গাড়ি আটকে এ ভাবেই চলে চাঁদার জুলুম। — নিজস্ব চিত্র।
গজলডোবা মেগা ট্যুরিজম হাবের সামনের রাস্তায় গাড়ি দাঁড় করিয়ে জবরদস্তি চাঁদা আদায় হচ্ছে বলে অভিযোগ।
সকাল থেকে সন্ধ্যা অবধি একদল যুবক হুমকি দিয়ে ওই টাকা তুলে চলছে বলে অভিযোগ। ঘটনাস্থলের পাশেই শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের একটি ফাঁড়ি থাকলেও পুলিশ কেন নিশ্চুপ- সেই প্রশ্ন তুলেছেন ওই রাস্তা দিয়ে যাতায়াতকারী গাড়ির চালকেরা।
গত সোমবার, ১৫ অগস্টের দিন দুপুর নাগাদ এই ভাবে গাড়ি দাঁড় করিয়ে রাখায় যানজট পর্যন্ত হয়। কিন্তু বিকাল অবধি সেখানে পুলিশের দেখা মেলেনি বলে অভিযোগ।
অভিযোগ, তিস্তা ব্যারেজ এলাকায় ঘুরতে গিয়ে চাঁদা আদায়কারীদের হাতে অনেককেই হেনস্থা হতে হচ্ছে। ছোট গাড়ি থেকে পিকপ্যাক ভ্যান, বাইক থেকে অটো, টোটো কাউকেই ছাড়া হচ্ছে না। গাড়ির চালকেরা জানিয়েছেন, মনসা পুজোর মেলা করার দাবি করে গাড়ির চেহারা, আরোহীদের সংখ্যা দেখে চালককে ২১ টাকা থেকে ৩১ টাকা, ৫১ টাকা পর্যন্ত বিভিন্ন অঙ্কের টাকার রসিদ ধরিয়ে দিচ্ছে। মোবাইলে ছবি তুলতে গেলেও ক্যামেরা বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। ২০/২৫ জন যুবক সকাল থেকে টাকা আদায়ে নেমে পড়ছেন বলে অভিযোগ।
এলাকার এক কিলোমিটারের মধ্যে মিলনপল্লি থেকে রংধামালি হয়ে জলপাইগুড়ি যাওয়ার রাস্তাতেও একই ভাবে পুজোর নামে জোর করে চাঁদা আদায় চলছে বলে অভিযোগ। মঙ্গলবার সকালে বিষয়টি জানার পরে পুলিশ কমিশনার চেলিং সিমিক লেপচা বলেছেন, ‘‘এ সব বরদাস্ত করা যাবে না। ব্যবস্থা নিতে বলছি।’’
তারপরে এ দিন দুপুরের পর এলাকায় পুলিশ ভ্যানের টহলদারি শুরু হয়। পুলিশ ভ্যান চলে যেতেই তাঁদের আশেপাশের হোটেল, পান-চায়ের দোকান থেকে বার হয়ে মাঝে মাঝে চাঁদা আদায় করতে দেখা গিয়েছে বলে অভিযোগ। চালকদের অভিযোগ, নানা আয়োজনের জন্য মাঝে মধ্যে চাঁদা আদায় চলে। ব্যারেজ, ট্যুরিজম হাবকে ঘিরে সিসিটিভি নজরদারির ব্যবস্থার জন্য সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী শিলিগুড়িতে পুলিশ-প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়ে গিয়েছিলেন। তারপরেও তা পুরোপুরী কার্যকরি হয়নি বলে অভিযোগ।
চালকেরা জানিয়েছেন, ওই যুবকদের কারও মাথায় কাপড়ের ফেট্টি বাঁধা। কেউ বা রোদ চশমা পরে জামা খুলে কোমরে বেঁধে রাখছেন। হাতে সকলের চাঁদার রসিদ। দুই পাশ থেকে আসা ছোট গাড়ি, পিআপ ভ্যান, বাইক হাতের ইশারায় দাঁড় করিয়ে দেওয়া হচ্ছে। জবরদস্তি করে নয়, অনুরোধ করে মেলার জন্য চাঁদা নেওয়া হচ্ছে বলে পাল্টা ওই যুবকেরা দাবিও করেছেন।