পুরাতন মালদহের তাঁতিপাড়ায় দলের জেলা সম্মেলনে তৃণমূল নেতা ও পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। রবিবার। ছবি: জয়ন্ত সেন
রাজনৈতিক প্রভাবে ঢিলে দিতে চায় না তৃণমূল। রবিবার বৃষ্টির মধ্যেই উত্তরের নানা জায়গায় তাই দেখা গেল দলের কেন্দ্রীয় স্তরের নেতাদের পাশাপাশি স্থানীয় নেতাদের নিয়ে মিছিল, সমাবেশ। সব জায়গাতেই তৃণমূল সরকারের সাফল্যের কথা তুলে ধরার কথা বলা হয়েছে। চেষ্টা হয়েছে, যত বেশি সম্ভব সমর্থকদেরও সেই মিছিলে নিয়ে আসার। বছরের শেষে বা গোড়ায় পঞ্চায়েত নির্বাচন হতে পারে বলে অনেকেই মনে করছেন। এই মিছিল সমাবেশ তারই প্রস্তুতি।
ফেস্টুন, মিছিল
কোচবিহার: কোচবিহার জেলা পরিষদ, পঞ্চায়েত সমিতি ও ১২৮টি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রায় সব ক’টি শাসক দলের দখলে। তবে গত লোকসভা উপনির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থীর জয় হলেও প্রচুর ভোট পায় বিজেপি প্রার্থী। তারপরেই প্রচারে জোর দিয়েছে শাসক দল। শহর থেকে গ্রামে-গঞ্জে ফেস্টুন দিয়ে ভরিয়ে দিয়েছে তৃণমূল। যেখানে সরকারের একাধিক সাফল্যর কথা তুলে ধরে তৃণমূলকে সমর্থন করার আবেদন করা হয়েছে। বিজেপির কোচবিহার জেলা সভাপতি নিখিলরঞ্জন দে অবশ্য বলেন, “প্রতিদিন বহু মানুষ বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন। এই অবস্থায় তৃণমূল বুঝতে পেরেছে যে তাদের অবস্থা কোন দিকে এগোচ্ছে। তাই পঞ্চায়েত ভোটের প্রচার শুরু করেছে।” তবে দিনহাটার বিধায়ক তথা তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক উদয়ন গুহ বলেন, “কর্মীদের উজ্জীবিত করা, ভোটের কথা মনে করিয়ে দেওয়ার জন্যেই আগাম প্রচার শুরু করা হয়েছে। তাতে বহু আসনেই আমরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হব।”
তুই বড় না মুই বড়
রায়গঞ্জ: পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে দলকে শক্তিশালী করতে বিস্তারক যোজনা কর্মসূচিতে উত্তর দিনাজপুর জেলার ৯৮টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার ১৬০০ বুথ এলাকার বাড়ি বাড়ি গত তিন বছরের কেন্দ্রীয় সরকারের উন্নয়নমূলক কাজকর্মের বিষয়ে প্রচার চালাচ্ছে বিজেপি। ওই কর্মসূচিতে দলের সদস্য সংগ্রহ অভিযানও জারি রেখেছে তারা। বিজেপিকে রুখতে এ বারে পাল্টা হিসেবে রাজ্য সরকারের গত ছ’বছরের উন্নয়নমূলক কাজকর্মের কথা জেলার সমস্ত পঞ্চায়েতের সমস্ত বুথ এলাকার বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচারের জন্য দলের নেতা কর্মীদের নির্দেশ দিলেন তৃণমূলের জেলা পর্যবেক্ষক শুভেন্দু অধিকারী। রবিবার দুপুরে উত্তর দিনাজপুরের করণদিঘির ঝাড়বাড়ি হাইস্কুল মাঠে দলের বুথভিত্তিক জেলা সম্মেলনে যোগ দেন শুভেন্দু। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে জেলায় দলে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব রুখতে এদিন কড়া বার্তা দিয়েছেন শুভেন্দু। তাঁর বক্তব্য, ‘তুই বড় না মুই বড়’ তা নিয়ে দলে আর অসুস্থ প্রতিযোগিতা করা যাবে না।
বার্তা মুকুলের
মালদহ: মালদহ জেলায় তৃণমূলকে স্বমহিমায় প্রতিষ্ঠিত করতে পঞ্চায়েত ভোটকে পাখির চোখ করে এগোনোর বার্তা দিলেন দলের সহকারী সভাপতি মুকুল রায়। সেক্ষেত্রে তৃণমূল সরকারের আমলের উন্নয়নকেই হাতিয়ার করতে বললেন তিনি। রবিবার পুরাতন মালদহের তাঁতিপাড়ায় তৃণমূলের মালদহ জেলা সম্মেলনে এমনই বার্তা দিলেন দুই নেতা। পাশাপাশি, মুকুলবাবুর দাবি, গণিখানের পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো কেউ বা কোনও সরকার উন্নয়ন করেনি। অথচ সেই জেলায় বিভিন্ন নির্বাচনে তৃণমূলের ফলাফল হতাশাজনক। আসলে মালদহের দলীয় নেতারা যখন মঞ্চে থাকেন তখন ঠিক থাকেন। মঞ্চ থেকে নামতেই তাঁরা নিজেদের মূর্তিতে অবতীর্ণ হন। তাঁর বক্তব্য, মালদহে দলীয় নেতা-কর্মীরা যদি ঐক্যবদ্ধ হয়ে ময়দানে নামেন, তবে কারও সাধ্য নেই এই জেলায় তৃণমূলকে রোখে।