উত্তরবঙ্গে বন্যা নিয়ন্ত্রণে দু’টি মাস্টার প্ল্যান

চলতি বছরেই উত্তরবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকায় কয়েক দফায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়। বন্যার জলে ডুবে যায় অন্তত ৩ হাজার হেক্টর কৃষি জমি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০১৭ ০৩:০৪
Share:

উত্তরবঙ্গের বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় পাঁচ দশক আগে কমিশন গড়েছিল রাজ্য সরকার। উত্তরবঙ্গ বন্যা নিয়ন্ত্রণ কমিশনের চেয়ারম্যান পদে বসানো হতো মুখ্য বাস্তুকার পদ মর্যাদার আধিকারিকদের। বছরখানেক আগে সেচ দফতরের অভ্যন্তরীণ সংস্কারে কমিশনের অস্তিত্ব বিলোপ হয়। কমিশনের বিকল্পে এ বার তৈরি হচ্ছে মাস্টার প্ল্যান। উত্তরবঙ্গের বন্যা রুখতে নবান্ন থেকে সেচ দফতরকে নির্দেশ পাঠিয়ে দু’টি মাস্টার প্ল্যান তৈরি করতে বলা হয়েছে। রাজ্যের সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সমীক্ষা শুরু হয়েছে। দ্রুত মাস্টার প্ল্যান তৈরির কাজ শেষ হয়ে যাবে।’’

Advertisement

চলতি বছরেই উত্তরবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকায় কয়েক দফায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়। বন্যার জলে ডুবে যায় অন্তত ৩ হাজার হেক্টর কৃষি জমি। ১২ কিলোমিটার নদী বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফাটল দেখা যায় একাধিক রেলসেতু এবং সাধারণ সেতুতে। জাতীয় সড়ক-রাজ্য সড়ক জলের তোড়ে ভেঙে যায়। বন্যা বিপর্যয়ের পরেই মাস্টার প্ল্যান তৈরির পরিকল্পনা করেছে রাজ্য সরকার। গত বছর প্রশাসনিক সংস্কারে লোপ পায় কমিশন। কমিশনের অফিস-বাড়ি অবশ্য একই থাকে। নাম বদলে গিয়ে হয় উত্তর পূর্ব সেচ সার্কেল। কমিশনের চেয়ারম্যান পদ বদলে হয়ে যায় মুখ্য বাস্তুকার উত্তর পূর্ব সার্কেল। কমিশনের দুই সদস্যকেও অন্য বিভাগে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। বন্যা নিয়ন্ত্রণের পরিকল্পনা এবং রূপায়ণই ছিল কমিশনের একমাত্র কাজ। বিভিন্ন জেলার জন্য সামগ্রিক ভাবে বন্যা নিয়ন্ত্রণ পরিকল্পনা তৈরি হত।

গত বছরে মাঝামাঝি কমিশনের অবলুপ্তি ঘটে। সেচ দফতরের একাংশের দাবি, কমিশন না থাকায় সব জেলাকে নিয়ে বন্যা রোধের সামগ্রিক পরিকল্পনা যথাযথ ভাবে রূপায়িত না হওয়াতেই বন্যায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এ বার বেশি হয়েছে। সে কারণেই ফের মাস্টার প্ল্যান তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

Advertisement

সেচমন্ত্রী রাজীববাবুই জানালেন বিস্তারিত পরিকল্পনা। জলপাইগুড়ি, কোচবিহার, শিলিগুড়ি মহকুমা এবং আলিপুরদুয়ার নিয়ে তৈরি হচ্ছে একটি মাস্টার প্ল্যান। অন্য দিকে মালদহ, দুই দিনাজপুর জেলা নিয়ে আরও একটি মাস্টার প্ল্যান তৈরি হচ্ছে। সেচমন্ত্রী বলেন, ‘‘ঘাটাল, কাঁথি এবং নিম্ন দামোদর নিয়ে মাস্টার প্ল্যান হয়েছে। এবার মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন উত্তরবঙ্গের জন্য পৃথক মাস্টার প্ল্যান। সেই কাজ দ্রুত চলছে।’’ উত্তরবঙ্গের কোথায় বন্যা প্রতিরোধের কাজ আগেভাগে করতে হবে, কোন নদী, কোন বাঁধ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা বেশি তার যাবতীয় তথ্য মাস্টার প্ল্যানে থাকবে। পরিকল্পনা তৈরি হলে আগামী দু’বছরের মধ্যে উত্তরবঙ্গের বন্যার আশঙ্কাও অনেকগুণ কমে যাবে বলে দাবি। সেচমন্ত্রীর দাবি, ‘‘রাজ্য সরকারের টাকাতেই পরিকল্পনা এবং রূপায়ণ হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন