কোথায় যায় এত তোলা

তৃণমূলের এক নেতার কথায় ‘‘কাটমানির জাদুতেই সব চলছে।’’ জমির বিক্রির কাটমানি টাকাতেই অনেক নেতা ফুলেফেঁপে উঠেছেন বলেও অভিযোগ।

Advertisement

শুভঙ্কর চক্রবর্তী

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৩ জুন ২০১৯ ০৩:৩৪
Share:

প্রতীকী ছবি।

কয়েকদিন আগেই কাটমানি নিয়ে সতর্কবার্তা দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কাটমানি ফেরত দিতে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার পরেই নিউ জলপাইগুড়ির (এনজেপি) জমি কারবার নিয়ে তৃণমূলের অনেক নেতাও সরব হয়েছেন। এনজেপিতে সরকারি জমি দখল করে মোটা টাকায় বিক্রি করার ঘটনা বারবার প্রকাশ্যে এসেছে। মুখ্যমন্ত্রীও এনজেপিতে জমি মাফিয়াদের দৌরাত্ম্য নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন। উত্তরকন্যায় প্রশাসনিক সভায় পুলিশকে কড়া ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। তারপরও পরিস্থিতির বিশেষ পরিবর্তন হয়নি বলেই অভিযোগ শাসক, বিরোধী দুই শিবিরেই।

Advertisement

তৃণমূলের এক নেতার কথায় ‘‘কাটমানির জাদুতেই সব চলছে।’’ জমির বিক্রির কাটমানি টাকাতেই অনেক নেতা ফুলেফেঁপে উঠেছেন বলেও অভিযোগ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নেতা বলেন, ‘‘জমি বিক্রির কাটমানির টাকা অনেক স্তরেই গিয়েছে। ধরতে শুরু করলে অনেক রাঘববোয়ালের নাম জড়িয়ে যাবে।’’

পুলিশের অনেকেই বলছেন এনজেপিতে কাটমানি প্রথা অনেক পুরনো। বলা হয় ঝালমুড়ি বিক্রেতার কাছ থেকেও এনজেপিতে ‘দাদা’রা সপ্তাহ শেষে টাকা নিয়ে যান। আর জমি বিক্রিতে জড়িয়ে রয়েছে লক্ষ-লক্ষ টাকা। এনজেপিতে স্টেশনের সামনে রেলের সীমানা প্রাচীর ভেঙে পরপর দোকান তৈরি হচ্ছে বলে অভিযোগ। রেল সূত্রে জানা গিয়েছে এনজেপির অম্বিকানগর, সাউথ কলোনি, মাইকেল কলোনি মজুরবস্তি, নেতাজি মোড় ও নানা এলাকায় বিঘার পর বিঘা সরকারি জমি দখল হয়ে গিয়েছে। প্লট করে সেসব জমি লক্ষ-লক্ষ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অনেক জায়গায় বাঁশের বেড়া, লোহার গ্রিল দিয়ে ঘিরে জমি ঘিরে রাখা হয়েছে। সেইসব দখলমুক্ত করতে গিয়ে বার বার বাধার মুখে পড়েছেন রেল কর্মীরা।

Advertisement

কাটমানির ভাগ নিয়ে এনজেপিতে বহুবার দুষ্কৃতীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। চলেছে গুলি, বোমাও। স্থানীয়দের দাবি, বাম আমলে যাঁরা এনজেপির ‘ত্রাস’ ছিলেন তাঁরাই তৃণমূলে যোগ দিয়ে নিজেদের জায়গা ধরে রেখেছেন। ইতিমধ্যেই তাঁদের অনেকে বিজেপিতেও যোগ দিয়েছেন। পুলিশ-প্রশাসনের মতে, জমির কারবার ও তার টাকা নিয়ন্ত্রণ করতেই মাফিয়া ও তাঁদের মদতকারী নেতারা বার বার পতাকা বদল করছেন। ফলে এনজেপিতে জমির কারবার রোখা কতটা সম্ভব হবে তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে বিভিন্ন মহলে। তৃণমূলের এনজেপির নেতা জয়দীপ নন্দীর বক্তব্য, ‘‘বিভিন্ন ঘটনা আছে। দলের শীর্ষ নেতৃত্ব যা ব্যবস্থা নেওয়ার নেবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন