ছেলেধরা সন্দেহে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে মারার অভিযোগ উঠল। রবিবার সাড়ে ছটা নাগাদ শিলিগুড়ির নকশালবাড়ির থানার হাতিঘিষা এলাকায় সেফদুল্লা জোতে ঘটনাটি ঘটেছে। পুলিশ জানায়, মৃতের নাম শেখ নিসারউদ্দিন (৩৬)। বাড়ি দিনহাটায়। পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্রেই জানা গিয়েছে, আদিবাসী অধ্যুষিত ওই এলাকায় কয়েক দিন ধরেই চাউর হয়েছে ছেলেধরা ঘুরে বেড়াচ্ছে। তা নিয়েই এলাকায় নানা কানাঘুষো চলছে। এ দিন সন্ধ্যার মুখে ছেলেধরা সন্দেহে ওই ব্যক্তির উপর হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ। বাঁশ, লোহার রড দিয়ে পিঠিয়ে মারা হয় বলে অভিযোগ। বাড়ি কোচবিহারের দিনহাটাতে হলেও তিনি ওই এলাকায় কী করছিলেন, তা স্পষ্ট নয় পুলিশের কাছে। ওই ঘটনায় রাতেই পুলিশ স্থানীয় ৬ যুবককে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে। পুলিশ সুপার অমিত জাভালগি বলেন, ‘‘ঘটনার তদন্ত চলছে। জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করা হয়েছে।’’
স্থানীয় বাসিন্দাদের কয়েকজনই জানিয়েছেন, নকশালবাড়ি, খড়িবাড়ি ফাঁসিদেওয়া এলাকায় ছেলেধরা নিয়ে গুজব ছড়িয়েছে। সন্ধার পর থেকেই চা বাগান অধ্যুষিত গ্রামগুলিতে বাসিন্দারা বাঁশ, রড, টাঙি, খুকরি নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। এ দিন বিকেলের দিকে বিজয়নগর চা বাগান লাগোয়া হাতিঘিষার সেফদুল্লা জোত গ্রামে দিনহাটার ওই ব্যক্তি ঘেরাফেরা করছিলেন বলে অভিযোগ। সেখানে কয়েক জন ছেলেছোকরা খেলাধূলা করছিল। তাদের কয়েকজনকে ডেকে তারা আম খাবে কি না, জিজ্ঞাসা করেন ওই ব্যক্তি। তা নিয়েই কচিকাঁচাদের মধ্যে সন্দেহ দেখা দেয়। তার মধ্যে এলাকায় গুজব ছড়ানোয় কচিকাঁচারাও সন্দেহের চোখে দেখছে। তারা এলাকার কয়েক জনকে খবর দিলে লোকজন ভিড় করে ওই ব্যক্তিকে ঘিরে ধরে। তিনি কোথা থেকে এসেছেন, কেন এসেছেন জানতে চান। কয়েক জন ধমকাতে শুরু করেন। ভয়ে ওই ব্যক্তি এক একবার এক এক রকম ঠিকানা বলছিলেন বলে অভিযোগ। এর পরেই তাকে বেধড়ক পেটাতে শুরু করেন কয়েকজন বাসিন্দা। বাঁশ রড দিয়ে পেটানো চলতে থাকে।
এলাকার স্থানীয় তৃণমূল নেতা তথা আইএনটিটিইউসি’র জেলা নেতৃত্বের অন্যতম নির্জল দে বলেন, ‘‘কাছেই এক জায়গায় সংগঠনের কাজ করছিলাম। ছেলেধরা বলে একজনকে পেটানো হচ্ছে বলে খবর পাই। আমরা কয়েকজন সেখানে পৌঁছনোর আগেই ওই ব্যক্তিকে পিটিয়ে মারা হয়।’’ এই ঘটনায় এলাকায় পুলিশ ধরপাকড় শুরু করেছে। পুলিশ সূত্রেই জানা গিয়েছে, মৃতের কাছে ভোটার পরিচয়পত্রও মিলেছে। মূলত চা বাগান এলাকাগুলিতে ছেলেধরা নিয়ে গুজব রটেছে।