শিক্ষক কম, এক ঘরে দু’টি ক্লাস

স্কুলে চারটি শ্রেণির পড়ুয়াদের জন্য পাঁচটি ঘর থাকলেও শিক্ষকের অভাবেই তা ব্যবহার করা যায় না। একটি ঘরে বসানো হয় পঞ্চম ও ষষ্ঠ শ্রেণির পড়ুয়াদের। অন্য ঘরে বসে সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়ারা।

Advertisement

জয়ন্ত সেন

মালদহ শেষ আপডেট: ২১ জুলাই ২০১৭ ০২:১৩
Share:

পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণিতে রয়েছে ১৭৩ পড়ুয়া। কিন্তু তাদের পড়ানোর জন্য রয়েছেন সাকুল্যে তিনজন শিক্ষক। এর মধ্যে প্রধান শিক্ষককে সপ্তাহে তিন-চারদিন ব্লকে নানা প্রশাসনিক বৈঠকে যোগ দিতে হয়। তখন ক্লাস করাতে হয় বাকি দু’জনকেই। বাধ্য হয়ে একটি ঘরেই দু’টি ক্লাসের পড়ুয়াদের নিয়ে ক্লাস করাতে হয় শিক্ষকদের। মালদহের হবিবপুর ব্লকের অনাইল জুনিয়র হাই স্কুলে এটাই রোজকার ছবি।

Advertisement

স্কুলে চারটি শ্রেণির পড়ুয়াদের জন্য পাঁচটি ঘর থাকলেও শিক্ষকের অভাবেই তা ব্যবহার করা যায় না। একটি ঘরে বসানো হয় পঞ্চম ও ষষ্ঠ শ্রেণির পড়ুয়াদের। অন্য ঘরে বসে সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়ারা। এই ভাবে পড়াশোনা চলায় ক্ষুব্ধ অভিভাবকেরাও।

হবিবপুর ব্লকের বুলবুলচণ্ডি গ্রাম পঞ্চায়েতের অনাইল গ্রামে এই স্কুলটি মালদহ-নালাগোলা রাজ্য সড়কের পাশে অবস্থিত। ২০০৯-এ স্থাপিত স্কুলটির ক্লাস প্রথমে পাশেই থাকা প্রাইমারি স্কুলের বিল্ডিংয়েই হতো। তখন অতিথি শিক্ষক দিয়ে ক্লাস চলত। ২০১০-এ স্কুল সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে প্রধান শিক্ষক সহ তিন শিক্ষক এখানে নিয়োগ হন। এরপর ২০১৩-তে পাঁচটি ক্লাসরুম ও প্রধান শিক্ষকের একটি রুম-সহ দোতলা ভবন হয়েছে। তবে স্কুলের কোনও পাঁচিল হয়নি। এখন পঞ্চম শ্রেণিতে ২০, ষষ্ঠতে ৫৬, সপ্তমে ৫৮ ও অষ্ঠমে ৩৯ জন ছাত্রছাত্রী রয়েছে।

Advertisement

একসঙ্গে ক্লাস করানোয় পড়ুয়াদের মনোসংযোগে যাতে ব্যাঘাত না ঘটে সেজন্যও উপায় বের করেছেন শিক্ষকরা। একটি শ্রেণির পড়ুয়াদের যখন কোনও বিষয় নিয়ে শিক্ষক পড়ান তখন তিনি অপর শ্রেণির পড়ুয়াদের লিখতে দেন। প্রধান শিক্ষক উজ্জ্বলকুমার কুণ্ডু বলেন, ‘‘স্কুলে পাঁচটি শিক্ষক পদ অনুমোদন রয়েছে, সেখানে শিক্ষক মাত্র তিনজন। কোনও শিক্ষক ছুটি নিলে সমস্যা আরও বা়ড়ে।’’ জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকের কাছে স্কুলে শিক্ষক চেয়ে আবেদন করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

সপ্তম শ্রেণির দেবরাজ বর্মন, সান্তনা বর্মন বা অষ্টম শ্রেণির বিষ্ণু সরকার, পিঙ্কি রায়রা বলে, ‘‘একই ঘরে দু’টি ক্লাস চলায় সমস্যা হয়। কিন্তু উপায় নেই।’’ পদ থাকলেও স্কুলে শিক্ষক নিয়োগ কেন হচ্ছে না তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ক্ষুব্ধ অভিভাবকরা। জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক তাপস বিশ্বাস বলেন, ‘‘২০১২ সালের পর স্কুল সার্ভিস কমিশন থেকে আমরা শিক্ষক পাইনি।’’ কিন্তু স্কুলের তরফে আবেদন করা হলে অতিথি শিক্ষক দেওয়ার চেষ্টা করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন