হলুদ আমে ছয়লাপ বৈশাখী বাজার

জামাই ষষ্ঠীর সময়ে সাধারণত বাজার ছেয়ে যায় পাকা আমে। বৈশাখের মাঝামাঝি বাগানের গাছগুলোয় এখন ঝুলছে কাঁচা আম। অথচ বাজারে দেদার বিকোচ্ছে হলুদ পাকা আম। অভিযোগ, দাম পাওয়ার লোভে একাংশ ব্যবসায়ী অপুষ্ট কাঁচা আমকে কার্বাইড দিয়ে পাকিয়ে বাজারে নামিয়ে দিয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মালদহ শেষ আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০১৭ ০২:২৩
Share:

পাকা: কার্বাইডে পাকানো এই আমেই ভরেছে বাজার । নিজস্ব চিত্র

জামাই ষষ্ঠীর সময়ে সাধারণত বাজার ছেয়ে যায় পাকা আমে। বৈশাখের মাঝামাঝি বাগানের গাছগুলোয় এখন ঝুলছে কাঁচা আম। অথচ বাজারে দেদার বিকোচ্ছে হলুদ পাকা আম। অভিযোগ, দাম পাওয়ার লোভে একাংশ ব্যবসায়ী অপুষ্ট কাঁচা আমকে কার্বাইড দিয়ে পাকিয়ে বাজারে নামিয়ে দিয়েছে। ভিনরাজ্য থেকেও কাঁচা আম আমদানি করে কার্বাইডে পাকিয়ে চড়া দামে বিক্রি করা হচ্ছে। স্বাস্থ্যের পক্ষেও যা ক্ষতিকারক বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের পাশাপাশি বিশেষজ্ঞরা।

Advertisement

আম বিশেষজ্ঞ কমলকৃষ্ণ দাস বলেন, ‘‘মে মাসের শেষের দিকে গোপালভোগ, জুনের প্রথম সপ্তাহে হিমসাগর, ল্যাংড়া, লক্ষণ ভোগ আম পাকে। এখন যে সব আম বাজারে বিক্রি হচ্ছে সবই কার্বাইডে পাকানো।’’ মানবদেহের পক্ষে কার্বাইড ক্ষতিকারক বলে উন্নয়নশীল দেশে তা বন্ধ বলে জানিয়েছেন কমল বাবু। তিনি বলেন, এ বিষয়ে স্বাস্থ্য দফতর ও উদ্যান পালন দফতরের কর্তাদের নজরদারি প্রয়োজন।

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, কার্বাইডে অ্যাসিটিলিন গ্যাস থাকে। যার ফলে শরীরে ক্যানসার পর্যন্ত হতে পারে। এমনকী, কার্বাইডে আর্সেনিক থাকার ফলে ডায়েরিয়া, বুকে এবং পেটে যন্ত্রণা হতে পারে। একই সঙ্গে কার্বাইডের ফলে নার্ভেরও সমস্যা হতে পারে। ঘুম হবে না, চোখের পাতা জ্বালা করবে এবং খিঁচুনি হবে বলে জানিয়েছেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিক দিলীপকুমার মণ্ডল। তিনি বলেন, ‘‘এ ছাড়া আমরাও বাগানে নজরদারি চালাব।’’

Advertisement

ব্যবসায়ীদের কাছে জানা গিয়েছে, বাজারে এখন বিকোচ্ছে গোলাপখাস, পারকোম্যান আম। চেন্নাই থেকে এই কাঁচা আম আমদানি করে কার্বাইডে তা পাকিয়ে বাজারে ৬০-৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হচ্ছে। চলতি সপ্তাহের পর থেকেই বাজারগুলোয় গোপালভোগের মতো জেলার আমও নেমে যাবে।

আম ব্যবসায়ী সুনীল সরকার, সুমিত দাসেরা বলেন, ‘‘আমরা পাইকারদের কাছ থেকে আম কিনে এনে খুচরো বাজারে বিক্রি করি। এখন অন্য রাজ্যের আম বিক্রি করছি।’’ আম ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক উজ্জ্বল চৌধুরী বলেন, ‘‘আমের ব্যবসা কখনও লাভ হয়। কখনও লোকসান। তাই বাধ্য হয়েই ব্যবসায়ীদের একাংশ এমন পদ্ধতিতেই আম পাকান। দেশ জুড়ে মালদহের আমের কদর থাকলেও এখন তা সুনাম হারাচ্ছে। উদ্যান পালন দফতরের সহ অর্ধিকর্তা রাহুল চক্রবতী বলেন, ‘‘আমরা নিয়মিত সচেতনতামূলক প্রচার চালাই। এ বারও প্রচার চালানো হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন