সাক্ষাৎ: সুজয়কে দেখতে গেলেন গৌতম দেব ও অশোক ভট্টাচার্য। রবিবার। নিজস্ব চিত্র
ডেঙ্গি-জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ঘরবন্দি শিলিগুড়ি পুরসভার কংগ্রেস পরিষদীয় দলনেতা সুজয় ঘটককে দেখতে গেলেন পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব। সুজয়বাবু জানতে পারেন, রবিবার গৌতমবাবুর জন্মদিন। তড়িঘড়ি আনা হল কেক। সুজয়বাবুর অনুরোধে কেক কাটলেন জেলা তৃণমূল সভাপতি গৌতমবাবু। তার পরে একে অন্যকে কেক খাওয়ানো, ছবি তোলা। সকালের এই ঘটনার পরে বিকেলে সুজয়বাবুর বাড়ি গেলেন শিলিগুড়ি পুরসভার মেয়র অশোক ভট্টাচার্য।
রবিবারের শিলিগুড়িতে দিনভর চর্চার বিষয় হয়ে ওঠে সুজয়ের বাড়িতে দুই যুযুধান নেতার আগমন।
শিলিগুড়িতে পুরবোর্ড গঠনের পরে বামেদের সমর্থন নিয়ে বোরো চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন সুজয়বাবু। বাম বোর্ড আবার চলছে কংগ্রেসের সমর্থনে। কংগ্রেসের ওয়ার্ডগুলির প্রতি বঞ্চনা হচ্ছে, এই অভিযোগে মাস কয়েক আগে বোরো চেয়ারম্যান পদ থেকে ইস্তফা দেন সুজয়বাবু। বাম বোর্ডের স্থায়িত্ব নিয়ে তখন জোর চর্চা হয় শহরে। ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সুজয়বাবু গত দু’দিন ধরেই ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে ঘরবন্দি। শহরের যে ওয়ার্ডগুলোতে ডেঙ্গির প্রকোপ বেশি, ১৬ নম্বর তার অন্যমত। দিন তিনেক আগেই তাঁকে নিয়ে এলাকা ঘুরেও দেখেন মেয়র।
এর পরে রবিবার সকালে চমক। সুজয়বাবুর বাড়ির সামনে মন্ত্রীর গাড়ি থামতে দেখেন বাসিন্দারা। মন্ত্রীর কপালে লাল সিঁদুরের টিপ। সুজয় প্রশ্ন করে জানতে পারেন, জন্মদিন উপলক্ষে মন্দিরে পুজো দিয়ে ফিরছেন গৌতম। সঙ্গে সঙ্গে কেক আনা হয়। এই সাক্ষাৎ ও সখ্যের খবর বাম শিবিরে পৌঁছতে মোটেই দেরি হয়নি।
তার পরই বিকেলে সুজয়ের বাড়িতে গেলেন অশোক, সঙ্গে জল সরবরাহ বিভাগে মেয়র পারিষদ জয় চক্রবর্তী, যুব সংগঠনের এক নেতা। পরে মেয়র বলেন, ‘‘অনেক বাড়িতে একসঙ্গে একাধিক জনের ডেঙ্গি হচ্ছে। তার অর্থ বাড়ির মধ্যেই কোথাও জমা জলে ডেঙ্গির বাহক মশা জন্মাচ্ছে। বাসিন্দারা সচেতন না হলে পরিস্থিতি বিপজ্জনক হয়ে পড়বে।’’ সুজয়বাবুর ঘরে বসে তাঁর শারীরিক অবস্থার বিস্তারিত খোঁজ নেন তিনি। চা-বিস্কুটে তাঁদের আপ্যায়ন করেন সুজয়। বেরনোর সময়ে তিনি মেয়রকে এগিয়ে দিতে গেলে অশোক বাধা দেন। বলেন, ‘‘অসুস্থতার মধ্যে এমন ব্যস্ত হওয়ার প্রয়োজন নেই।’’
দিনের শেষে সুজয়বাবু জানান, দুই নেতার আসার সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই। তাতে অবশ্য শহরে, জ্বর-জন্মদিন-চা-কেক নিয়ে রাজনৈতিক জল্পনা থামেনি।