বাইক: তাপস দাসের মোটরবাইক। নিজস্ব চিত্র
সেবকে মোটরবাইক দুর্ঘটনায় মৃত সঙ্ঘমিত্রার বাপের বাড়ির লোক খুনের অভিযোগ দায়ের করল। মঙ্গলবার সঙ্ঘমিত্রা দাসের বাবা সাধন ধর অভিযোগ করেছিলেন, মদ খাইয়ে দুর্ঘটনার দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে তাঁর মেয়ে এবং নাতনিদের। বুধবার তিনি লিখিতভাবে সেই অভিযোগ দায়ের করেন পুলিশের কাছে। যদিও সঙ্ঘমিত্রার স্বামী তাপস দাসের পরিবারের দাবি, দুর্ঘটনার জেরেই মৃত্যু হয়েছে সঙ্ঘমিত্রা ও দুই পরিবারের।
বুধবার পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব তাপসের বাড়িতে যান। পরে সঙ্ঘমিত্রার বাবার বাড়িও যান। দু’টি পরিবারকেই সমবেদনা জানান তিনি। এ দিন মন্ত্রীর কাছেও সঙ্ঘমিত্রার পরিবারের তরফে ক্ষোভ প্রকাশ করে খুনের অভিযোগ করা হয়।
বুধবার তাপসের বাইকের অবস্থা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন সাধনবাবু। তাঁর দাবি, ‘‘মোটরবাইকটিকে ট্রাক ধাক্কা দিয়েছে বলে বারবার আমরা শুনে আসছি। কিন্তু বাইকে একটা প্রচন্ড গতির ট্রাক ধাক্কা দিলে সেটা কী ভাবে অক্ষত থাকল! আমার জামাইয়ের সামান্য চোটও হল না, এ দিকে আমার মেয়ে আর নাতনি মারা গেল এটা কী ভাবে হতে পারে?’’ মন্ত্রী গৌতম দেব সঙ্ঘমিত্রাদের বাড়ি থেকে বেরিয়ে বলেন, ‘‘ঘটনাটি খুবই দুঃখের। অভিযোগ হয়েছে। পুলিশ নিরপেক্ষ তদন্ত করে দেখবে।’’ মন্ত্রীর সঙ্গে এ দিন তৃণমূলের প্রাক্তন জেলা সভাপতি প্রতুল চক্রবর্তীও ছিলেন।
গত রবিবার সেবক থেকে ফেরার পথে দুর্ঘটনায় ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের দেবাশিস কলোনির বাসিন্দা তাপস দাসের স্ত্রী সঙ্ঘমিত্রা এবং দুই মেয়ে প্রিয়স্মিতা এবং ঋত্বিকা প্রাণ হারায়। পঙ্কজ বলেন, ‘‘ফেরার পথে ট্রাকটি ওভারটেক করতে গিয়ে দাদাদের মোটরবাইকের ডান দিকে ধাক্কা মারে। তাতে বৌদি এবং ভাইঝিরা ডানদিকে এবং দাদা গাড়ি নিয়ে বাঁ দিকে পড়ে।’’ তাঁর দাবি, ‘‘তাপস এখনও মানসিক অবসাদে। হাতে ব্যথা। এই সময় এসব অভিযোগ একেবারেই ভিত্তিহীন।’’
সেবক থানা সূত্রে জানা গিয়েছে, বাইকটি দুর্ঘটনার পরেও প্রায় অক্ষত ছিল। ঘটনাস্থল থেকে সেটি পুলিশকর্মীরাই চালিয়ে নিয়ে গিয়েছেন সেবক ফাঁড়িতে। বাইকের পিছনে ট্রাকের ধাক্কার কোনও চিহ্ন পুলিশকর্মীরা পাননি। পঙ্কজ বাইকটি বাঁদিকে পড়ার কথা বললেও, তাপসের বাইকটির ডানদিকে লেগগার্ডে ধাক্কার দাগ রয়েছে। বাইকটি এখন সেবক ফাঁড়িতেই রাখা হয়েছে।
সাধনবাবুর পরিবারের তরফে এটা নিয়েই প্রশ্ন তোলা হয়েছে বার বার। তাঁদের দাবি, দুর্ঘটনাস্থল থেকে ফিরেই পাড়ায় ট্রাকের ধাক্কার কথা বলেছিলেন তাপসরা। সাধনের পরিবারের প্রশ্ন, প্রচন্ড গতিতে ট্রাক ধাক্কা দিলে বাইকটি চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার মতো অবস্থায় থাকল কী ভাবে। এই নিয়ে ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের মতামত নেওয়ার দাবি তুলেছেন সাধনবাবু। দার্জিলিং জেলা পুলিশ সুপার অখিলেশ চতুর্বেদী বলেন, ‘‘অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনার তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’’