ছোটন ও গুরুচরণ। নিজস্ব চিত্র
বাবা দীর্ঘ দিন ধরে অসুস্থ। দুই দাদা ভিনরাজ্যে শ্রমিকের কাজ করেন। এই অবস্থায় নিজের পড়ার খরচ নিজেকেই চালাতে হয়েছে ছোটন রবিদাসকে। খরচ তুলতে বাবা খগেন রবিদাসের যন্ত্রপাতি নিয়ে নিয়মিত বাজারে বসে জুতো সেলাই করেছেন ছোটন। সব প্রতিকূলতা জয় করে উচ্চ মাধ্যমিকে ৮০ শতাংশের বেশি নম্বর পেয়ে পাশ করেছেন চাঁচলের প্রত্যন্ত গ্রাম দক্ষিণপাকা মল্লিকপাড়া হাই স্কুলের ছোটন রবিদাস।
আরেকজনকে বাবা নিবাস কর্মকারের সঙ্গে রাস্তায় ঘুরে আখের রস বিক্রি করতে হয়। তার পরেও নিয়মিত পড়াশোনা চালিয়ে গিয়েছেন মালদহ জেলা স্কুলের ছাত্র গুরুচরণ কর্মকার। উচ্চ মাধ্যমিকে ৯০ শতাংশ নম্বর পেয়েছিলেন গুরুচরণ।
নিজেদের এলাকায়, স্কুলে ওদের লড়াইয়ের কথা সকলেরই জানা। এ বার সেই লড়াইকে স্বীকৃতি জানাল দ্য টেলিগ্রাফ এডুকেশন ফাউন্ডেশন। দ্য টেলিগ্রাফ স্কুল অ্যাওয়ার্ড ফর এক্সেলেন্স-এর তরফে শনিবার কলকাতার সায়েন্স সিটি অডিটোরিয়ামে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তাঁদের সম্মানিত করা হয়েছে। দুই লড়াকুর সম্মানিত হওয়ার খবরে জেলাজুড়েই খুশির আবহ। ২২ বছর ধরে অসামান্য প্রতিভাদের স্বীকৃতি দিয়ে আসছে দ্য টেলিগ্রাফ এডুকেশন ফাউন্ডেশন।
এই স্বীকৃতিতে খুশি ছোটন ও গুরুচরণ। ছোটন এখন চাঁচল কলেজে ইংরেজি অনার্স ও গুরুচরণ ভূগোল অনার্স পড়ছেন। আরও সফল হতে চান তাঁরা। এ দিন দু’জনেই কলকাতা থেকে জানান, ‘‘খুব ভাল লাগছে। লড়াই করে জয়ী হওয়ার উত্সাহটা আরও বেড়ে গেল।’’ এ দিন তাঁদের সঙ্গে নিয়ে কলকাতায় গিয়েছিলেন দক্ষিণপাকা স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক গোকুলকুমার দাস ও মালদহ জেলা স্কুলের শিক্ষক গৌতম দাস। ওই দুই পড়ুয়ার সাফল্যে গর্বিত তাঁরাও।