মুখ্যসচিবের পুরনো পাড়াতেও ছ’মাস ধরে জল আসে না কলে

মাস পেরিয়ে চালু হল মিড-ডে মিল

এই স্কুলেই পড়তেন রাজ্যের বর্তমান মুখ্যসচিব মলয়কুমার দে। সেখানে প্রায় ছ’মাস ধরে খারাপ হয়ে রয়েছে নলকূপ।

Advertisement

বিল্টু সুত্রধর

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ২৪ জানুয়ারি ২০১৯ ০৬:২১
Share:

খুশি: মিড-ডে মিলের ডিম পরখ করে দেখছে খুদেরা। নিজস্ব চিত্র

স্কুল চত্বরে এসে উনুনের ধোঁয়া দেখে চোখ গোলগোল করে তাকিয়েছিল মৌসুমি। পাশে দাঁড়ানো স্নেহাকে খোঁচা মেরে বলল, ‘‘দেখলি? রান্না হচ্ছে তাই না?’’ তাকিয়ে ছিল স্নেহাও। খোঁচা খেয়ে বলল, ‘‘মনে তো হচ্ছে তাই।’’ দুই খুদের মুখে তখন উপচে পড়ছে হাসি। বুধবার সেই হাসি দেখা গিয়েছে জলপাইগুড়ির মোহিতনগর আরআর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সব পড়ুয়ার মুখেই। কারণ একমাস বন্ধ থাকার পরে প্রশাসনের নির্দেশে বুধবার থেকে স্কুলে চালু হল মিড-ডে মিল।

Advertisement

এই স্কুলেই পড়তেন রাজ্যের বর্তমান মুখ্যসচিব মলয়কুমার দে। সেখানে প্রায় ছ’মাস ধরে খারাপ হয়ে রয়েছে নলকূপ। প্রবল জলকষ্টের জন্য একমাস ধরে মিড-ডে মিল হচ্ছিল না স্কুলে। কমে যাচ্ছিল পড়ুয়ার সংখ্যাও। সেই সংক্রান্ত খবর জানাজানি হয় মঙ্গলবার।

তারপরেই নড়েচড়ে বসে জেলাশাসকের দফতর। বুধবার সকালেই স্কুলে চলে আসেন সহকারি বিদ্যালয় পরিদর্শকের দফতরের আধিকারিকরা। তাঁরা বসে থেকে মিড-ডে মিল রান্না করালেন স্কুলে। পাশের স্কুল থেকে বালতি করে নিয়ে আসা হল জল। বুধবার সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে স্কুলে ছুটি থাকলেও অনুষ্ঠান হয়। এমন দিনে স্কুলে মিড-ডে মিল না হওয়াই দস্তুর। সেই প্রথা

Advertisement

ভাঙল বুধবার। জলপাইগুড়ির জেলাশাসক শিল্পা গৌরীসারিয়া বলেন, “স্কুলের নলকূপও দ্রুত মেরামত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”

মাস ছয়েক ধরে জলপাইগুড়ি শহর লাগোয়া মোহিতনগর আরআর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পানীয় জলের নলকূপ খারাপ হয়ে রয়েছে বলে অভিযোগ। বারবার প্রশাসনকে জানিয়ে কোনও লাভ হয়নি বলেও দাবি স্থানীয়দের। জল না থাকায় বন্ধ হয়ে যায় মিড-ডে মিলের রান্না। এ দিন থেকে ফের স্কুলে রান্না শুরু হওয়ায় শিক্ষক থেকে অভিভাবক খুশি সকলেই।

বুধবার স্কুলে ৩০ জন পড়ুয়া আসে। পাশে থাকা মোহিতনগর তারাপ্রসাদ হাই স্কুল থেকে স্বর্নিভর গোষ্ঠীর সদস্যরা এসে মিড-ডে মিল রান্না চালু করেন। ডিমের ঝোল ও ভাত রান্না হয়। এত দিন পরে স্কুলে মিড-ডে মিল হচ্ছে, সেই আনন্দে শিক্ষকরাও এ দিন পড়ুয়াদের সঙ্গে

মিড-ডে মিল খেয়েছেন।

প্রধান শিক্ষক দেবাশিস গুহ নিয়োগী বলেন, ‘‘এলাকার বহু গরিব পরিবারের ছেলেমেরা স্কুলে আসে। মিড-ডে মিল চালু হয়ে খুব ভাল হল।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন