প্রতীকী ছবি।
পুজো উপলক্ষে গ্রামে চার দিন ধরে চলে মেলা। পুজোতে মামার বাড়িতে এসে সেই মেলা ঘুরতে এসে জলে ডুবে মূত্যু হল স্কুল পড়ুয়া খুড়তুতো দু’বোনের। ঘটনাটি ঘটেছে পুরাতন মালদহের মহিষবাথানি গ্রাম পঞ্চায়েতের বলরামপুর গ্রামে। রবিবার দুপুরে পুলিশ মৃতদেহ দু’টি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য পাঠায় মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। একই পরিবারের দুই কিশোরীর মৃত্যুর ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে আসে পুরাতন মালদহের বলরামপুর এবং মোথাবাড়ির কবিরাজ পাড়া গ্রামে। মৃতদের নাম লক্ষ্মী মণ্ডল (১২) ও কাজল মণ্ডল (১০)। লক্ষ্মী ষষ্ঠ এবং কাজল পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী ছিল। দু’জনই মোথাবাড়ি হাইস্কুলে পড়াশোনা করত। দু’জনেরই বাবা দিনমজুরি করেন। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে মালদহ থানার পুলিশ।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বাজারে ধুমধাম করে পুজো হলেও মোথাবাড়ি থানার কবিরাজ পাড়া গ্রামে পুজো হয় না। তাই প্রতি বছরই ছেলে মেয়েদের নিয়ে পুরাতন মালদহের বলরামপুর গ্রামে বাড়িতে ঘুরতে যান লতিকা মণ্ডল। তাঁর দুই ছেলে-মেয়ের মধ্যে কাজলই বড়। এ বারে পুজোতে তাঁদের সঙ্গে ঘুরতে যাওয়ার জন্য বায়না ধরেছিল কাজলের খুড়তুতো দিদি লক্ষ্মী। নবমীর দিন এক সঙ্গে বলরামপুরে ঘুরতে এসেছিলেন তাঁরা।
বলরামপুরের পুজোকে ঘিরে গ্রামে চার দিন ধরে মেলা বসে। মণ্ডপের পাশেই লতিকা দেবীর বাবার বাড়ি। শনিবার দুপুর ১২টা নাগাদ লক্ষ্মী ও কাজল গ্রামেরই মহানন্দা নদীতে স্নান করতে গিয়েছিল। দীর্ঘ ক্ষণ ধরে বাড়ি না ফেরায় খোঁজ শুরু করে দেন পরিবারের লোকেরা। ওই দিন রাতভর মহানন্দা নদীতে বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের কর্মী এবং গ্রামবাসীরা যৌথ ভাবে খোঁজ চালায়। তারপরেও উদ্ধার হয়নি ওই দুই কিশোরীর দেহ। এ দিন সকাল ছ’টা নাগাদ বলরামপুর থেকে ৫০০ মিটার দূরে লক্ষ্মীর মৃতদেহ উদ্ধার হয়। একই সঙ্গে এদিনই সকাল ন’টা নাগাদ উদ্ধার হয় কাজলেরও মৃতদেহ।
লতিকা দেবী আক্ষেপ করে বলেন, “কী করে এমন হয়ে গেল কিছুই বুঝতে পারছি না।’’ দশমীর দুপুর থেকেই গ্রামের পুজো মণ্ডপে মাইক বন্ধ হয়ে যায়।