খেলোয়াড়: হ্যান্ডবল দল। নিজস্ব চিত্র
আঁটো পোশাকে মেয়েরা ফুটবল খেলবে কেন। এই প্রশ্ন তুলেই বাসিন্দাদের একাংশ বাধা দিয়েছিন। তাতে মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের চন্ডীপুরে ভেস্তে গিয়েছিল জাতীয় মহিলা দলের ফুটবল খেলা। তার দু’বছর পর প্রতিবাদ দিবস হিসেবে ওই মাঠেই হ্যান্ডবল খেলল মেয়েরা।
রবিবার বিকেলে চন্ডীপুর প্রগ্রেসিভ ইয়ুথ ক্লাবের উদ্যোগে ওই খেলার আয়োজন করা হয়েছিল।
মেয়েদের খেলাধুলায় আগ্রহী করে তুলতে ২০১৫-র ১৪ মার্চ ক্লাবের ৫০ বছর পূর্তিতে ওই ফুটবল ম্যাচের আয়োজন হয়েছিল। খেলার কথা ছিল জাতীয় মহিলা দলের একাধিক খেলোয়াড়কে নিয়ে তৈরি কলকাতা একাদশ ও উত্তরবঙ্গ একাদশের। খেলার কথা ছিল হ্যান্ডবল ও বাস্কেটবল দলের জাতীয় অধিনায়ক ও কোচ অনিতা রায়, একমাত্র মহিলা অর্জুনপ্রাপ্ত খেলোয়াড় শান্তি আইচ মল্লিকের। ফিফা রেফারি অনামিকা সেন খেলা পরিচালনা করতেন। কিন্তু শেষ মুহূর্তে আইনশৃঙ্খলার প্রশ্ন তুলে প্রশাসনের তরফে ম্যাচ বন্ধ করে দেওয়ায় রাজ্য জুড়ে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছিল।
রবিবারের ম্যাচ ঘিরে ছিল বিপুল উন্মাদনা। মাঠে মহিলাদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। দু’বছর আগে ম্যাচ বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হরিশ্চন্দ্রপুর-১ ব্লকের বিডিও বিপ্লব রায় এ দিন বলেন, ‘‘এখন মনোভাব পাল্টেছে। এটা ভালো দিক।’’
ক্লাবের সভাপতি রেজা রাজি অবশ্য ওই ঘটনায় দমে যাননি। মেয়েদের খেলাধুলায় আগ্রহী করতে তিনি ক্রমাগত প্রচেষ্টা করে গিয়েছেন। তার স্বীকৃতি স্বরূপ দ্য টেলিগ্রাফ এডুকেশন ফাউন্ডেশন তাঁকে লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট ফর এ টিচারের সম্মানও দিয়েছে।
রেজা রাজি বলেন, ‘‘মেয়েদের আগ্রহী করতে পেরেছি। খেলাধুলার গুরুত্ব অভিভাবকরা বুঝতে পেরেছেন। এটাই সাফল্য।’’ এ দিনের হ্যান্ডবল ম্যাচের পর সেকিলা খাতুন, আদুরি খাতুনরাও উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছেন।
অনিতা রায় এ দিন বলেন, ‘‘ম্যাচ বাতিলের ঘটনা আমাদের কাছে এখনও যন্ত্রণার স্মৃতি হয়েই রয়েছে।’’ কিন্তু পরিস্থিতি পাল্টেছে ভেবে ভালো লাগছে বলেও জানান তিনি। খেলোয়াড় ও আয়োজকদের অভিনন্দন জানিয়েছেন তিনি।