বামকেও পদ্মের ঘা

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার রাত থেকে সোমবার সকাল অবধি দফায় দফায় উত্তপ্ত হয় তুফানগঞ্জ মহকুমার ২ নম্বর ব্লকের তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

তুফানগঞ্জ শেষ আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৪:২৮
Share:

জখম: (বাঁ দিকে) সিপিএম কর্মী। (ডান দিকে) তৃণমূল সমর্থক। সোমবার। নিজস্ব চিত্র

লোকসভা ভোটের ফল বার হওয়ার পরে বেশ কয়েকটি জায়গায় বামেদের পার্টি অফিস তৃণমূলের হাত থেকে পুনর্দখল করা হয়। সেই সময়ে বামেদের পাশে বিজেপি ছিল বলে প্রায় সব মহলই এক বাক্যে মেনে নিয়েছিল। এ বারে সেই বিজেপির বিরুদ্ধেই তাঁদের কর্মীদের মারধরের অভিযোগ তুলল সিপিএম। একই সঙ্গে বিজেপির সঙ্গে তৃণমূলের সংঘর্ষেরও অভিযোগও উঠেছে। বিজেপি নেতৃত্ব অবশ্য দাবি করেছেন, সবটাই সিপিএম এবং তৃণমূলের অন্তর্দ্বন্দ্ব, তাঁদের দল জড়িত নয়।

Advertisement

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার রাত থেকে সোমবার সকাল অবধি দফায় দফায় উত্তপ্ত হয় তুফানগঞ্জ মহকুমার ২ নম্বর ব্লকের তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা। নাগুরহাটে যুব তৃণমূল কর্মীকে মারধরের অভিযোগ ওঠে রবিবার রাত সাড়ে আটটা নাগাদ। ভানুকুমারী-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের শীলঘাগরি এলাকায় একই রাতে সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য উপর অতর্কিত হামলার অভিযোগ ওঠে। সোমবার সকালে মহিষকুচি-২ গ্রাম পঞ্চায়েতে তৃণমূল কর্মীর বাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠে। প্রতিটি ঘটনাতেই নাম জড়িয়েছে বিজেপির। পাল্টা বিজেপি নেতৃত্ব অভিযোগ করেন, নাককাটিগছ এলাকায় তাঁদের বুথ সভাপতির বাড়িতে রবিবার রাতে বোম মারা হয়। পুলিশ জানায়, প্রতিটি ঘটনার উপর নজর রাখা হচ্ছে। তিনটি সংঘর্ষে তৃণমূলের তিন জন তুফানগঞ্জ মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি। সিপিএমের এক জন বক্সিরহাট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

তুফানগঞ্জ ব্লকের যুব তৃণমূল নেতা সুরেশ বর্মণ জানান, শনিবার বিকেলে রসিকবিল এলাকায় তাদের দুই কর্মীকে মারধর করা হয়। তাঁর অভিযোগ, ‘‘ফের রাত নটা নাগাদ তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সক্রিয়কর্মী পার্শ্বশিক্ষক শিলাদিত্য সেনকে শালবাড়ি বাজারে বেধড়ক মারধর করে বিজেপি। সোমবার সকালে লাঠি, আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে বিজেপির লোকজন আমাদের কর্মী মোজাম্মেল হোসেনের বাড়িতে চড়াও হয়। বাড়িঘর ভাঙচুর করে।’’ তাঁর দাবি, ‘‘বিজেপির কোচবিহার জেলা সভাপতি মালতী রাভা রবিবার মহিষকুচি এসে দলের লোকজনকে উস্কেছেন।’’ মালতীদেবী বলেন, ‘‘আমি আহত কর্মীকে দেখতে গিয়েছি। উস্কে দেওয়ার রাজনীতি তৃণমূল করে, বিজেপি করে না।’’

Advertisement

অন্য দিকে, সিপিএমের জেলা কমিটির এক সদস্য বলেন, ‘‘আমাদের কর্মী সুনীল সরকারের বাড়িতে রবিবার রাত ৯টা নাগাদ আমরা বৈঠক করি। আলোচনা শেষে বেরিয়ে আসতে অতর্কিতে আমাদের উপর হামলা করে বিজেপির লোকেরা। সুনীলের বাড়িতে ঢুকে ভাঙচুর করে। তাঁকে বেধড়ক পেটায়। সুনীল বক্সিরহাট প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসাধীন।’’

বিজেপি অবশ্য এই সব দাবি উড়িয়ে দিয়ে পাল্টা অভিযোগ করে, নাককাটিগছের ২০১ নম্বর বুথ সভাপতি সোমেন্দ্রনাথ সরকারের বাড়িতে গভীর রাতে হামলা করে তৃণমূলের লোকজন। সিপিএমও তাদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে এবং দু’দল একজোট হয়ে অশান্তি ছড়াচ্ছে, পাল্টা দাবি বিজেপির।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন