Elephant attack

হাতির হানা রুখতে অস্ত্র এ বার মৌমাছি

সাঁওতালপুর নাগরিক অধিকার সুরক্ষা ওয়েলফেয়ার সোসাইটির কর্মকর্তা সদানন্দ চক্রবর্তী জানান, এসব জায়গায় কৃষকদের সারা বছরের প্রধান দুশ্চিন্তাই হল হাতির হানা।

Advertisement

রাজু সাহা

শামুকতলা শেষ আপডেট: ০৩ নভেম্বর ২০২০ ০৫:০৮
Share:

সমাধান: গ্রাম পরিদর্শনে প্রতিনিধি দল। নিজস্ব চিত্র

মৌমাছির হুল তো বটেই, তাদের গুঞ্জনও নাকি একদম পছন্দ করে না হাতি। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মেনে হাতির হানা রুখতে তাদের এই অপছন্দের বিষয়টিকে কাজে লাগিয়েই এ বার মধু চাষ শুরু করতে চলেছেন বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্প লাগোয়া নূরপুর গ্রামের বাসিন্দারা। তাঁদের এই অভিনব ভাবনায় উৎসাহিত করেছে উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এবং জেলা কৃষি দফতর।

Advertisement

কৃষি বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, হাতিদের শ্রবণ এবং ঘ্রাণশক্তি খুব তীব্র। তাই মৌচাকের গন্ধ বা মৌমাছির গুনগুন আওয়াজ পেলেই হাতি দূরে সরে যায়। দক্ষিণ আফ্রিকায় মধু চাষ করে হাতির হানা অনেকটা ঠেকানো গিয়েছে বলে তাঁরা জানান। সেই ভাবে এখানেও মধু চাষের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন গ্রামবাসীরা। স্থানীয় একটি সংস্থার উদ্যোগে মধুর পাশাপাশি সরষে চাষ শুরু হবে। সরষে ফুলের থেকে মধু সংগ্রহ করবে মৌমাছি। বিশেষজ্ঞদের এই পরামর্শ মেনে আলিপুরদুয়ার-২ ব্লকের ভুটান পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত বনাঞ্চল ঘেরা এই গ্রামের বাসিন্দাদের মধু চাষে উৎসাহ দিচ্ছে সাঁওতালপুর নাগরিক অধিকার সুরক্ষা ওয়েলফেয়ার সোসাইটি নামে একটি সংস্থা। দিন তিনেক আগে উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিরা ওই গ্রাম পরিদর্শন করেন। আগামী ৫ নভেম্বর থেকে কৃষি দফতরের সাহায্যে মধু চাষের প্রশিক্ষণ শুরু হচ্ছে নূরপুরে।

সাঁওতালপুর নাগরিক অধিকার সুরক্ষা ওয়েলফেয়ার সোসাইটির কর্মকর্তা সদানন্দ চক্রবর্তী জানান, এসব জায়গায় কৃষকদের সারা বছরের প্রধান দুশ্চিন্তাই হল হাতির হানা। ঘরবাড়ি ভাঙার পাশাপাশি ব্যাপক ক্ষতি হয় ক্ষেতের ফসলের। জঙ্গল লাগোয়া জমি থেকে অনেক সময় ধান বাড়িতে তোলা যায় না হাতির তাণ্ডবে। দিনের বেলাতেও জঙ্গল লাগোয়া জমিগুলিতে নেমে পড়ে হাতির পাল। এর জন্য জঙ্গল লাগোয়া সব গ্রামে প্রচুর জমি এমনিই পড়ে রয়েছে। চাষআবাদ বন্ধ রেখেছেন বেশির ভাগ চাষি। সদানন্দ বললে, ‘‘ইতিমধ্যে গ্রামে গোলমরিচ এবং হলুদ চাষ শুরু করিয়েছি। ওই দুটি ফসল বা গাছ হাতি খায় না। এ বার উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ব বিদ্যালয়ের পরামর্শ এবং সাহায্য নিয়ে মধু চাষ করার উৎসাহ দিচ্ছি। মধু চাষ করলে হাতি তার ত্রিসীমানায় যায় না। পাশাপাশি জৈব পদ্ধতিতে সরষে চাষও করা হবে।’’

Advertisement

অধ্যাপক শ্যামল কুমার সাহু জানান, সর্বভারতীয় জৈব চাষ প্রকল্পে নূরপুর গ্রামে মধু এবং সরষে চাষ শুরু করা হচ্ছে। এতে হাতির হানা যেমন রোখা যাবে, তেমনি মধু এবং সরষে চাষ করে আর্থিক ভাবে স্বাবলম্বী হবেন গ্রামবাসীরা। ঘুরবে গ্রামের অর্থনীতিও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন