কাছে গেলে বমি আসে

কিন্তু কেন এমন অবস্থা? হাইস্কুল কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, সাফাইকর্মী কম থাকায় শৌচাগার পরিচ্ছন্ন রাখতে সমস্যা হয়।

Advertisement

সৌমিত্র কুণ্ডু

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৮ জুলাই ২০১৯ ০৭:৪৯
Share:

ভয়াবহ: শৌচাগারের সামনে জমে জঞ্জাল। শিলিগুড়ি হিন্দি গার্লস হাই স্কুলে। ছবি: স্বরূপ সরকার

বারান্দা দিয়ে হেঁটে গেলে এক কোণায় অন্ধকার জায়গা। তার কাছাকাছি যেতেই নাকে এমন দুর্গন্ধ আসে যে আর এগোনোর উপায় নেই। কোনও আলো নেই। নেই জলও। পুরনো চৌকাঠের সঙ্গে কোনওরকমে লেগে রয়েছে ভাঙা দরজা। শিলিগুড়ি হিন্দি হাইস্কুল (গার্লস)-এর শৌচাগারের অবস্থা এমনই। ছাত্রীরা বলছে শৌচাগারের ভিতরে গেলে বমি পায় তাদের। বাধ্য হয়ে অনেকে প্রস্রাব পেলেও চেপে রাখে।

Advertisement

কিন্তু কেন এমন অবস্থা? হাইস্কুল কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, সাফাইকর্মী কম থাকায় শৌচাগার পরিচ্ছন্ন রাখতে সমস্যা হয়। একই ভবনে চলে প্রাথমিক ও হাইস্কুল। সকালে হয় হাইস্কুলের ক্লাস আর প্রাথমিক স্কুল শুরু হয় বেলা ১১টা থেকে। প্রাথমিক স্কুলের কোনও সাফাই কর্মী নেই। তাদের ৬০০ ছাত্রছাত্রী শৌচাগার ব্যবহার করে। হাই স্কুলের ১৮৪৯ জন ছাত্রী। তাদের দু’জন সাফাই কর্মী রয়েছেন। একজন সকালে হাইস্কুল শুরুর সময় সাফাই করেন। আর একজন বিকেলে প্রাথমিক স্কুলের ছুটি হলে সাফসুতরো করেন। অভিযোগ, মাঝেমধ্যেই তাঁরা আসেন না। ফলে ধাক্কা খায় সাফাই।

হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষিকা সীতা রাউত বলেন, ‘‘প্রধান শিক্ষিকা হিসাবে কিছু দিন আগেই দায়িত্ব নিয়েছি। তবে এই স্কুলে অনেকদিন আছি। চার-পাঁচ হাজার টাকা করে যা স্কুলের তহবিল থেকে দেওয়া হয় তাতে সাফাই কর্মীরা কাজ করতে চান না। বেশি টাকা দেওয়াও সম্ভব নয়। প্রাথমিক স্কুলের সাফাই কর্মী নেই। সবটাই আমাদের সামলাতে হয়।’’ তবে প্রাথমিক স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, তারা ফিনাইল, ব্লিচিং দিয়ে সাহায্য করেন।

Advertisement

সমস্যা রয়েছে স্কুলের শৌচাগারগুলোয় জলের সরবরাহ নিয়েও। তিনতলা স্কুল ভবনের নীচের তলায় একদিকে পাঁচটা আর একদিকে তিনটি শৌচালয় রয়েছে। যেদিকে তিনটি শৌচালয় তা প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা ব্যবহার করেন। বাকিগুলো ছাত্রছাত্রীদের ব্যবহারের জন্য। স্কুলের দোতলায় ৩টি শৌচাগার রয়েছে। নীচতলার শৌচালয়গুলোয় পাম্প চালিয়ে জল সরবরাহ করা গেলেও দোতলা, তিনতলায় সেই ব্যবস্থা নেই। ফলে তা ব্যবহার করতে সমস্যা হয় বলে অভিযোগ। বছর আটেক আগে তিনতলার শৌচাগারগুলো সংস্কার করা হয়। কিন্তু ভবনের ওই অংশ জীর্ণ এবং বিপজ্জনক হওয়ায় কেউ যান না।

হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষিকা জানান, তাদের ১৮ জন শিক্ষিকা, দু’জন মহিলা শিক্ষাকর্মী রয়েছেন। তাঁদের জন্য টিচার্স রুমে একটিমাত্র ছোট শৌচালয় রয়েছে। একজন শৌচালয়ে গেলে অন্যদের অপেক্ষা করতে হয়। এই বিষয়ে স্কুল পরিদর্শক তপন কুমার বসু বলেন, ‘‘শৌচাগার সাফাইয়ের বিষয়টি স্কুলকর্তৃপক্ষকেই দেখতে হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন