‘‘ঘটনার সঙ্গে বিজেপির কোনও কর্মীর যোগ নেই। এটা তৃণমূলেরই গোষ্ঠী সংঘর্ষের ফল। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে টিকিট পাওয়া নিয়ে তৃণমূলের মধ্যে গোষ্ঠীসংঘর্ষ বেড়েই চলেছে। আজ ভেটাগুড়ির ঘটনাও তৃণমূলের গোষ্ঠী সংঘর্ষ ছাড়া আর কিছুই নয়। বিজেপি সংঘর্ষের রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না। বিজেপি জুজু দেখে দলকে বদনাম করার জন্য এ কাজ করেছে তারা।’’

মঙ্গলবার ভেটাগুড়িতে সংঘর্ষের কিছু ক্ষণ পর ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে দিনহাটার থানার পুলিশবাহিনী। কোচবিহার জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কুমার সানিরাজ বলেন, ‘‘মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ ভেটাগুড়ি বাজারে দু’টি গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ হয়। তাতে এক জনের মাথায় আঘাত লাগে এবং অন্য জন সামান্য আহত হয়েছেন। আহতদের প্রথমে দিনহাটা মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তাঁদের কোচবিহারের হাসপাতালে রেফার করা হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এই ঘটনায় ৭ জনকে আটক করেছে পুলিশ। এই মুহূর্তে এলাকা শান্তিপূর্ণ।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন