উপাচার্য পাঁচ ঘণ্টা ঘেরাও গৌড়বঙ্গে

বিএডের ফি কমানোর দাবিতে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে পাঁচ ঘণ্টা ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখাল পড়ুয়ারা। বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে বচসায় জড়িয়ে পড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সদস্যরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মালদহ শেষ আপডেট: ১৭ জুন ২০১৬ ০৮:২৮
Share:

ঘেরাও উপাচার্য। — নিজস্ব চিত্র

বিএডের ফি কমানোর দাবিতে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে পাঁচ ঘণ্টা ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখাল পড়ুয়ারা। বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে বচসায় জড়িয়ে পড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সদস্যরা। বৃহস্পতিবার তৃণমূল ছাত্র পরিষদ এবং বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষে উত্তাল হয়ে ওঠে মালদহের গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর।

Advertisement

এ দিনের এই সংঘর্ষের জেরে এক মহিলা সহ চারজন বিক্ষোভকারী অসুস্থ হয়ে পড়েন। প্রত্যেককেই প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয় মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকা বিএড কলেজ গুলি নিজেদের খেয়ালখুশি মতো ভর্তি ফি নিচ্ছে। এ দিন ভর্তির ফি কমানোর দাবিতে তাঁরা উপাচার্যের ঘরের সামনে বসেছিলেন। সেই সময় তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতারা তাঁদের উপর হামলা চালায়।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে পাল্টা বিক্ষোভকারীদের উপরে দায় চাপিয়েছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিটের সভাপতি আক্রাম আলি বলেন, ‘‘বিক্ষোভকারীরাই এমন ঘটনা ঘটিয়েছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। এখানে আমাদের কোনও ভুমিকা নেই।’’

Advertisement

গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য গোপাল মিশ্র বলেন, ‘‘সামান্য একটা গোলমাল হয়েছে। পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যায়। আর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে কি হয়েছে তা আমি বলতে পারব না।’’

গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে মালদহ সহ দুই দিনাজপুর নিয়ে মোট ৩৯টি বিএড কলেজ রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মানুযায়ী বিএডে ভর্তির ক্ষেত্রে সরকারি নিয়ম বেঁধে দেওয়া হয়েছে। দু’ বছরের মধ্যে ছাত্র ছাত্রীদের ১ লক্ষ ৪৫ হাজার টাকা করে দিতে হবে। অভিযোগ, কিছু কলেজ কর্তৃপক্ষ নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে নিজেদের খেয়াল খুশি মতো ভর্তি নেয়। তা নিয়ে পড়ুয়াদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়। ভর্তির ফি কমানো এবং সমস্ত কলেজে এক ফি নেওয়ার দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে একাধিকবার আবেদন করেন তাঁরা।

এ দিন তিন জেলার প্রায় পাঁচ শতাধিক পড়ুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে জড়ো হন। দুপুর ১২টা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য গোপালবাবুকে ঘরে আটকে রাখেন তাঁরা। উপাচার্যের ঘরের সামনে বিক্ষোভ শুরু হয়। এরপরই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংগঠনের সদস্যরা বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলতে আসে। তারপরেই পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। তৃণমূল ছাত্র পরিষদ ও বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে বাঁশ, ইঁট নিয়ে সংঘর্ষ শুরু হয়ে যায়। এই ঘটনায় অসুস্থ হয়ে পড়ে।

এ দিনের ঘটনায় বিএড কলেজের মালিকদেরকেই দায়ী করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ১০ মার্চ বিএড কলেজ গুলির মালিকদের ডাকা হয়েছিল। তবে সেই বৈঠকে কেউ হাজির হননি। তাই আগামী ২১ জুন ভর্তির ফি নিয়ে ফের মালিকদেরকে বৈঠকে ডাকা হয়েছে। সেই বৈঠকে হাজির না হলে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য গোপাল মিশ্র। তিনি বলেন, ‘‘বৈঠকে কেউ হাজির না হলে আমরা কড়া পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন