খুচরো নিয়ে কী করি, জেরবার সকলে

নিশিগঞ্জ, ঘোকসাডাঙা, মাথাভাঙা ও মেখলিগঞ্জের একাধিক সরকারি, বেসরকারি ব্যাঙ্কে এমন অভিযোগ রয়েছে। তুফানগঞ্জের একটি ব্যাঙ্কের এক কর্তার বক্তব্য, খুচরো মজুত রাখার মত ভল্ট নেই। কর্মী সংখ্যাও কম।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কোচবিহার শেষ আপডেট: ২২ জুলাই ২০১৭ ১৩:১৫
Share:

পাহাড়: বাজারে বেড়েছে খুচরো। সমস্যায় বাসিন্দারা। নিজস্ব চিত্র

এক সময় বাজারে পর্যাপ্ত খুচরো না থাকায় ভোগান্তির মুখে পড়তেন বাসিন্দারা। এখন অতিরিক্ত খুচরোর সমস্যায় নাকাল কোচবিহার। জেলার প্রত্যন্ত এলাকার ব্যবসায়ী থেকে এনবিএসটিসির বাস কন্ডাক্টর— ভুক্তভোগীদের তালিকায় সকলেই। খুচরো নিয়ে বচসায় জড়াচ্ছেন সবাই।

Advertisement

অভিযোগ উঠেছে, জেলার বেশ কিছু এলাকায় একাধিক রাষ্ট্রায়ত্ত ও বেসরকারি ব্যাঙ্ক খুচরো জমা নিচ্ছে না। এক, দুই, পাঁচ থেকে দশ টাকার কয়েন জমা দিতে গিয়েও বেশ কিছু ব্যাঙ্ক থেকে হতাশ হয়ে ফিরতে হচ্ছে। এ সব ব্যাপারে প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানিয়েও কোনও সুরাহা হয়নি। একাধিক ব্যাঙ্ক কর্তাদের অবশ্য দাবি, ঘরে ‘কয়েনের’ পাহাড় জমছে। খুচরো দিতে চাইলে গ্রাহকেরাও নিতে আপত্তি করছেন। যার জেরেই ভল্ট ভরে গিয়েছে। বাসিন্দারা অবশ্য তা মানতে নারাজ। তাদের বক্তব্য, ব্যাঙ্ক বাজারে অতিরিক্ত খুচরো না ছাড়লে তা গ্রাহকের হাতে পৌঁছল কী করে! গ্রাহকেরা তো খুচরো বানাননি। তা হলে এখন কেন ব্যাঙ্ক তা জমা নিতে চাইছে না সেই প্রশ্নেই ক্ষুব্ধ গ্রাহকরা।

নিশিগঞ্জ, ঘোকসাডাঙা, মাথাভাঙা ও মেখলিগঞ্জের একাধিক সরকারি, বেসরকারি ব্যাঙ্কে এমন অভিযোগ রয়েছে। তুফানগঞ্জের একটি ব্যাঙ্কের এক কর্তার বক্তব্য, খুচরো মজুত রাখার মত ভল্ট নেই। কর্মী সংখ্যাও কম। কয়েন গোনবার মত মেশিনও নেই। নিশিগঞ্জের এক বেসরকারি ব্যাঙ্ক কর্তা বলেন, তোলার ক্ষেত্রে খুচরো নেওয়ার মৌখিক শর্তে জমা নিচ্ছি। দিনহাটার একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক ম্যানেজারে আশ্বাস, দ্রুত ফের খুচরো জমা নেব।

Advertisement

সমস্যা বাসে চড়েও। খুচরো নিতে চাইছেন না কন্ডাক্টরেরা। এনবিএসটিসির এক কর্তা বলেন, “ব্যাঙ্ক বেশি খুচরো নিচ্ছে না। কন্ডাক্টরদের লোকাল রুটে ভাড়ার ৩০ টাকার বেশি ক্যাশে দিতে বারণ করতে হয়েছে। সমস্যা হচ্ছে।” গ্রাহকদের একাংশের পাল্টা প্রশ্ন, নির্দিষ্ট সংখ্যার বেশিবার অতিরিক্ত নোট, খুচরো জমার ক্ষেত্রে তা হলে অতিরিক্ত কাউন্টিং চার্জ কেন নেওয়া হবে। কোচবিহারের লিড ব্যাঙ্ক ম্যানেজার সঞ্জয় কুমার বলেন, “কয়েকটি ব্যাঙ্কের ম্যানেজারদের সঙ্গে এনিয়ে নিয়ে কথা হয়েছে। কয়েন জমা নিতে বলা হয়েছে।”

প্রশাসন বা ব্যাঙ্ক কর্তারা যাই বলুন তাতে আশ্বস্ত নন সাধারণ ক্রেতা-বিক্রেতা থেকে বাসিন্দারা। ফোসিনের সদস্য তথা দিনহাটা মহকুমা ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক রানা গোস্বামী বলেন “জেলা জুড়ে ভয়ঙ্কর অবস্থা তৈরি হয়েছে। দিনহাটায় প্রশাসনিক উদ্যোগে বৈঠকে সপ্তাহে একদিন সমস্ত ব্যাঙ্কে গুণে প্যাকেট করে আনা খুচরো জমা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও কোন ব্যাঙ্কেই সেটা মানা হচ্ছে না।” তুফানগঞ্জ মহকুমা ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক গৌতম সরকার বলেন, “এখানেও একাধিক রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কেও গ্রাহকদের খুচরো জমা দিতে হয়রান হতে হচ্ছে।”

সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন কোচবিহারের জেলাশাসক কৌশিক সাহা। তিনি বলেন “ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা হয়েছে। কোন এলাকার কোন ব্যাঙ্কে সমস্যা হচ্ছে তার তালিকা দিতে বলেছি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন