জলের পাম্প অকেজো, ভুগছেন প্রায় পঞ্চাশ হাজার

জল তোলার দু’টি পাম্পের মধ্যে একটি পাম্প গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে অকেজো হয়ে রয়েছে। অন্য পাম্পটি দিয়ে কোনও রকমে কাজ চলছিল। কিন্তু তিন দিন আগে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের দ্বিতীয় পাম্পটিও বিকল হয়ে পড়ায় প্রবল জলকষ্টে ভুগছেন মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের তুলসিহাটা এলাকার ৫০ হাজারেরও বেশি বাসিন্দা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

চাঁচল শেষ আপডেট: ২৬ জুন ২০১৬ ০৭:২৯
Share:

জল তোলার দু’টি পাম্পের মধ্যে একটি পাম্প গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে অকেজো হয়ে রয়েছে। অন্য পাম্পটি দিয়ে কোনও রকমে কাজ চলছিল। কিন্তু তিন দিন আগে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের দ্বিতীয় পাম্পটিও বিকল হয়ে পড়ায় প্রবল জলকষ্টে ভুগছেন মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের তুলসিহাটা এলাকার ৫০ হাজারেরও বেশি বাসিন্দা। প্রথম পাম্পটি বিকল হওয়ার পর পিএইচই দফতরে একাধিক বার আবেদন নিবেদন জানিয়েছিলেন বাসিন্দারা। কিন্তু কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা না নেওয়ায় ক্ষুব্ধ তাঁরা। দু’টি পাম্পেরই ফিল্টার ফেটে গিয়ে সমস্যা তৈরি হয়েছে। একটি নতুন পাম্প বসিয়ে দ্রুত যাতে সমস্যা মেটে, সেই চেষ্টা চলছে বলে জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতরের চাঁচলের সহকারী বাস্তুকার তরুব্রত রায় বলেন, ‘‘নতুন একটি পাম্প বসানোর কাজ শুরু হয়েছে। আশা করছি দ্রুত সমস্যা মিটে যাবে।’’

Advertisement

পিএইচই দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, তুলসিহাটার বাসিন্দা, প্রয়াত কৃষি বিপণন মন্ত্রী বীরেন্দ্রকুমার মৈত্রের উদ্যোগে ২০০২ সালে তুলসিহাটায় প্রকল্পটি গড়ে ওঠে। বীরেন্দ্রকুমার উপবাজার চত্বরে প্রথমে একটি পাম্প বসানো হয়। কিন্তু বিস্তীর্ণ এলাকায় একটি পাম্পে সমস্যা না মেটায় পরে গ্রন্থাগারের সামনে দ্বিতীয় একটি পাম্প বসানো হয়। কিন্তু এক বছর আগে ফিল্টার বার্স্ট করে গ্রন্থাগারের পাম্পটি বিকল হয়ে পড়ে। তার পর থেকে একটি পাম্প দিয়েই পরিস্থিতি সামাল দেওয়া হচ্ছিল। কিন্তু তিন দিন আগে উপবাজারের পাম্পটিও একই ভাবে ফিল্টার ফেটে বিকল হয়ে পড়েছে। এখন জলের বদলে ওই পাম্প দিয়ে শুধু বালি উঠে আসছে বলে দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে।

কিন্তু একটি পাম্প বছরখানেক আগে বিকল হয়ে পড়লেও কেন তা সংস্কার করা হয়নি তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। দফতর সূত্রে অবশ্য দাবি করা হয়েছে যে, প্রথম পাম্পটি বিকল হওয়ার পরেই নতুন পাম্পের জন্য টাকা চেয়ে বিস্তারিত রিপোর্ট পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু বরাদ্দ না মেলায় কাজ করা হয়নি।

Advertisement

তুলসিহাটা ছাড়াও ওই প্রকল্প থেকে উত্তর ও দক্ষিণ কস্তুরিয়া, ভবানীপুর, কামার্তা, সালালপুর, রাড়িয়াল, মহেন্দ্রপুর, বনসরিয়া, তিলডাঙ্গি, বাংরুয়া এলাকায় জল সরবরাহ করা হয়। ফলে এলাকাগুলির ৫০ হাজারেরও বেশি বাসিন্দা ভুগতে শুরু করেছেন। এর মধ্যে বাংরুয়া এলাকায় আবার গত মাস দুয়েক ধরে সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। নির্বাচনের কিছু দিন আগে রাস্তার কাজ করতে গিয়ে সেখানে পাইপলাইন ফেটে গিয়ে সরবরাহ ব্যাহত হয়ে পড়লেও দফতরের কোনও হেলদোল নেই বলে অভিযোগ উঠেছে। বাংরুয়া এলাকায় নতুন পাইপলাইন বসানোর জন্য পরিকল্পনা তৈরি করে প্রস্তাব পাঠানো হলেও বরাদ্দ না মেলায় তা করা যায়নি বলে দাবি করা হয়েছে।

বাসিন্দাদের অভিযোগ, শুধু এ বারই নয়। গত এক বছরে দ্বিতীয় পাম্পটিও মাঝেমধ্যে অকোজে হয়ে থাকায় বাসিন্দাদের সমস্যায় পড়তে হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা তথা হরিশ্চন্দ্রপুর ১ ব্লক তৃণমূলের সহ সভাপতি রুহুল আমিন বলেন, ‘‘একে গরম। পাশাপাশি রমজান মাস চলছে। এলাকায় পানীয় জলের বিকল্প নেই বললেই চলে। ফলে বাসিন্দাদের নাভিশ্বাস উঠেছে।’’ পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন কংগ্রেস সদস্য বিনোদ গুপ্ত বলেন, ‘‘আপাতত একটিই পাম্প সংস্কার করা হচ্ছে। কিন্তু তাতে সমস্যা মিটবে না। দু’টো পাম্প সংস্কার করা না হলে এ বার আন্দোলনে নামব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন