শিক্ষাকর্মীর মৃত্যু, চিরকুটে পরামর্শ

এক শিক্ষাকর্মীর অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘিরে রহস্য দানা বেঁধেছে। মঙ্গলবার সকালে রায়গঞ্জ শহরের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর শক্তিনগরর এলাকার একটি মাঠ থেকে তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ১৯ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৫:০১
Share:

মৃত বিকাশ দত্ত। নিজস্ব চিত্র

এক শিক্ষাকর্মীর অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘিরে রহস্য দানা বেঁধেছে। মঙ্গলবার সকালে রায়গঞ্জ শহরের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর শক্তিনগর এলাকার একটি মাঠ থেকে তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। বাড়ি থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে ওই মাঠে তাঁর মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম বিকাশ দত্ত (৫৫)। তাঁর বাড়ি শহরের ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের কুমারডাঙ্গিতে। তিনি রায়গঞ্জ সুরেন্দ্রনাথ কলেজে করণিকের পদে কর্মরত।

Advertisement

মৃতের প্যান্টের পকেটে একটি মানিব্যাগ থেকে দু’টি ডেবিট কার্ড ও একটি চিরকুট পেয়েছে পুলিশ। সেই চিরকুটে বিকাশ তাঁর স্ত্রী-ছেলেমেয়েদের ভাল থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। কয়েকদিন পর ছেলের বেড়াতে যাওয়ার কথা ছিল। সেইজন্য পাঁচ হাজার টাকা রাখা আছে বলে ওই চিরকুটে লিখেও গিয়েছেন তিনি। তবে চিরকুটের লেখা তাঁরই হাতের কি না, তা পুলিশ খতিয়ে দেখছে।
বিকাশের স্ত্রী দীপ্তিদেবী গৃহবধূ। তাঁদের এক ছেলে গোরাচাঁদ একাদশ শ্রেণির ছাত্র। মেয়ে দীপান্বিতা বাবার কলেজেই প্রথম বর্ষের ছাত্রী। গত সোমবার থেকে কলেজে ছাত্র সংসদের উদ্যোগে তিনদিনের বার্ষিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শুরু হয়েছে। পরিচিতদের সূত্রের খবর, সোমবার বিকেল ৪টে নাগাদ বিকাশবাবু কলেজ থেকে বাড়িতে ফেরেন।

আধঘণ্টা পর মেয়েকে টিউশন পড়তে যাওয়ার জন্য টোটোয় তুলে দেন। এরপর বাড়িতে বাইক ও মোবাইল রেখে বেরিয়ে যান তিনি। তারপর থেকেই তিনি নিখোঁজ। পরিবারের লোকেরা রাতভর খোজাখুঁজি করেও তাঁর হদিশ পাননি। এ দিন সকালে পুলিশের কাছ থেকে তাঁর মৃতদেহ উদ্ধারের খবর পান বাড়ির লোকজন।
এই অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘিরে তদন্তকারীদের মধ্যে একাধিক প্রশ্ন উঠেছে। তিনি আত্মহত্যা করেছেন, না কি তাঁকে খুন করা হয়েছে তা নিয়ে ধন্দে পুলিশ। কারণ, বিকাশবাবু আত্মহত্যা করেছেন, এমন কোনও প্রমাণ বা সূত্র মেলেনি। দ্বিতীয়ত, বাড়ি থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে ওই নির্জন এলাকায় গিয়ে তিনি কেন আত্মহত্যা করবেন, তা নিয়েও ধোঁয়াশা রয়েছে। মৃতের শরীরে আঘাতেরও কোনও চিহ্ন মেলেনি। তাঁকে শ্বাসরোধ করে বা মাদকজাতীয় কোনও ওষুধ খাইয়ে খুন করা হয়েছে কি না, পুলিশ খতিয়ে দেখছে।
এ দিন রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে বিকাশের মৃতদেহ ময়নাতদন্ত হয়েছে। উত্তর দিনাজপুরের পুলিশ সুপার সুমিত কুমারের বক্তব্য, ‘‘মৃতের পরিবারের তরফে পুলিশের কাছে কোনও অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। ওই ব্যক্তির কীভাবে মৃত্যু হল, তা জানতে পুলিশ সমস্ত সম্ভাবনা মাথায় রেখে তদন্ত শুরু করেছে।’’

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন