পুজোর মেনুতে বিরিয়ানি থেকে ইলিশ নিগমের লজে

প্রায় একঘেয়েমি রুই কিংবা ছোট মাছের ঝোল আর নয়। সাদামাঠা মুরগির মাংসের ঝোল না পসন্দ হলেও অসুবিধে নেই। রকমারি পকোড়া, ললিপপ, মটন কষা, চিকেন তন্দুরি, চাউমিন, বিরিয়ানি থেকে ইলিশ, পাবদা- বেছে নিতে পারবেন আপনার পছন্দের খাবার।

Advertisement

অরিন্দম সাহা

কোচবিহার শেষ আপডেট: ১৩ অক্টোবর ২০১৫ ০১:৫৬
Share:

প্রায় একঘেয়েমি রুই কিংবা ছোট মাছের ঝোল আর নয়। সাদামাঠা মুরগির মাংসের ঝোল না পসন্দ হলেও অসুবিধে নেই। রকমারি পকোড়া, ললিপপ, মটন কষা, চিকেন তন্দুরি, চাউমিন, বিরিয়ানি থেকে ইলিশ, পাবদা- বেছে নিতে পারবেন আপনার পছন্দের খাবার। অর্ডার করলে পেয়ে যাবেন বেলাকোবার চমচম, লাটাগুড়ির গুড়ের রসগোল্লা, চালসার পানতোয়া কিংবা মালবাজারের কালাকাঁদ। এবার পুজোর মরসুমে পর্যটকদের পচ্ছন্দ অনুযায়ী এমনই সব রকমারি খাবার সরবরাহের পরিকল্পনা নিয়েছে বন উন্নয়ন নিগম কর্তৃপক্ষ। নিগমের নেচার রিসর্ট থেকে রিভার ক্যাম্প কিংবা লজে রাত্রিবাস করলে পর্যটকেরা ওই সুবিধে পাবেন। ইতিমধ্যে আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করে ওই ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন নিগমের চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। প্রস্তুতিও শুরু হয়েছে।

Advertisement

বন উন্নয়ন নিগমের চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “ পুজোর চারদিন অন্য সময়ের মত এক রকম গদ ধরা খাবারের একঘেয়েমি নিয়ে পর্যটকদের অনেকেই আক্ষেপ করতেন। এবার তাই পুজোর মরসুমে মেনু তালিকায় বৈচিত্র্য আনা হচ্ছে। ফলে পর্যটকেরা সহজে পচ্ছন্দের মেনু বেছে নিতে পারবেন। নিগমের আওতাধীন জায়গাগুলিতে রাতে থাকবার ব্যাপারে উৎসাহও অনেকটা বেড়ে যাবে।” রবীন্দ্রনাথবাবাবু জানান, রাজাভাতখাওয়া, মূর্তি সহ ৮টি বাংলোয় পর্যটকদের সুবিধের জন্য হোটেল ম্যানেজম্যান্ট উত্তীর্ণদের তদারকির দায়িত্বও দেওয়া হয়েছে।

নিগম সূত্রেই জানা গিয়েছে, প্রায় সারাবছরই নিগমের বাংলোগুলিতে পর্যটকদের ভিড় থাকে। পুজোর ছুটিতে ওই চাহিদা কয়েকগুণ বেড়ে যায়। প্রকৃতি দেখার টানে পাহাড় থেকে জঙ্গল কিংবা পাহাড়, নদীর পাড়ে রাত্রিবাস করতে পর্যটকরা ছুটে আসেন। এবারেও পুজোর চারদিনের বুকিং প্রায় সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু তারপরেও রাত্রিবাস করতে আসা ওই পর্যটকদের অনেকে পচ্ছন্দের মেনু না পাওয়ায় লাগোয়া হোটেল, রেস্তোরায় যাওয়ার আশঙ্কা নিয়ে উদ্বেগ ছিল। ফি বছর পর্যটকদের একাংশের এমন প্রবণতার বিষয়টি আধিকারিকদের কাছ থেকে জানতে পারেন নিগম চেয়ারম্যান। তারপরেই পর্যটকদের রকমারি মেনু বাছাইয়ের সুযোগ দেওয়ার চিন্তাভাবনা শুরু হয়। নিগমের এক আধিকারিক জানান, বেশিরভাগ জায়গায় ফরেস্ট ডেভলেপমেন্ট কমিটি ও ইকো ডেভোলপমেন্ট কমিটির সদস্যরা ওই খাবার সরবরাহের দায়িত্বে থাকেন। এতে তাঁদের আর্থিক আয় অনেকটা বাড়বে।

Advertisement

নিগমের ওই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা। পর্যটন ব্যবসায়ীদের সংগঠন সূত্রের খবর, বেশিরভাগ রিসর্টেই পর্যটকদের জন্য সাধারণত ভাত, মুরগির মাংস, রুই মাছের ঝোল, ডাল, সব্জী দেওয়া হয়। সকালে পুরি ও সব্জী দেওয়া হয়। পুজোর মরসুমেও তাই রাতের খাবার খেতে অনেককে বাইরের হোটেলে যেত হত। নিগমের উদ্যোগ বাস্তবায়ন হলে এবার ওই সমস্যা মিটবে। ইস্টার্ন হিমালয়ান ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুর অপারেটর্স অ্যাসোসিয়েশনের কার্যকরী সভাপতি সম্রাট সান্যাল বলেন, “ সকালে পুরির বদলে লুচি,মটনের রকমারি পদ, রিসর্টের লাগোয়া এলাকার বিখ্যাত মিস্টি পর্যটকদের দেওয়া হলে তা সত্যিই দারুণ ব্যাপার হবে। এতে এলাকার বিখ্যাত খাদ্য সামগ্রীও বাড়তি পরিচিতি লাভ করবে। পর্যটকদের একাংশেরও অন্যত্র খাবারের খোঁজে যাওয়ার হ্যাপা পোহাতে হবেনা।”

নিগম সূত্রেই জানা গিয়েছে, পাহাড় ডুয়ার্সের লাভা, লোলেগাঁও, কালিম্পং, লেপচাজগত, মংপং, প্যারেন, রাজাভাতখাওয়া, মালঙ্গি, গরুবাথান ছাড়াও জলঢাকা, সুলতানেরখোলা, কোচবিহারের রসিকবিল মিলিয়ে নিগমের ৩২ টি রাত্রিবাস স্থান রয়েছে। তারমধ্যে ১৬টি নেচার রিসর্ট। পুজোর মুখে ইতিমধ্যে জলঢাকা, রিসপ, রাজাভাতখাওয়া, লোলেগাঁওয়ের বাংলোয় নতুন করে সাজা হয়েছে। সবমিলিয়ে শয্যা সংখ্যা ৩০০ টি। এছাড়াও রাজ্যজুড়ে বিভিন্ন বেসরকারি হোটেলে ২০০ শয্যা লিজ নিয়েছে নিগম। নিগমের এক কর্তা জানান, অনলাইন বুকিংয়ে বেসরকারি সংস্থার থেকে ৩০ শতাংশ ভাড়া কমিশন পাবে নিগম কর্তৃপক্ষ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন