Vulture

শকুনের জন্য গাছ লাগানো হল ভাগাড়ে

শকুন বাঁচাতে নানা পরিকল্পনা হলেও এখনও এ রাজ্যে পরিস্থিতি বদলায়নি। ডুয়ার্সের রাজাভাতখাওয়ায় দেশের অন্যতম শকুন সংরক্ষণ এবং প্রজনন কেন্দ্র গড়ে উঠেছে বছর দশেক আগে।

Advertisement

সৌমিত্র কুণ্ডু

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১০:১৬
Share:

সচেতনতা: শকুন বাঁচাতে। শনিবার মিছিলে খুদের দল। ছবি: স্বরূপ সরকার।

বিপন্ন শকুনের বেঁচে থাকার জন্য উপযুক্ত পরিবেশ দিতে এ বার ভাগাড়ে গাছ লাগানোর কর্মসূচি নেওয়া হল।

Advertisement

শকুন বাঁচাতে নানা পরিকল্পনা হলেও এখনও এ রাজ্যে পরিস্থিতি বদলায়নি। ডুয়ার্সের রাজাভাতখাওয়ায় দেশের অন্যতম শকুন সংরক্ষণ এবং প্রজনন কেন্দ্র গড়ে উঠেছে বছর দশেক আগে। তা সত্ত্বেও অনুকূল প্রাকৃতিক পরিবেশের অভাবে এবং আরও কিছু কারণে শকুন আজও বিপন্ন। এ বার তাই পশুর মৃতদেহ ফেলার ভাগাড়ে গাছ লাগাতে উদ্যোগী হল ‘হিমালয়ান নেচার অ্যান্ড অ্যাডভেঞ্চার ফাউন্ডেশন’ (ন্যাফ) ও ‘বম্বে ন্যাচরাল হিস্ট্রি সোসাইটি’ (বিএনএইচএস)। শনিবার ‘আন্তর্জাতিক শকুন সচেতনতা দিবস’-কে সামনে রেখে শিলিগুড়ির উপকণ্ঠে ফুলবাড়ি-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের জটিয়াকালি এলাকায় এই কর্মসূচি নেওয়া হয়। দুই উদ্যোগী সংগঠনের বক্তব্য, ভাগাড়ের কাছে শকুনদের বসার গাছ নেই। হাইটেনশন বিদ্যুতের তারে বসে শকুন মরছে বলেও অভিযোগ।

এ দিন গাছ লাগানোর কর্মসূচিতে উপস্থিতিতে ছিলেন বিএনএইচএস-এর বিজ্ঞানী তথা রাজাভাতখাওয়ায় দেশের অন্যতম শকুন সংরক্ষণ এবং প্রজনন কেন্দ্রের সেন্টার ম্যানেজার সৌম্যসুন্দর চক্রবর্তী। সহযোগিতা করছে বন দফতর এবং স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত। ছিলেন উত্তরবঙ্গের অতিরিক্ত প্রধান মুখ্য বনপাল উজ্জ্বল ঘোষ। এলাকার এক ব্যক্তির দুই বিঘা জমিতে এই ভাগাড়টি রয়েছে। শহরের মৃত পশু এখানেই ফেলা হয়।

Advertisement

অতিরিক্ত প্রধান মুখ্য বনপাল বলেন, ‘‘সাধারণ মানুষকে বোঝানো হচ্ছে, আমাদের ভালর জন্যই এই পাখিটিকে আমাদের বাঁচানো প্রয়োজন। এখানে মৃত পশুর ভাগাড় তৈরির বিষয়টিকেও উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে।’’ ‘ন্যাফ’-এর মুখপাত্র অনিমেষ বসু বলেন, ‘‘হোয়াইট ব্যাকড ভালচার, হিমালয়ান গ্রিফন, সিনেরাস ভালচারের দেখা মেলে। ভাগাড়ে পাখিগুলো এলে যাতে কেউ বিরক্ত না করে, সে জন্য স্থানীয় বাসিন্দা, কচিকাঁচাদের মধ্যে শকুন নিয়ে সচেতনতা প্রচার, র‌্যালি করা হয়। গাছ লাগানো হল, যাতে ভবিষ্যতে পাখিগুলো নিরাপদে বসতে পারে।’’

বিশেষজ্ঞেরা জানান, শকুন বিপন্ন হওয়ার মূল কারণ হল একটি বিশেষ ওষুধ। পশু চিকিৎসায় তা নিষিদ্ধ হলেও মানুষের জন্য ওই ওষুধ পশুদের ক্ষেত্রেও ব্যবহৃত হচ্ছে। তা ছাড়া, আগের মতো খোলা জায়গায় মৃত পশুর দেহ ফেলার প্রবণতা কমেছে। তাতে শকুনের খাবারের সঙ্কট দেখা দিচ্ছে।

সৌম্যসুন্দরের কথায়, ২০২১ ফেব্রুয়ারি এবং এ বছর জুলাইয়ে দুই দফায় ১০টি করে ২০টি শকুন ছাড়া হয়েছে রাজাভাতখাওয়া কেন্দ্রটি থেকে। রাজ্য বন দফতর এবং কেন্দ্রের পরিবেশ এবং বন মন্ত্রকের সাহায্যে এই প্রক্রিয়া চলবে বলে তিনি জানান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন