কচুরিপানায় ভরেছে রসিকবিল। — নিজস্ব চিত্র।
একাধিকবার কোচবিহারের পর্যটন শিল্পকে চাঙ্গা করার পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। বেশ কিছু ক্ষেত্রে তার থেকে সাড়া মিললেও বিভিন্ন সময়ে নানা সমস্যা দেখা দিচ্ছে। জেলার অন্যতম আকর্ষণ রসিকবিল পর্যটন কেন্দ্রের নৌকাবিহার বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে পর্যটকদের মধ্যে।
পর্যটকদের একাংশের অভিযোগ, ছ’মাসের বেশি সময় ধরে বন্ধ রয়েছে সেই নৌকাবিহার। বে়ড়াতে গিয়ে নৌকাবিহার হাতছাড়া হওয়ায় হতাশ হয়ে ফিরতে হচ্ছে তাঁদের। পর্যটকদের অভিযোগ, ফের কবে ওই নৌকাবিহার চালু হবে সে ব্যাপারে স্পষ্ট করে কিছুই বলতে পারছেন না বন দফতর ও বন উন্নয়ন নিগমের কর্তারা। রাজ্যের বনমন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মন বলেন, ‘‘ওই ব্যাপারে চিন্তা ভাবনা হচ্ছে।’’ এই বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে বন উন্নয়ন নিগমের চেয়ারম্যান উদয়ন গুহ বলেন, “শীঘ্র কলকাতা থেকে জেলায় ফিরে রসিকবিল পর্যটন কেন্দ্র সরেজমিনে ঘুরে দেখতে যাব। কেন নৌকাবিহার বন্ধ, সে সব খতিয়ে দেখার পাশাপাশি সেখানকার উন্নয়নে কী পরিকল্পনা নেওয়া যায় সে সবও দেখা হবে।’’
বাম আমলে কোচবিহারের তুফানগঞ্জ মহকুমার রসিকবিলের বিশাল জলাশয়কে কেন্দ্র করে ওই পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়। মূলত শীতের মরসুমে সেখানে আসা পরিয়ায়ী পাখিদের টানে পর্যটকেরা ভিড় জমাতেন। সেখানে পরবর্তী সময়ে মিনি জু তৈরি হয়। চিতাবাঘ উদ্ধার কেন্দ্র, ঘড়িয়াল উদ্ধার কেন্দ্র, হরিণ উদ্যান, পাখিরালয়, পাইথন উদ্ধার কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়। ফলে সারাবছরই নেগেই থাকে পর্যটকদের আনাগোনা। রসিকবিল পর্যটন কেন্দ্র চত্বরেই তুফানগঞ্জ ২ পঞ্চায়েত সমিতি ও বন উন্নয়ন নিগমের বাংলোয় রাত্রিবাসের ব্যবস্থাও করা হয়েছে। জেলার এই গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন কেন্দ্রের আকর্ষণ বাড়াতে কয়েক বছর আগে বন দফতর ও বন উন্নয়ন নিগম কর্তৃপক্ষের তরফে নৌকাবিহারের ব্যবস্থা চালু করা হয়েছিল। তাতে উৎসাহীদের ভিড়ও হত।
এলাকার বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, শীতের মরসুমে রসিকবিল জলাশয় কচুরিপানায় ঢেকে যাওয়ায় নৌকাবিহার চালু রাখা নিয়ে সমস্যা তৈরি হয়। নৌকাবিহার বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দীর্ঘদিন পড়ে থেকে কিছু বোটও খারাপ হয়ে গিয়েছে বলে দাবি। কচুরিপানা সাফ করে নৌকাবিহার চালু করার কোনও উদ্যোগও নেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ। রসিকবিলের এক কর্মী জানিয়েছেন, নৌকাবিহারের জন্য একসময় মোট ১০টি বোট ছিল। মাথাপিছু ১৫ টাকায় জলাশয়ে বেড়ানো যেত।