ঘুমন্ত মায়ের পাশ থেকে উধাও যমজ সন্তান!

গ্রামবাসীরাও ক্ষুব্ধ। শিশু চুরির অভিযোগ ছড়িয়ে পড়তেই তুমুল হইচই পড়ে যায় গ্রাম জুড়ে। রবিবার সকাল থেকেই উদ্বিগ্ন গ্রামবাসীরা ভিড় জমান নিখোঁজ শিশুদের বাড়িতে। কুকুর নিয়ে গিয়ে গ্রামে তল্লাশি চালায় পুলিশ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মালদহ শেষ আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০১৭ ০৭:০০
Share:

তল্লাশি: পুলিশ কুকুর দিয়ে তদন্ত। —নিজস্ব চিত্র  

সদ্যোজাত যমজ দুই সন্তানদের নিয়ে ঘরে ঘুমোচ্ছিলেন এক মহিলা। সেই ঘর থেকেই রহস্যজনক ভাবে নিখোঁজ হয়ে গেল তাঁর দুই শিশুই। শনিবার গভীর রাতে ঘটনাটি ঘটেছে পুরাতন মালদহের সাহাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের চিরাহরি গ্রামে। ওই শিশুদের চুরি করা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন পরিবার।

Advertisement

গ্রামবাসীরাও ক্ষুব্ধ। শিশু চুরির অভিযোগ ছড়িয়ে পড়তেই তুমুল হইচই পড়ে যায় গ্রাম জুড়ে। রবিবার সকাল থেকেই উদ্বিগ্ন গ্রামবাসীরা ভিড় জমান নিখোঁজ শিশুদের বাড়িতে। কুকুর নিয়ে গিয়ে গ্রামে তল্লাশি চালায় পুলিশ।

পুরাতন মালদহের সাহাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রত্যন্ত গ্রাম মাধাইপুরের চিরাহারা। ওই গ্রামেই ভাট্টা বিলের ধারে বসবাস করেন মহম্মদ আকতারুল। তিনি মাছ ধরে বাজারে বিক্রি করেন। তাঁর স্ত্রী রুমেলা বিবি এক মাস আগে দুই যমজ সন্তানের জন্ম দেন। তাঁদের আরও দুই ছেলে রয়েছে। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, রুমেলা বিবি সদ্যোজাত শিশুদের নিয়ে ঘরে একাই ঘুমিয়েছিলেন। আর বাকি দুই ছেলেদের নিয়ে অন্য ঘরে ঘুমোচ্ছিলেন আকতারুল। অভিযোগ, রাত ১টা নাগাদ রুমেলাদেবী দেখেন পুরো ঘর অন্ধকার রয়েছে। ঘরের আলো জ্বালাতেই দেখেন দুই সন্তানও নিখোঁজ। ঘটনায় হইচই পড়ে যায় গ্রাম জুড়েই। রাতভর গ্রামে তল্লাশি চালান পরিবারের লোকেরা। তারপরেই ঘটনাস্থলে আসে মালদহ থানার পুলিশ। পরিবারের দাবি, কেউ বা কারা ওই শিশুদের চুরি করে নিয়ে গিয়েছে।

Advertisement

রুমেলাদেবী বলেন, “দিবারাত্রি আমার ঘরে আলো জ্বালানো থাকে। এ দিন রাতে দেখি ঘর অন্ধকার। তারপরেই দেখি আমার ছেলেরা নেই।” কেউ বা কারা ছেলেদের চুরি করে নিয়ে গিয়েছেন বলে দাবি করেছেন তিনি।

ঘটনায় গ্রামে শিশু চুরির আতঙ্ক ছড়িয়েছে। ঘর থেকে যমজ শিশুদের চুরি করে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা নজিরবিহীন বলে দাবি করেছেন গ্রামবাসীরা। তবে পুরো ঘটনায় রহস্যদানা বেধেছে। তাঁদের দাবি, একজনের পক্ষে দুজনকে একসঙ্গে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। এ ছাড়া শিশুদের কান্নারও কোনও শব্দ পাওয়া যায় নি। ফলে একটি চক্র জড়িত থাকতে পারে বলে অনুমান করেছেন তাঁরা। গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য কংগ্রেসের জাকির হোসেন বলেন, “ঘটনাটি খুবই রহস্যজনক। পুলিশের কাছে ঘটনার রহস্য উন্মোচনের দাবি জানিয়েছি।”

পুলিশ জানিয়েছে, ওই পরিবারের এক কিশোর রাত ১২টা নাগাদ এক মহিলাকে বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেছে বলে দাবি করেছে। সেই সময় কিছু বুঝতে না পেরে ওই কিশোর ঘরে ঘুমোতে চলে যায়। তাকে আলাদা ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এ ছাড়া ওই কিশোরের প্রাথমিক বয়ানে কুকুর দিয়ে পুরো এলাকায় তল্লাশি চালানো হচ্ছে। এমনকী, ভাট্টা বিলেও বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর কর্মীদের নিয়ে তল্লাশি চালানো হয়েছে। মালদহের পুলিশ সুপার অর্ণব ঘোষ বলেন, “সমস্ত দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন