কালিয়াগঞ্জে বিজয় মিছিলে দীপা দাশমুন্সি। গৌর আচার্যের তোলা ছবি।
কালিয়াগঞ্জে শাসকদলকে শূন্যহাতে ফিরিয়ে দেওয়া। ইসলামপুরে ১৭টি আসনের মধ্যে ১০টিই নিজেদের দখলে রাখা। এই জোড়া সাফল্যের উচ্ছ্বাসেই আজ কালিয়াগঞ্জের পথে বিজয় উৎসব করল কংগ্রেস। মিছিলে যোগ দিয়ে রায়গঞ্জের প্রাক্তন সাংসদ দীপা দাশমুন্সি দাবি করলেন, ‘‘পুরসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূল কংগ্রেস সন্ত্রাসের পরিবেশ তৈরি করে নানা প্রতিকূলতা সৃষ্টি করলেও কালিয়াগঞ্জের শান্তিপ্রিয় সাধারণ মানুষ কংগ্রেসের পাশে রয়েছেন। বিজয় মিছিলে শহরের সাধারণ মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত যোগদান একথাই ফের প্রমাণ করল।’’
এদিন বিকাল সাড়ে ৪টা নাগাদ দীপাদেবীর নেতৃত্বে কালিয়াগঞ্জের গণেশ টকিজ মোড় থেকে বিজয় মিছিল শুরু হয়। শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ড সহ উত্তর দিনাজপুরের জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে কংগ্রেসের কয়েক হাজার নেতা, কর্মী ও সমর্থক বিজয় মিছিলে সামিল হন। দীপাদেবী ছাড়াও ওই মিছিলের পুরোভাগে ছিলেন জেলা কংগ্রেস সভাপতি তথা রায়গঞ্জের বিধায়ক মোহিত সেনগুপ্ত, কালিয়াগঞ্জ ও ইসলামপুর পুরসভায় দলের সম্ভাব্য চেয়ারম্যান অরুণ দে সরকার ও কানাইয়ালাল অগ্রবাল, এবং কালিয়াগঞ্জের কংগ্রেস বিধায়ক প্রমথনাথ রায় সহ কালিয়াগঞ্জ ও ইসলামপুরের সদ্যজয়ী ২৫ জন কংগ্রেস কাউন্সিলর।
গণেশ টকিজ মোড় থেকে শুরু হয়ে সুকান্তমোড়, গুদরিবাজার, কুনোরমোড়, শিমুলতলা, হাসপাতালমোড়, বিবেকানন্দমোড়, ডাকবাংলোরোড, মহেন্দ্রগঞ্জ হয়ে নাটমন্দির এলাকায় গিয়ে মিছিল শেষ হয়। ছ’ কিলোমিটার দীর্ঘ রাস্তায় কখনও বাসিন্দাদের উদ্দেশ্যে হাত নাড়িয়ে, কখনও হাতজোড় করে কৃতজ্ঞতা জানান দীপাদেবী। মিছিলে হাঁটতেই হাঁটতেই দীপা দেবী বলেন, ‘‘নির্বাচনের আগে তৃণমূল কংগ্রেস ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে বাসিন্দাদের হুমকি দিয়ে সন্ত্রাসের পরিবেশ সৃষ্টি করে ও নানা প্রলোভন দেখিয়ে পুরসভা দখলের চেষ্টা করেছিল। এত প্রতিকূলতা সত্বেও শহরের সাধারণ মানুষ গত দু’ দশকের ধারাবাহিক উন্নয়নের স্বার্থে কংগ্রেসকে দু’হাত ভরে ভোট দিয়েছেন।
কর্মী-সমর্থকদের চাপে মিছিল চলাকালীন বিভিন্ন এলাকায় বিশৃঙ্খলা রুখতে দীপাদেবীকে মিছিল সামলাতেও দেখা যায়। ওই মিছিলকে কেন্দ্র করে শহরে যাতে কোনও গোলমাল না হয়, তারজন্য গোটা শহর জুড়ে বিরাট পুলিশবাহিনী ও কমব্যাট ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছিল। মিছিলে নজরদারির দায়িত্বে ছিলেন রায়গঞ্জের ডিএসপি নারায়ণ মজুমদার ও কালিয়াগঞ্জ থানার আইসি শ্রীমন্ত বন্দ্যোপাধ্যায়।
কংগ্রেসের ওই বিজয় মিছিলকে অবশ্য কটাক্ষ করতে ছাড়েননি জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা রাজ্যের মৎস্য বিষয়ক পরিষদীয় সচিব অমল আচার্য। তিনি বলেন, ‘‘তৃণমূলকে ঠেকাতে কংগ্রেস, বিরোধীদের সঙ্গে গোপনে বোঝাপড়া করে রামধনু জোট করে পুরসভা দখল করেছে। বিভিন্ন দলের প্রার্থীদের প্রাপ্ত ভোটের হিসেবেই তা স্পষ্ট হয়েছে।’’
কালিয়াগঞ্জ পুরসভার ১৭টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৫টি ওয়ার্ড দখল করে পঞ্চমবারের জন্য ক্ষমতা দখল করেছে কংগ্রেস। বিজেপি ও সিপিএম একটি করে ওয়ার্ডে জয়ী হয়। অন্যদিকে ইসলামপুর পুরসভার ১৭ টি আসনের মধ্যে ১০টিতে জয়ী হয় কংগ্রেস। তিনটি করে আসন পেয়েছে তৃণমূল ও বিজেপি। একটি আসনে জয়ী হয়েছেন নির্দল প্রার্থী।