পথে না নেমে দলীয় অফিসে রইল তৃণমূল

শিলিগুলির হিলকার্ট রোডে দলীয় দফতরে বসে পরিস্থিতির উপর নজর রেখে গেলেন দলের জেলা সভাপতি রঞ্জন সরকার। দলের উত্তরের কোর কমিটির চেয়ারম্যান গৌতম দেব ছিলেন শহরে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৯ জানুয়ারি ২০২০ ০৪:৩৬
Share:

জলপাইগুড়িতে সরকারি বাসের সামনে রাস্তায় শুয়ে বিক্ষোভ এক বন্‌ধ সমর্থনকারীর। ছবি: সন্দীপ পাল

রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পর থেকে বন্‌ধ বিরোধী অবস্থান নিয়েছে দল। এই আট বছরে বাম হোক বা বিজেপি, যে কোনও বন্‌ধই রাস্তায় নেমে আটকেছে তৃণমূল। বুধবার কিন্তু দেখা গেল উলটপুরাণ। রাস্তায় মিছিল নিয়ে নামা, দোকানপাট-বাজার খোলানো, অফিসে অফিসে হাজিরা যাচাই করা দূরে থাক, উল্টে দিনভর

Advertisement

শিলিগুলির হিলকার্ট রোডে দলীয় দফতরে বসে পরিস্থিতির উপর নজর রেখে গেলেন দলের জেলা সভাপতি রঞ্জন সরকার। দলের উত্তরের কোর কমিটির চেয়ারম্যান গৌতম দেব ছিলেন শহরে। বাকি টাউন কমিটির নেতারাও যে যার মতো এলাকায় থাকলেও বন্‌ধ ভাঙতে কোনও সক্রিয়তা দেখাননি।

রাজনৈতিক নেতাদের একাংশ জানাচ্ছেন, বিরোধীদের ডাকা ২৪ ঘণ্টার ভারত বন্‌ধ, অথচ বুধবার সকাল থেকে সন্ধ্যা অবধি শিলিগুড়ি শহরে মিলল না শাসক দলের চিরাচরিত রাজনৈতিক ছবি। তৃণমূলের তরফে গত কয়েক দিনে বন্‌ধের বিরোধিতা করে প্রকাশ্যে বিবৃতি দেওয়া বা পথসভাও করা হয়নি। উল্টে, এনআরসি, সিএএ বা এনপিআর নিয়ে বিরোধীদের কাছে আবেদন জানানো হয়, যাতে আন্দোলনে তৃণমূল নেত্রীর হাত শক্ত করা হয়।

Advertisement

জেলা সভাপতি রঞ্জনবাবুর দাবি, ‘‘আমরা সবসময় বন্‌ধ রাজনীতির বিরুদ্ধে। কিন্তু রাস্তায় নেমে বাহুবল দেখানোর সব সময় প্রয়োজন নেই। কিছু দোকানপাট, গাড়ি, বাস বন্ধ থাকতেই পারে।’’ তিনি বলেন, ‘‘গরিব মানুষেরা তো কাজ করেছেন। বাজার, অটো রিকশা বা পরিবহণ ব্যবস্থা তো ঠিকই ছিল।’’

বিজেপি নেতারা মনে করছেন, বাম-কংগ্রেসের পাশে সরাসরি না গেলেও কেন্দ্রের বিরোধিতার প্রশ্নে তৃণমূল পরোক্ষে কাজ করছে। শাসক দল রাস্তায় নামলে কিছু দোকানপাট, বাজার, ব্যাঙ্ক বা ডাকঘর এমনিতেই খুলে যায়। তা ইচ্ছাকৃতভাবে করা হয়নি। দলের দার্জিলিং জেলা সভাপতি প্রবীণ আগরওয়াল বলেন, ‘‘সিপিএম-কংগ্রেস রাজনৈতিক লাভের জন্য একসঙ্গে চলছে। তৃণমূল মুখে বিরোধিতা করলেও সক্রিয়ভাবে পথে নামেনি। তাতে তারা বন্‌ধের সঙ্গে আপস করছে বলেই মনে হচ্ছে।’’

এ দিন সকালে ট্রেড ইউনিয়নগুলির মিছিলে হাঁটেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অশোক ভট্টাচার্য, সিটুর জেলা সম্পাদক সমন পাঠক, সিপিআইএমএল লিবারেশের অভিজিৎ মজুমদার-সহ প্রথম সারির বাম নেতারা এবং সব ট্রেড ইউনিয়নের নেতা-কর্মী। মাল্লাগুড়ি ক্ষুদিরাম মূর্তির সামনে থেকে মিছিল হিলকার্ট রোড হয়ে কাছারি রোডে কোর্ট মোড় থেকে ঘুরে আবার ঘুরে হিলকার্ট রোড পরিক্রমা করে। মিছিলের সময় রাস্তায় যে দু’একটি দোকানপাট খোলা ছিল, মিছিল থেকে সেগুলি বন্ধ করে ফেলতে বলা হয়।

পরে অশোকবাবু ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘রাজ্যে একমাত্র বিকল্প বাম ঐক্য। সর্বাত্মক বন্‌ধ তা প্রমাণ করল। তৃণমূল এবং পুলিশ কেউই তা রুখতে পারেনি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন