তির ধনুক নিয়ে অবরোধ কানকি স্টেশনে। নিজস্ব চিত্র
আদিবাসীদের ভাষা, ধর্মের স্বীকৃতি চেয়ে ঝাড়খণ্ড দিশম পার্টি এবং আদিবাসী সেঙ্গেল অভিযান (এএসএ)-এর ডাকা আংশিক ভারত বন্ধে বিপর্যস্ত হল উত্তরবঙ্গের ট্রেন চলাচল। সোমবার ভোর ৬টা থেকে ১২ ঘণ্টা রেল অবরোধের ডাক দেয় তারা। বিহার, ঝাড়খণ্ড, ওডিশা, অসম ও পশ্চিমবঙ্গ সহ বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে তাদের ‘রেল রোকো’ আন্দোলন ছিল। বেশ কিছু জায়গায় সড়ক অবরোধও চলে।
ভোরে এ দিন মালদহের আদিনা থেকে আলিপুরদুয়ার, উত্তর দিনাজপুরের কানকিতে অবরোধ করে আদিবাসীদের বিভিন্ন সংগঠন। সদস্যদের হাতে ছিল তির-ধনুক। তাঁদের দাবি, সারনা ধর্মকে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দিতে হবে। রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, মালদহ ছাড়াও দক্ষিণ দিনাজপুরের বুনিয়াদপুরে ভোরে তেভাগা এক্সপ্রেস কিছু ক্ষণ আটকে ছিল। পুলিশ আন্দোলনকারীদের হঠিয়ে দিলে আবার ট্রেন চলাচল শুরু হয়। বাতিল হয় বালুরঘাট ইন্টারসিটি এক্সপ্রেস।
আদিবাসী সেঙ্গেল অভিযানের রাজ্য সভাপতি সুখলাল সোরেন বলেন, ‘‘আমাদের সারনা ধর্মকে সংবিধানের ২৫ নম্ব ধারায় অন্তর্ভুক্ত করতে যতবার আন্দোলন করছি তত বার সরকার আমাদের প্রতি অবহেলা করছে। সেই সঙ্গে অন্য দাবিও রয়েছে।’’ তাঁদের দাবি, আন্দোলন করতে করতে দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছে। তাই শেষ পর্যন্ত রেল অবরোধের ডাক দিয়েছেন। দাবিগুলো স্বীকৃতি না পেলে আগামীতে রেল অবরোধের বৃহত্তর কর্মসূচি নিতে পিছপা হবেন না বলে হুমকি দিয়েছেন। সাঁওতালি ভাষায় পড়াশোনার ব্যবস্থা-সহ দশ দফা দাবি রয়েছে তাঁদের। আন্দোলনের জেরে হাটওয়ার স্টেশনে ১৫৯০৯ ডাউন অবধ আসাম এবং সূর্যকমল স্টেশনে ১২৩৭৭ আপ পদাতিক এক্সপ্রেস আটকে রয়েছে। আটকে বহু দূরপাল্লার ট্রেন।
সূর্যকমল স্টেশনে পদাতিক আটকে যাত্রীরা নিজেরাই গাড়ি ভাড়া করে শিলিগুড়ি পৌঁছন। রেলের তরফে সহযোগিতা করা হয়নি বলে অভিযোগ। এ দিন গাজোলের পান্ডুয়া, আলাল, পুরাতন মালদহের আট মাইলে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে রাখা হয়। হবিবপুর, মালদহ-নালাগোলা, গাজোল-পাকুয়া রাজ্য সড়ক সকাল ন’টা পর্যন্ত বন্ধ করে রাখা হয়। তবে এ দিন গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তরের তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষা থাকায় সকাল ন’টার পরে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংগঠনের রাজ্য নেতা মোহন হাঁসদা।