পথ দুর্ঘটনায় মৃত বাইক চালক। —নিজস্ব চিত্র
বন্ধুকে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছতে গিয়ে মোটরবাইক দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল চালক যুবকটির। আহত হয়ে হাসপাতালে বসেই পরীক্ষা দিলেন উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। বৃহস্পতিবার সকাল ন’টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে মালদহের ইংরেজবাজার থানার মাদিয়াঘাট এলাকায়। ঘটনায় মালদহ-মানিকচক রাজ্য সড়কে যান চলাচল কিছু ক্ষণের জন্য ব্যাহত হয়। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃত আদিত্য মণ্ডল (২২) মালদহ কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন। ইংরেজবাজার থানার নিয়ামতের কৃষ্ণনগর গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন তিনি। আহত উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার নাম রাজকুমার ঘোষ। এ দিন মিল্কি গ্রামীণ হাসপাতালে বসেই পরীক্ষা দেন রাজকুমার। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। মালদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দীপক সরকার বলেন, ‘‘লরিকে ওভারটেক করতে গিয়ে টোটোর সঙ্গে মোটরবাইকের মুখোমুখি সংঘর্ষেই দুর্ঘটনাটি ঘটে বলে প্রাথমিক অনুমান।’’
রাজকুমার ইংরেজবাজারের নঘরিয়া হাই স্কুলের ছাত্র। তাঁর পরীক্ষার সিট পড়েছে শোভানগর হাই স্কুলে। এ দিন সকালে রাজকুমারকে বাইকে করে পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছতে যান প্রতিবেশী আদিত্য। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান আদিত্য পড়শোনায় ভাল ছিল। স্থানীয় সূত্রে খবর, রাজকুমারকে পেছনে বসিয়ে বাইকে শোভানগরের দিকে যাচ্ছিলেন আদিত্য। সেই সময় শোভানগরের দিকে যাওয়া একটি লরিকে ওভারটেক করতে যান তিনি। উল্টো দিক থেকে আচমকা একটি টোটো চলে আসায় আদিত্য নিয়ন্ত্রণ হারান, উল্টে যায় বাইক। ট্রাকের তলায় পিষ্ট হয়ে যান বাইক চালক। আর বাইক থেকে পড়ে গিয়ে আহত হয় ওই উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী।
বাসিন্দারা আহতদের উদ্ধার করে প্রথমে নিয়ে যান মিল্কি গ্রামীণ হাসপাতালে। তবে আদিত্যের অবস্থা আশঙ্কাজনক থাকায় তাঁকে তড়িঘড়ি স্থানান্তরিত করা হয় মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। ঘটনায় স্বভাবতই ভেঙে পড়েছেন মৃতের পরিবারের লোকেরা। মৃতের বাবা অশোক মণ্ডল বলেন, ‘‘আমাদের সব শেষ হয়ে গেল। কী করে এমন হল কিছুই বুঝতে পারছি না।’’
নঘরিয়া হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক সুনীলকুমার সরকার বলেন, ‘‘ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। মৃত যুবক আমাদের স্কুলেরই প্রাক্তন ছিল।’’