স্বামীর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের প্রতিবাদ করায় স্ত্রীকে পুড়িয়ে মারার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে স্বামী-সহ শ্বশুরবাড়ির লোকেদের বিরুদ্ধে। রবিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে মালদহের বৈষ্ণবনগর থানার ভগবানপুর গ্রামে। ওই বধূ আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন মালদহ মেডিক্যালে। সোমবার সকালে তাঁর পরিবারের লোকেরা স্বামী-সহ শ্বশুর বাড়ির পাঁচ জনের নামে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্তেরা পলাতক। পুলিশ জানিয়েছে, মহিলার নাম হাওয়া বিবি।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, সাত বছর আগে বৈষ্ণবনগর থানার কুম্ভীরা গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দা আনুয়ারা বেওয়ার ছোট মেয়ে হাওয়া খাতুনের সঙ্গে বিয়ে হয় কৃষ্ণপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ভগবানপুরের বাসিন্দা তৈমুর শেখের। তাঁদের তিনটি মেয়ে রয়েছে। তৈমুর জমিতে চাষের কাজ করেন। হাওয়া বিবি বাড়িতে বিড়ি বাঁধার কাজ করতেন। অভিযোগ, তৈমুরের এক অন্য মহিলার সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে বলে মাস ছয়েক আগে জানতে পারেন ওই মহিলা। সেই সম্পর্কের প্রতিবাদ করায় হাওয়া বিবিকে প্রায়ই মারধর করা হতো। ফলে পরিবারের অশান্তি নিত্য দিনের হয়ে উঠেছিল। হাওয়া সমস্ত ঘটনাটি তাঁর বাপের বাড়ির লোকেদের জানিয়েছিলেন। তাঁরা মারধর করতে নিষেধ করলেও তৈমুর কোনও কথা শুনত না বলে অভিযোগ। এমনকী তাঁর পরিবারের সদস্যরাও প্রতিবাদ করতেন না।
এ দিন রাতে হাওয়া বিবিকে তাঁর স্বামী তৈমুর, তাঁর দুই দাদা, বৌদি এবং শাশুড়ি মিলে গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে তাঁকে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা করে বলে অভিযোগ। মহিলার চিৎকারে পড়শিরা ছুটে গেলে অভিযুক্তেরা ঘর থেকে পালিয়ে যায়। তার পর তাঁকে প্রথমে বেদরাবাদ গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা আশঙ্কাজনক অবস্থায় স্থানান্তরিত করেন মালদহ মেডিক্যালে।
এ দিন সকালে হাওয়ার দাদা ভুটু শেখ পাঁচ জনের নামে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তিনি বলেন, ‘‘আগে কোনও অশান্তি ছিল না। হঠাৎ করে আমার বোনের উপর অত্যাচার শুরু করে ওরা। আমরা ওদের শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’’ বৈষ্ণবনগর থানার আইসি অসীম গোঁফ বলেন, ‘‘পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযুক্তেরা ফেরার। তাদের খোঁজ চলছে।’’