বাজার: আনাজের দাম কমেনি। নিজস্ব চিত্র
অক্টোবর মাস শেষ হতে চলল। শীতের আনাজ একটি দু’টি করে বাজারে উঠতেও শুরু করেছে। তাতেও দাম কমছে না আনাজের। কোচবিহারের সব থেকে বড় বাজার ভবানীগঞ্জ বাজার থেকে শুরু করে গ্রামের ছোট বাজারগুলিতেও আকাশছোঁয়া আনাজের দামে নাভিশ্বাস উঠেছে ক্রেতাদের। কারও থলের তলানিতে পড়ে থাকছে আনাজ। কেউ আবার আনাজের বদলে মাছ নিয়ে বাড়ি ফিরছেন। কারও কারও ঝোঁক বেড়েছে ডিমে। এক ক্রেতা গৌতম দত্তের কথায়, “আনাজ কিনতে এখন অনেক যা খরচ দাঁড়ায় তাতে মাছের ঝোল ভাত দিয়ে চালিয়ে দেওয়াই শ্রেয়। কয়েক দিন পর আবার আনাজে ফেরা যাবে।”
অনেকেরই আবার আনাজ না থাকলে ভাতে রুচি আসে না। তাঁদেরই একজন সঞ্জয় রায় বলেন, “কী আর করব বলুন। পরিমাণে কমিয়ে দিয়েছে। তবু রোজই রাখছি।”
একবার দেখে নেওয়া যাক, খুচরো বাজারে কেজি প্রতি আনাজের দাম। ফুলকপি ১০০ টাকা, বাঁধাকপি ৬০ টাকা, বেগুন ৭০-৮০ টাকা, পটল, ঝিঙে, ৪০ টাকা, একটি লাউ ৩৫ টাকা থেকে ৪০ টাকা, করলা ৩০ টাকা, পেঁয়াজ ৪০ টাকা, কাঁচা লঙ্কা ৮০ থেকে ১০০ টাকা, মূলো-৮০ টাকা, স্কোয়াশ ৩০ টাকা, শশা ৪০ টাকা, টোম্যাটো ৮০ থেকে ১০০ টাকা, ক্যাপসিকাম ২০০ টাকা।
সেখানে পেঁপে ও আলুর দাম তুলনায় কিছুটা কম। পেঁপে ২০ টাকা ও আলু ১২ থেকে ১৪ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
শাকের দামও প্রচুর। পালং শাকের একটি ছোট আঁটি ৫ টাকা। কোচবিহার জেলা ব্যবসায়ী সমিতির সমিতির সম্পাদক চাঁদমোহন সাহা বলেন, “অসময়ে বৃষ্টির জন্য কিছু ফলন নষ্ট হয়েছে। ফসল তুলতে পারেননি কৃষকরা।”
ফোসিনের সদস্য তথা দিনহাটা মহকুমা ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক রানা গোস্বামী বলেন, “শীতের আগুরি ফসল এখনও সে ভাবে উঠতে পারেনি। বিশেষ করে বৃষ্টির জন্যে ফসল কিছু নষ্ট হয়েছে। ফলন পিছিয়ে গিয়েছে। আশা করা যাচ্ছে দুই সপ্তাহের মধ্যে আনাজের দাম কমে যাবে।”
সেই সঙ্গে রানাবাবু জানান, এ বারে বন্যা ও বৃষ্টির কারণে বাইরে থেকে যে আনাজ জেলায় আসে তার পরিমাণ কম। সেটাও দাম বাড়ার পিছনে একটি বড় কারণ।
তিনি কোচবিহারে একটি বহুমুখী হিমঘর স্থাপনের প্রয়োজনীয়তার কথা জানান। খুচরো আনাজ ব্যবসায়ী বিষ্ণু পাল বলেন, “পাইকারি বাজারে আনাজের দাম আচমকা বেড়ে যায়। স্বাভাবিক ভাবেই আমাদেরও বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।” উদ্যানপালন দফতরের কোচবিহার জেলা আধিকারিক খুরশিদ আলম বলেন, “বন্যার কারণে এ বারে অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। চাষ পিছিয়ে গিয়েছে। তাই দাম এখনও বেশি। আশা করছি দিন কয়েকের মধ্যে তা কমতে শুরু করবে।”