বরযাত্রী বোঝাই একটি গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছে ধাক্কা মারলে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়েছে চালকের। চার কিশোর সহ আহত হয়েছেন আরও ১৮ জন। শনিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে মালদহের হবিবপুরের বেগুনবাড়ি এলাকায়। বরযাত্রী বোঝাই গাড়ি দুর্ঘটনার কবলে পড়ায় দুই পরিবারের মধ্যে শোরগোল পড়ে যায়। যদিও রাতেই বিবাহ সম্পন্ন হয়েছে বলে পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে। মৃতের নাম বাপন মহলদার (২৭)। তিনি পেশায় গাড়ির চালক। বাপন হবিবপুরের ঋষিপুরের বসুনগর গ্রামের বাসিন্দা। আহতেরা চিকিৎসাধীন মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। তিন জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই করার ফলেই দূর্ঘটনা। মালদহের পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘দুর্ঘটনায় গাড়ির চালকের মৃত্যু হয়েছে। কয়েক জন আহত হয়েছেন। আর রাতে অতিরিক্ত যাত্রী বহনের উপরে বাড়তি নজরদারি চালানো হবে।’’
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, হবিবপুরের শ্রীরামপুরের বাসিন্দা প্রদীপ বেসরার সঙ্গে বিয়ে ঠিক হয় ওই থানারই কেন্দপুকুরের রাজারামপুর গ্রামের বাসিন্দা সুনীল মার্ডির মেয়ের। শনিবার রাতে কেন্দপুকুরের রাজারামপুর গ্রামে বিয়ে আসর বসেছিল। তিনটি গাড়িতে করে আত্মীয় স্বজনদের নিয়ে বিয়ে করতে যান প্রদীপবাবু। দু’টি গাড়ি সময় মতো পৌঁছে গেলেও দুর্ঘটনার কবলে পড়ে বরযাত্রী বোঝাই গাড়িটি। বেগুনবাড়ি এলাকায় মালদহ-নালাগোলা রাজ্য সড়কের ধারে থাকা একটি গাছে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ধাক্কা দিলে গাড়িটি উল্টে যায়।
স্থানীয় বাসিন্দারা আহতদের উদ্ধার করে প্রথমে নিয়ে যান বুলবুলচণ্ডী আর এন রায় গ্রামীণ হাসপাতালে। আহতদের মধ্যে সোম মুর্মু, সুমিত মুর্মু, খগেন মার্ডি, উৎপল হাঁসদা নামে চার কিশোরের আঘাত গুরুতর। এ ছাড়া আরও চার জনের আঘাত গুরুতর থাকায় রাতেই তাঁদের স্থানান্তরিত করা হয় মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। গাড়িটি থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
এই ঘটনায় বিয়েতে বিঘ্ন ঘটে। যদিও পরে সম্পন্ন হয় বিয়ে। পাত্রের কাকা অবিনাস বেসরা বলেন, ‘‘দুটি গাড়ি আগেই বেরিয়ে গিয়েছিল। বাড়িতে অনেকেই ছাড়া পরে যাওয়ায় সকলকে ওই গাড়িতে করেই নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। তবে এমন ঘটনা ঘটবে তা আমরা ভাবতে পারেনি।’’ পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ছোট গাড়িটিতে চালক সহ ১২ জন যাত্রী নেওয়া যায়। তবে এই গাড়িতে অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই ছিল। যার ফলে চালক নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারেনি বলে অনুমান পুলিশের। জেলার বিভিন্ন রুটে দেখা যায় ছোট গাড়িতে অতিরিক্ত যাত্রী নেওয়া হয়। অনেক সময় গাড়ির ছাদেও যাত্রী নেওয়া হয়। ফলে অতিরিক্ত বোঝাই রুখতে পুলিশ প্রশাসনের কোনও নজরদারি নেই বলে অভিযোগ। মালদহের অতিরিক্ত জেলা শাসক দেবতোষ মন্ডল বলেন, অতিরিক্ত যাত্রী নেওয়ার ক্ষেত্রে আমাদের অভিযান চলে। প্রয়োজনে অভিযান বাড়ানো হবে।