পুরভোটে দলের টিকিট না পেয়েও মনোনয়ন জমা দিয়েছিলেন ‘বিক্ষুব্ধ’ তৃণমূল নেতা। বাড়তি দায়িত্ব দিয়ে তাঁর ক্ষোভ প্রশমনে উদ্যোগী হল দল। দায়িত্ব পেয়ে মনোনয়ন প্রত্যাহার করার কথাও জানিয়েছেন তুফানগঞ্জ শহর কমিটির ওই নেতা চাঁদমোহন সাহা। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, চাঁদমোহনবাবু এ বারের পুরভোটে ৯ নম্বর ওয়ার্ড ভোটে লড়তে মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন। ওই ওয়ার্ডে দলীয় প্রতীক অবশ্য পেয়েছেন দলের শহর কমিটির সভাপতি হিরন্ময় চট্টোপাধ্যায়। তা নিয়ে দলের কোন্দল প্রকাশ্যে আসে। চাঁদমোহনবাবুর অনুগামীরা তৃণমূলের তুফানগঞ্জ দফতরে বিক্ষোভও দেখান। অস্বস্তিতে পড়েন জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব।
তৃণমূলের একাংশের দাবি, সিপিএমের দখলে থাকা ওই পুরসভা নির্বাচনের মুখে এমন ঘটনায় পরিস্থিতি সামলাতে নির্বাচন কমিটির আহ্বায়ক হিসাবে চাঁদমোহনবাবুর নাম চূড়ান্ত করা হয়। আজ, শনিবার তিনি মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেবেন বলেও দলের নেতাদের জানিয়ে দিয়েছেন। তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “শহর কমিটির পদাধিকারীরা পুরভোটে প্রার্থী হয়েছেন। তাই সকলের সঙ্গে আলোচনা করে চাঁদমোহনবাবুকে আহ্বায়ক করে ওই পুরসভার দলীয় নির্বাচন কমিটি করা হয়েছে। ভুল বোঝাবুঝি মিটে গিয়েছে। উনি মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেবেন।” চাঁদমোহনবাবু বলেন, “একটি ওয়ার্ডে প্রার্থী হয়ে আটকে থাকার বদলে পুরসভার ১২টি ওয়ার্ডের নির্বাচন কমিটির আহ্বায়ক হিসাবে কাজ করার সুযোগ বেশি গুরুত্বপূর্ণ। দলের মর্যাদা রাখতে চেষ্টা করব। শনিবারই আমি মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহার করে নিচ্ছি।” তৃণমূল সূত্রেই জানা গিয়েছে, ৯ নম্বর ওয়ার্ড কমিটির পদাধিকারীরা তো বটেই দলের বিভিন্ন শাখা সংগঠনের তরফেও চাঁদমোহনবাবুকে তৃণমূল প্রার্থী করার দাবি আগে থেকেই তোলা হয়েছিল। তিনি টিকিট পাবেন বলে তাঁর অনুগামীরা ধরে নিয়ে এলাকায় জনসংযোগের কাজও শুরু করে দেন। শেষপর্যন্ত দলের শহর কমিটির সভাপতি হিরন্ময়বাবুকে টিকিট দেওয়ায় সমস্যা হয়। তৃণমূল সমর্থকরা প্রকাশ্যেই সিদ্ধান্ত বদলের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন।
এমনকী চাঁদমোহনবাবু তৃণমূলের প্রার্থী হচ্ছেন দাবি করে এলাকার কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে রীতিমতো ঘটা করে মনোনয়ন জমা দেন। ওই ঘটনা নিয়ে চাপানউতোরের মধ্যে তুফানগঞ্জ পুরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল নেতা নিবারণ বর্মন টিকিট না পেয়ে বিজেপিতে যোগ দেন। এমনকী বিজেপি দলের পূর্ব ঘোষিত প্রার্থী বদল করে ওই ওয়ার্ডে নিবারণবাবুকে টিকিট দেয় তিনি বিজেপি প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন জমা দেন। যার জেরে চাঁদমোহনবাবুকে আটকাতে তৃণমূল শিবিরের উদ্যোগ বেড়ে যায়। তার পরেই নির্বাচন কমিটি গড়ে তাঁকে আহ্বায়ক করা হয় বলে দল সূত্রে খবর। তবে দলের বিক্ষুব্ধ নেতাকে ওই দায়িত্ব দেওয়ায় দলের অন্দরেই প্রশ্ন উঠেছে। দলের কয়েক জন কর্মীর অবশ্য বক্তব্য, “বিক্ষুব্ধদের তোষণ করা কতটা যুক্তিসঙ্গত হচ্ছে সে ব্যাপারে দলের নেতাদের ভাবা দরকার।”