জর্জরিত মালদহ
Dengue

পাঁচ ঘণ্টায় মৃত দু’জন

মাত্র ৫ ঘণ্টার ব্যবধানে জ্বরে আক্রান্ত হয়ে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে মালদহে। রবিবার মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ওই দুই রোগীর মৃত্যু হয়। জ্বরে মৃত দু’জনেরই বাড়ি ইংরেজবাজারে। পরিবারগুলোর দাবি, ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে রোগীদের মৃত্যু হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ অক্টোবর ২০১৭ ০২:৫৭
Share:

মাত্র ৫ ঘণ্টার ব্যবধানে জ্বরে আক্রান্ত হয়ে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে মালদহে। রবিবার মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ওই দুই রোগীর মৃত্যু হয়। জ্বরে মৃত দু’জনেরই বাড়ি ইংরেজবাজারে। পরিবারগুলোর দাবি, ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে রোগীদের মৃত্যু হয়েছে। সেই সঙ্গে ডেঙ্গি রোধে পুরসভা ও পঞ্চায়েতের ভুমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা। তাঁদের অভিযোগ, প্রায় প্রতিটি ঘরে জ্বরের রোগী থাকলেও সচেতনতা এবং মশা নিধনের কোনও কাজই করছে না পুরসভা ও পঞ্চায়েত। তবে এ দিনের দু’টি ঘটনাতেই ডেঙ্গিতে মৃত্যু হয়নি বলে দাবি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের।

Advertisement

শনিবার দুপুরে জ্বর নিয়ে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় ইংরেজবাজার শহরের ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের বুড়াবুড়ি তলার বাসিন্দা বিপ্লব পালকে। সে মালদহ অ্যাকাদেমি হাই স্কুলের নম্বর শ্রেণির ছাত্র ছিল। তার বাবা বাসুদের পাল পেশায় তেলেভাজা বিক্রেতা। বিপ্লব তাঁর একমাত্র সন্তান। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, তিন দিন ধরে জ্বরে ভুগছিল বিপ্লব। প্রথমে এক চিকিৎসকের কাছে নিয়ে গিয়ে তার চিকিৎসা করানো হয়। তবে ওই দিন দুপুরে জ্বরের সঙ্গে বমি এবং মাথা যন্ত্রণা শুরু হয়। তাকে তড়িঘড়ি মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করানো হয়। এদিন ভোর চারটে নাগাদ মৃত্যু হয় তার। ঘটনায় হাসপাতালে ক্ষোভে ফেটে পড়েন পরিবারের লোকেরা। অভিযোগ, চিকিৎসকেরা ঠিক মতো চিকিৎসা করেননি। ঘটনায় কান্নায় ভেঙে পড়েছেন মৃত ছাত্রের পরিবার। মৃতের মা ঝর্না দেবী বলেন, “আমার সব শেষ হয়ে গেল।”

এ দিনই সকাল ন’টা নাগাদ জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মারা যান ইংরেজবাজারের শোভানগরের চণ্ডীপুরের কায়েশ আলির। তিনি মিল্কি ফাঁড়িতে সিভিক ভলান্টিয়ার ছিলেন। দু’দিন ধরে তিনি জ্বরে ভুগছিলেন। এ দিন সকালে মিল্কি প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে গেলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মেডিক্যালে স্থানান্তরিত করেন। এদিনই সকালে তাঁর মৃত্যু হয়। ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করেন পরিবারের লোকেরা। মৃতের দাদা মেহের আলি বলেন, “গ্রামের ল্যাবে ভাইয়ের রক্ত পরীক্ষা করা হয়েছিল। সেখানে ডেঙ্গি হয়েছে বলে উল্লেখ করে।”

Advertisement

এ দিনের ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, চণ্ডীপুর এবং শহরের বুড়াবুড়ি তলায় প্রায় প্রতিটি বাড়িতে জ্বরে আক্রান্ত রোগী রয়েছে। অনেকের ডেঙ্গিও হয়েছে। অথচ মশা মারা তেল, ব্লিচিং কিছুই ছড়ানো হচ্ছে না। এমনকী, মানুষকে সচেনতনও করা হচ্ছে না। ইংরেজবাজার পঞ্চায়েত সমিতির স্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ নুর নেহার খাতুন বলেন, “গ্রামের ছেলে কায়েশের ডেঙ্গিতে মৃত্যু হয়েছে বলে শুনেছি। আমরা ডেঙ্গি রোধে ব্লক প্রশাসনকে জানিয়েছি।”

মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষের দাবি, বিপ্লবের সেপ্টিসেমিয়া এবং কায়েশের রক্তে সংক্রামনের জন্য মৃত্যু হয়েছে। সুপার তথা সহ অধ্যক্ষ অমিত কুমার দাঁ বলেন, “দৈনিক জ্বর নিয়ে অনেকে ভর্তি হচ্ছেন। সবাইকে পরিষেবা দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে।” তবে এ দিনের ঘটনায় রিপোর্ট এখনও পাননি। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সৈয়দ শাহাজান সিরাজ বলেন, “বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখব।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement