তদন্ত সিবিআই-কে দেওয়া নিয়ে প্রশ্ন

সিসিটিভি-র ফুটেজ দেখেই চিহ্নিত করা গিয়েছিল অভিযুক্তদের। তদন্ত শুরু করেছিল রাজ্য পুলিশ এবং সিআইডি। তার পরে হঠাৎ রানাঘাট-কাণ্ডের তদন্তভার সিবিআই-কে দেওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলল শিলিগুড়ি ইউনাইটেড খ্রিস্টান ফোরাম। শুক্রবার এ নিয়ে রাজ্যের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন ফোরামের একাধিক সদস্য।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২১ মার্চ ২০১৫ ০২:৫০
Share:

খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের সংগঠনের সাংবাদিক বৈঠক। —নিজস্ব চিত্র।

সিসিটিভি-র ফুটেজ দেখেই চিহ্নিত করা গিয়েছিল অভিযুক্তদের। তদন্ত শুরু করেছিল রাজ্য পুলিশ এবং সিআইডি। তার পরে হঠাৎ রানাঘাট-কাণ্ডের তদন্তভার সিবিআই-কে দেওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলল শিলিগুড়ি ইউনাইটেড খ্রিস্টান ফোরাম। শুক্রবার এ নিয়ে রাজ্যের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন ফোরামের একাধিক সদস্য।

Advertisement

এ দিন দুপুরে শিলিগুড়িতে সাংবাদিক বৈঠক করেন ফোরামের সদস্যেরা। সেখানেই তাঁরা অভিযোগ করেন, “এ রাজ্যেও খ্রিস্টানদের অবস্থা ভাল নেই। অত্যাচার দিনের পর দিন বাড়ছে। রানাঘাটে যা হল তা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। কিন্তু আমরা দেখলাম, পুলিশ তদন্ত শুরু করলেও অভিযুক্তেরা ধরা পড়ল না। এর পরে সিবিআইয়ের হাতে তদন্তভার দিয়ে দেওয়া হল। এতে কাজের কাজ আদতে হবে না বলেই মনে হচ্ছে।”

তাঁদের এমন ধারণার কারণ ব্যাখা করতে গিয়ে ফোরামের সম্পাদক আশিস বিশ্বাস বলেন, “আমাদের মনে হয়, সিবিআই সমস্ত কিছু গুছিয়ে নিয়ে ধীরে ধীরে তদন্তের জাল গুটিয়ে আনবে। আর তত দিনে অভিযুক্তরা তো পালাবেই, তথ্যপ্রমাণও লোপাট হয়ে যেতে পারে। তার চেয়ে রাজ্য পুলিশ বা সিআইডি-কে কড়া হাতে তদন্ত চালানোর কথা বলার দরকার ছিল। এই মামলায় সিবিআই কী করবে তা আমাদের কাছে স্পষ্ট নয়।” তিনি জানান, সোমবার শহরে মৌন মিছিলের কর্মসূচি নিয়েছেন তাঁরা। সেখান থেকেই মুখ্যমন্ত্রীকে স্মারকলিপি পাঠাবেন তাঁরা।

Advertisement

শিলিগুড়ি মহকুমার বির্স্তীণ চা বাগিচা বলয় ছাড়াও বিভিন্ন স্কুল, গির্জার প্রতিনিধিরা এই খ্রিস্টান ফোরামের সদস্য। ফোরামের দাবি, মহকুমার অন্তত ১৩৪টি গির্জার প্রতিনিধিরা তাঁদের সংগঠনের সঙ্গে জড়িত রয়েছেন।

আজ, শনিবার প্রধাননগরের সেবাকেন্দ্রে খ্রিস্টান সমাজের একটি বৈঠকও ডাকা হয়েছে। সেখান থেকে আগামী দিনের কর্মসূচি এবং মৌন মিছিলের প্রস্তুতি ঠিক করা হবে। সংগঠনের আরেক সদস্য বীণা সামাদ বলেন, “আমরাও আতঙ্কিত বোধ করছি। খ্রিস্টান সমাজের উপর যে আক্রমণ নেমে আসছে তাতে রাজ্যে আমাদের নিরাপত্তা সুরক্ষিত নেই বলে মনে হচ্ছে। পুলিশ-প্রশাসন বা সরকারের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা উচিৎ।”

ফোরামের অনেক সদস্যের অভিযোগ, ১৩ মার্চ ওই জঘন্য, বর্বর ঘটনার পরে পুলিশ-প্রশাসন ও সরকারের আশ্বাস সত্ত্বেও ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দোষীদের গ্রেফতার করা যায়নি। শুধু রানাঘাট নয়, বীরভূম, পার্কস্ট্রিট-সহ সর্বত্র সংখ্যালঘু মহিলাদের উপরে অত্যাচার হয়েছে। সেখানেও রাজ্য প্রশাসনকে কার্যকর ভূমিকা নিতে দেখা যায়নি।

রানাঘাটের ঘটনার প্রতিবাদে ২৩ মার্চ দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ প্রধানগরের সেন্ট মেরিস চার্চ এলাকা থেকে মৌন মিছিলের ডাক দিয়েছেন তাঁরা। শুধুমাত্র খ্রিস্টান সম্প্রদায় নয়, বিভিন্ন ধর্মালম্বী, জনজাতির প্রতিনিধিদের তাতে সামিল হওয়ার জন্য ফোরামের তরফে আবেদন জানানো হয়েছে। ফোরামের সহ-সভাপতি এনস সিমিক বলেন, “একটি মৌন প্রতিবাদ মিছিল হবে। আমাদের আশা, অন্তত পাঁচ হাজার মানুষ তাতে সামিল হবেন। বাঘাযতীন পার্ক পর্যন্ত মিছিলটি যাবে। নির্বাচনী বিধি কার্যকর হয়ে যাওয়ায় আমরা কোনও সভা করছি না। তবে মহকুমাশাসকের মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রীকে স্মারকলিপি পাঠানো হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন