elephant

হাতির হানা রুখতে মৌমাছি পালনের কৌশল গ্রামবাসীদের

রাজ্য কৃষি দফতরের আধিকারিকদের একাংশ জানাচ্ছেন, দক্ষিণ আফ্রিকায় মৌমাছি চাষ করে হাতির হানা অনেকটা ঠেকানো গিয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বক্সা শেষ আপডেট: ১০ নভেম্বর ২০২০ ২২:০৪
Share:

গ্রামবাসীদের মৌমাছি পালনের প্রশিক্ষণ। নিজস্ব চিত্র।

মানুষের মতোই মৌমাছির হুলকে ভয় পায় হাতিও। এমনকি, তাদের গুঞ্জনও নাকি গজরাজের বিলকুল নাপসন্দ! তাই কিছু দিন আগেই চাপড়ামারির জঙ্গল চিরে যাওয়া রেললাইনের ধারে মাইক লাগিয়ে মৌমাছির গুঞ্জন শোনানোর ব্যবস্থা করেছিল রেল।

Advertisement

এ বার বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মেনে হাতির হামলা থেকে ফসল বাঁচাতে মৌমাছি চাষের পথে হাঁটতে চলেছে গ্রাম। তাতে মধু উৎপাদনের ফলে বিকল্প কর্মসংস্থানও হবে।

হাতিদের শ্রবণ এবং ঘ্রাণশক্তি খুব তীক্ষ্ণ। তাই মৌচাকের গন্ধ বা মৌমাছির আওয়াজ পেলেই তারা দূরে সরে যায়। রাজ্য কৃষি দফতরের আধিকারিকদের একাংশ জানাচ্ছেন, দক্ষিণ আফ্রিকায় মৌমাছি চাষ করে হাতির হানা অনেকটা ঠেকানো গিয়েছে। এ বার সেই ধাঁচে হাতির হানা রুখতে মৌ-চাষ শুরু হচ্ছে বক্সা ব্যাঘ্রপ্রকল্প লাগোয়ো নূরপুর গ্রামে।

Advertisement

উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ব বিদ্যালয়ের পরামর্শ নিয়ে স্থানীয় একটি সংস্থার উদ্যোগে মৌ-চাষের পাশাপাশি সরষে চাষ শুরু হবে।ওই সরষে ফুলের থেকে মধু সংগ্রহ করবে মৌমাছি। গ্রাম ঘিরে মধু এবং সরষে চাষ শুরু হলেই হাতি হানা রোখা সম্ভব হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন: লোকালয়ে ঢুকে দিনভর ছোটাছুটি, বাইসনের মৃত্যু বানারহাটে

আলিপুরদুয়ার-২ ব্লকের ভূটান পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত জঙ্গল ঘেরা নূরপুর গ্রামের বাসিন্দাদের মৌ-চাষে উৎসাহ দিচ্ছে সাঁওতালপুর নাগরিক অধিকার সুরক্ষা ওয়েলফেয়ার সোসাইটি নামে স্থানীয় একটি সংগঠন। সম্প্রতি উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ব বিদ্যালয়ের প্রতিনিধিরা ওই গ্রাম পরিদর্শন করেন। রাজ্য কৃষি দফতরের সাহায্যে মধু চাষের প্রশিক্ষণও শুরু হয়েছে নূরপুরে।

আরও পড়ুন: বিহারের বিধানসভা ভোটে অপ্রত্যাশিত ‘স্ট্রাইকিং রেট’ তিন বাম দলের

গ্রামবাসীদের একাংশের অভিযোগ, বছরভরই এলাকায় হাতির হানা চলে। ঘরবাড়ি ভাঙার পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় ক্ষেতের ফসল। দিনের আলোতেই জঙ্গল লাগোয়া জমিগুলিতে নেমে পড়ে হাতির পাল। এর জন্য জঙ্গল লাগোয়া সব গ্রামে প্রচুর জমি পতিত পড়ে রয়েছে। হাতির হানার জন্য চাষআবাদ বন্ধ রেখেছেন চাষিরা। ইতিমধ্যে ওই গ্রামে গোলমরিচ এবং হলুদ চাষ শুরু হয়েছে। কারণ, ওই দু’টি ফসল বা গাছ হাতি খায় না। পাশাপাশি জৈব পদ্ধতিতে সরষে চাষের প্রস্তুতিও চলছে নূরপুরে। এতে হাতির হানা যেমন রোখা যাবে তেমনি মধু এবং সরষে চাষ করে আর্থিক ভাবে স্বাবলম্বী হবেন গ্রামবাসীরা। ঘুরবে গ্রামের অর্থনীতি।

গ্রামবাসী সুজানা বরাইক বাসিন্দা বলেন, ‘‘আমরা ফসল চাষ করি। কিন্তু হাতি গ্রামে ঢুকলেই সব শেষ।’’ কৃষি তথ্য ও উপদেষ্টা দপ্তরের আধিকারিক সঞ্জীব বর্মন বলেন, ‘‘আফ্রিকাতে আমরা দেখেছি মৌমাছির চাষ করে উপকার মিলেছে। চাপড়ামারির জঙ্গলেও মৌমাছি দিয়ে হাতি তাড়ানোর পরীক্ষা অনেকটাই সফল।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন