অর্জুনকে অর্জুন গাছের চারা দিচ্ছেন প্রদীপ বাউরি। —নিজস্ব চিত্র।
বুধবার ছিল সপ্তম শ্রেণির ছাত্র অর্জুন দেবনাথের জন্মদিন। স্কুলে এসেই একটি অর্জুন গাছের চারা উপহার হিসাবে পেল সে। তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র রাকেশ সরকারেরও জন্মদিন। তাকে দেওয়া হল একটি জারুল গাছের চারা।
বন মহোৎসবের শেষ দিনে বনদফতরের তরফে স্কুলে এসেই সভা করে যাদের জন্মদিন তাদের খোঁজ নেওয়া হল। তারপর জন্মদিনকে স্মরণীয় করে তুলতে প্রত্যেককে দেওয়া হল একটি করে গাছের চারা। সেই গাছ পুঁতে তার পরিচর্যা করার দায়িত্ব দেওয়া হল। এরপর তাদের সঙ্গেই বেড়ে উঠবে সেই গাছ।
বুধবার বনমহোৎসব সপ্তাহের শেষদিনে বৈকন্ঠপুর বনবিভাগের গজলডোবা উচ্চ বিদ্যালয় এবং গজলডোবা ১০ নম্বর প্রাথমিক বিদ্যালয়কে সঙ্গে নিয়ে যৌথ অনুষ্ঠান করল বনদফতর। বৈকন্ঠপুরের বনদফতরের আধিকারিক এসিএফ প্রদীপ বাউরি, তারঘেরা রেঞ্জের রেঞ্জার দুলাল ঘোষ এবং ওদলাবাড়ির পরিবেশপ্রেমী সংগঠন নেচার অ্যান্ড অ্যাডভেঞ্চার সোসাইটির সদস্যরা এ দিন গজলডোবার স্কুলগুলোতে এসে প্রথমে যাদের জন্মদিন সেই পড়ুয়াদের খোঁজ করে। তাদের হাতে গাছের চারা তুলে দেওয়া হয়। ক’দিন আগে বা পরে যাদের জন্মদিন তাদেরকেও গাছের চারা দেওয়া হয়েছে।
জন্মদিনের সূত্র ধরে গাছ বিলি করলে গাছের সঙ্গে পড়ুয়াদের একাত্ম বোধ তৈরি হবে বলে জানালেন বন দফতরের এসিএফ প্রদীপ বাউরি। যাদের জন্মদিন দূরে রয়েছে তারা তাদের জন্মদিনে বিট কার্যালয়ে এসে জন্মদিনের কথা বলে একটি গাছের চারাও নিয়ে যেতে পারবে বলেও এদিন বনদফতরের কর্মীরা জানান। প্রদীপ বাবু বলেন, ‘‘জন্মদিনে হাতে একটি গাচের চারা তুলে দিলে পড়ুয়াদের মনস্তত্বে দারুন প্রভাব পড়বে। ওরা নিজেদের শরীরের যেমন যত্ন নেয় জন্মদিনে পোঁতা সেই গাছটিকেও একই ভাবে যত্ন নেবে।’’ গজলডোবা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা রোশনি শর্মা, গজলডোবা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গোপাল সাহারা এরকম অভিনব উদ্যোগে অভিভূত। ওঁরা বললেন, ‘‘পড়ুয়াদের জন্মদিনে এ ধরনের উপহার দারুন কার্যকরী হতে পারে।’’
যারা উপহার পেল তারাও খুব খুশি। ওরা কেউ স্কুলেই চারা পুতল। কেউ আবার বাড়ি নিয়ে যত্ন করে পুঁতবে বলে জানাল। রাকেশ যেমন স্কুলেই চারা পুঁতেছে। রাকেশ জানায়, প্রতিদিন স্কুলে পৌঁছে গাছটিকে আগে দেখবে সে।