বিধায়কের নামে তদন্ত দাবি দলে, অনশনের হুমকিও

ক্ষোভের এখানেই শেষ নয়। শাসকদলে এসে কৌশলে বিধায়ক দলকে ভাঙার চেষ্টা শুরু করেছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। দলটাকে তছনছ করে ফের তিনি সুযোগ বুঝে বিজেপি বা কংগ্রেসে যোগ দেবেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

চাঁচল শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০১৯ ০৫:২৬
Share:

ফাইল চিত্র।

পুরনো কমিটি ভেঙে নতুন কমিটি তৈরিকে ঘিরে দলের অন্দরে ক্ষোভ। আর সেই ক্ষোভের আঁচে সরগরম হয়ে উঠেছে মালদহের রতুয়ার রাজনীতি। সূত্রের খবর, দুর্নীতিগ্রস্ত নেতাদের নতুন কমিটিতে রাখা হয়নি বলে নেতৃত্বকে জানিয়েছিলেন বিধায়ক সমর মুখোপাধ্যায়। এবার বিধায়কের বিরুদ্ধেই দুর্নীতির অভিযোগে তদন্ত চেয়ে প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন দলের একাংশ। কংগ্রেসে থাকাকালীন বিধায়কের বিরুদ্ধে শাসকদলের তরফে একাধিক অভিযোগ জানানো হলেও তা ধামাচাপা দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ। শুক্রবার ফের সেই পুরনো অভিযোগের তদন্ত চেয়ে প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন দলের একাংশ। তদন্তের দাবিতে প্রয়োজনে তাঁরা অনশনে বসবেন বলেও জানিয়ে দিয়েছেন সদ্য প্রাক্তন ব্লক সভাপতি ফজলুল হক।

Advertisement

ক্ষোভের এখানেই শেষ নয়। শাসকদলে এসে কৌশলে বিধায়ক দলকে ভাঙার চেষ্টা শুরু করেছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। দলটাকে তছনছ করে ফের তিনি সুযোগ বুঝে বিজেপি বা কংগ্রেসে যোগ দেবেন। বিধায়কের বিরুদ্ধে প্রাক্তন সভাপতির এমনই বিস্ফোরক মন্তব্যের একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়াতেও ছড়িয়ে পড়েছে। দলের বিধায়কের বিরুদ্ধে এক নেতার এ হেন আক্রমণে অস্বস্তিতে নেতৃত্ব।

পুরনো কমিটি ভেঙে নতুন কমিটি তৈরি হতেই শুধু রতুয়াতেই নয়, পারদ চড়তে শুরু করেছে চাঁচল মহকুমা জুড়ে। সোশ্যাল মিডিয়ায়, দলের নিজেদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে টিপ্পনির সঙ্গে ক্ষোভও আছড়ে পড়ছে। সূত্রের খবর, চাঁচল ১ ব্লক কমিটিতে ঠাঁই পাওয়া এক নেতাকে কোনও মতেই রাখা যাবা না বলে নেতৃত্বকে কার্যত হুঁশিয়ারি দিয়েছেন স্থানীয় এক দাপুটে নেতা। চাঁচল ২, হরিশ্চন্দ্রপুর ১ ও ২ নম্বর ব্লক কমিটি নিয়েও ক্ষোভ বাড়ছে। তবে সব কিছুকে ছাপিয়ে গিয়েছে রতুয়া ১ ব্লকের ক্ষোভ।

Advertisement

সূত্রের খবর, রতুয়া ১ ব্লকের নতুন কমিটিতে ঠাঁই পাননি ফজলুল। স্থানীয় জেলা পরিষদের তিন সদস্যেরও ঠাঁই হয়নি। এর পরেই পারদ চড়তে শুরু করে। ব্লকের মহানন্দটোলায় প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনায় তৈরি পাকা রাস্তায় মাটি ভরাট করার ভুয়ো বিল দেখিয়ে বিধায়ক সমর মুখোপাধ্যায় ২৮ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে ২০১৫ সালে প্রশাসনে অভিযোগ জানায় শাসকদল। শুক্রবার প্রশাসনের কাছে ফের সেই অভিযোগ পাঠিয়ে তদন্ত দাবি করেন ফজলুলরা।

ফজলুল বলেন, ‘‘রতুয়ায় তৃণমূলকে ভাঙতেই উনি কংগ্রেস ছেড়ে এসেছেন। তাঁর ভূমিকা রাজ্য নেতৃত্বকে জানাব। উনি নিজে জেলার সব থেকে দুর্নীতিগ্রস্ত বিধায়ক। আর উল্টে আমাদেরই চোর বলছেন। তাঁর চুরির বিরুদ্ধেই আমরা দীর্ঘ দিন লড়াই করছিলাম। একাধিক অভিযোগ করা হলেও ক্ষমতার জোরে তিনি ধামাচাপা দিয়েছেন। পুরনো অভিযোগগুলি একে একে প্রশাসনকে জানাচ্ছি। প্রয়োজনে অনশনেও বসব।’’

এই প্রসঙ্গে বিধায়কের অবশ্য সাফ কথা, ‘‘যে যা বলছেন বলুন। আমার কোনও প্রতিক্রিয়া নেই। আমার মাথার উপরে দিদি আছে, ব্যস মিটে গেল।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন