গজগমন: পূর্ব দমনপুর রেঞ্জ সংলগ্ন জঙ্গলের বক্সা ফরেস্ট রোডে, সোমবার সকালে হাতির রাস্তা পার হওয়ার জন্য রাস্তায় যানবাহন থামিয়ে দেওয়া হল। ছবি: নারায়ণ দে
তিনি রাজা, গমনের আয়োজনও রাজকীয়। রাস্তার দু’ধারে বনকর্মী ও পুলিশ যান চলাচল বন্ধ করল, সেই রাজার যাত্রা পথ সুগম করতে। রাস্তা ফাঁকা হওয়ার কয়েক মিনিট পরে, সব দিকে দেখেচেয়ে তারপর তিনি জঙ্গল থেকে বের হলেন। আর ত্র্স্ত মানবকুলকে দর্শন দিয়ে, রাজকীয় চালে রাস্তা পার করে অন্যপ্রান্তের জঙ্গলে ঢুকে গেল রাজা, মস্ত এক দাঁতাল হাতি।
সোমবার সকাল সাড়ে ন’টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটে দমনপুর রেঞ্জ সংলগ্ন বক্সা ফরেস্ট রোডে। রবিবার গভীর রাত থেকে হাতিটি পূর্ব দমনপুর রেঞ্জ সংলগ্ন জঙ্গলে দাঁড়িয়েছিল। এ দিন বনকর্মীরা পুলিশের সাহায্য নিয়ে রাস্তার যান চলাচল বন্ধ করে হাতিটিকে রাস্তা পার হওয়ার সুযোগ করে দেন।
বনকর্মীরা জানান, রবিবার রাতে পশ্চিম দমনপুর রেঞ্জ ও পূর্ব দমনপুর রেঞ্জ এলাকায় হাতি বের হয়। পশ্চিম দমনপুর রেঞ্জে চার-পাঁচটি হাতির একটি পাল বের হয়েছিল। আর পূর্ব দমনপুর এলাকায় বেড়িয়েছিল একটি মস্ত দাঁতাল হাতি। বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের ডিএফডি কল্যান রাই জানান, হাতিগুলিকে সুরক্ষিত ভাবে জঙ্গলে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে।
পূর্ব দমনপুর রেঞ্জের রেঞ্জ অফিসার প্রসেনজিৎ পাল জানান, দাঁতাল হাতিটি রাত ভররেঞ্জ অফিস সংলগ্ন জঙ্গলে দাঁড়িয়েছিল। রাত দেড়টা নাগাদ হাতির উপস্থিতি তাঁরা বুঝতে পারেন। সকালে রাস্তায় গাড়ি চলাচল শুরু হওয়ায় হাতিটি গভীর জঙ্গলে ঢুকতে পারছিল না। পরে পুলিশ কর্মীদের সাহায্য নিয়ে রাস্তার যানচলাচল কিছুক্ষণের জন্য বন্ধ করেন বনকর্মীরা। সকাল সাড়ে ন’টা নাগাদ হাতিটি রাজকীয় চালে রাস্তা পার হয়ে জঙ্গলে ঢুকে পড়ে।
বনকর্মীরা জানান, গত কয়েক দিনে ধরে রেল লাইনের ধারে হাতির আনাগোনা বেড়েছে। এই দাঁতাল হাতিটিও রেল লাইনের পাশেই ছিল। এ দিন হাতিটিকে রেল লাইন ও লোকালয় থেকে দূরে রাখতে রাস্তা পার করার ব্যবস্থা করা হয়। রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ করার পনেরো থেকে বিশ মিনিটের মধ্যেই হাতিটি রাস্তা পার করে। কালচিনির বাসিন্দা পুনম ছেত্রী জানান, রাজাভাতখাওয়া থেকে আলিপুরদুয়ার যাওয়ার পথ দমনপুরে দেখি রাস্তা পার হচ্ছে বিশাল দাঁতাল হাতি। সেখানে বনকর্মী ও পুলিশ দাঁড়িয়ে ছিল। হাতিটি যাওয়ার পর রাস্তায় আবার যান চলাচল শুরু হয়।
বনকর্মীরা জানান শীতের শুরুতে ফাঁকা রেল লাইনের উপর কুয়াশা পড়ছে ভোর বেলায় আর সন্ধে বেলায়। সেই সময় ট্রেন গেলে বেশি দূর থেকে দেখা যায় না। তাই হাতি এই সময় রেল লাইন পার করলে দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা বেশি থাকে। এই কারণে, বছরের এই সময়টায় হাতিদের রেল লাইন থেকে দূরে রাখতে সবরকম চেষ্টা করা হচ্ছে।