Union Budget 2020

চা শুধু ট্যুইটেই, বরাদ্দ কম বাজেটে

বাজেটকে আমজনতার কাছে পৌঁছতে ট্যুইট বার্তায় কেন্দ্রীয় বাণিজ্য মন্ত্রীর হাতিয়ার কিন্তু চা-ই।

Advertisement

অনির্বাণ রায়

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৪:৫৩
Share:

এই সেই ট্যুইট বার্তা। নিজস্ব চিত্র

কেন্দ্রীয় বাজেটে কফির তুলনায় কম বরাদ্দ জুটেছে চায়ের। কফি বোর্ড পেয়েছে ২২৫ কোটি টাকা, সেখানে চা বোর্ড পেয়েছে ২২০ কোটি টাকা। যা কম রবার বোর্ডের (২২১ কোটি) বরাদ্দের চেয়েও। এই ঘটনায় আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন চা শিল্পের সঙ্গে যুক্ত লোকেরা। যদিও বাজেটকে আমজনতার কাছে পৌঁছতে ট্যুইট বার্তায় কেন্দ্রীয় বাণিজ্য মন্ত্রীর হাতিয়ার কিন্তু চা-ই। এই নিয়েই শুরু হয়েছে বির্তক। বাজেট প্রচারে চা-কে হাতিয়ার করলেও চা শিল্প বাজেট থেকে বিশেষ কোনও সুবিধে কেন পেল না সেই প্রশ্নও উঠছে।

Advertisement

আমজনতাকে বাজেট প্রস্তাবের বরাদ্দগুলি জানাতে ট্যুইট করেছেন কেন্দ্রীয় বাণিজ্যমন্ত্রী। কৃষি, যুব, ক্ষুদ্রশিল্প, কর্পোরেট এমন সব নানা ক্ষেত্রকে এক একটি চায়ের নামে চিহ্নিত করেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। মজার ছলে তৈরি সেই ট্যুইটের মধ্যমণি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কার্টুন চিত্র। সেখানে মোদী কেটলি হাতে ভাঁড়ে চা ঢালছেন। ট্যুইটবার্তার উপরে লেখা হয়েছে ‘ভারতীয় টি পার্টি।’ চা-কে হাতিয়ার করে প্রধানমন্ত্রীকে ‘চা ওয়ালা’ দেখিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর যে বার্তা তাতে চা শিল্পেরই কোনও উল্লেখ নেই। তা নিয়ে অভিযোগ বিরোধীদেরও।

কেন্দ্রীয় বাণিজ্যমন্ত্রী ওই ট্যুইটে কতগুলি ভাগ করেছেন। যেমন কৃষকদের জন্য ঘোষিত প্রকল্পগুলি লিখেছেন ‘কুল্হাদ চায়ে’ শিরোনামে। অর্থাত যাকে ভাঁড়ে চা বলা হয়। যুবদের প্রকল্পের শিরোনামে ‘আইসড টি’ লিখেছেন। ছাত্রদের ক্ষেত্রে শিরোনাম হয়েছে ‘চায়ে টি,’ মধ্যবিত্ত শ্রেণিকে ‘কাটিং চা’ অর্থাত অর্ধেক কাপ চা বলা হয়েছে।

Advertisement

রেলের প্রকল্প বোঝাতে লিখেছেন ‘রেলওয়ালি চা’ আর কর্পোরেট ক্ষেত্রকে ‘টি পট’ শিরোনামে লেখা হয়েছে। এ ছাড়াও ‘বাজার কী চায়ে’, ‘গ্রিন টি’ ইত্যাদি শিরোনাম রয়েছে। সঙ্গে ছবিও।

দেশের ছোট চা বাগানগুলির সংগঠন সিস্টা-র সর্বভারতীয় সভাপতি বিজয়গোপাল চক্রবর্তীর কথায়, “ট্যুইটটি দেখেছি। দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় পানীয় হল চা। সেই কারণেই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আমজনতার বোঝার জন্য হয়তো নানা চায়ের নাম দিয়ে শ্রেণিবিন্যাস করেছেন। কিন্তু বাণিজ্যমন্ত্রীর সেই বার্তাতে এবং অর্থমন্ত্রীর বাজেটে কোথাও চায়ের জন্য কোনও কথা দেখলাম না। এটাই আক্ষেপ।”

টি অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়া-র (টাই) মহাসচিব প্রবীর ভট্টাচার্যের কথায়, “চা শিল্পের জন্য এই মুহূর্তে অনেক সহায়তার প্রয়োজন ছিল। সেগুলি পেলে খুব ভাল হতো।” উত্তরবঙ্গের চা বলয়ের বিজেপি নেতাদের অবশ্য দাবি, পরে বেশ কিছু পদক্ষেপ দেখা যাবে। জলপাইগুড়ির বিজেপি সাংসদ জয়ন্ত রায়ের কথায়, “সবটাই যে বাজেটে থাকবে তা নয়। বেশ কিছু পদক্ষেপ পরে দেখা যাবে। প্রধানমন্ত্রী নিজেই চা বিক্রেতা ছিলেন, তাই চা এবং চা বিক্রেতাদের দুঃখ কষ্ট তাঁর থেকে ভাল কেউ বোঝেন না।” এই দাবি নিয়ে কটাক্ষ করেছেন বিরোধীরা।

তৃণমূল সমর্থক এক চা বাগান মালিকের কথায়, “চায়ের কাপ দেখিয়ে বিজেপি-সরকার শুধু রাজনীতিই করে, কাপে কিন্তু কিছু ঢালে না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন