শাসক দলে যোগ দিয়েই বদল জিয়ার

পড়াশোনায় ভাল ছিলেন জিয়াউর রহমান। প্রথম বিভাগে মাধ্যমিক পাশ করার পরে উচ্চ মাধ্যমিক পড়তে গিয়েছিলেন কলকাতায়। তারপর অবশ্য লেখাপড়া ছেড়ে দিয়েছেন। হরিশ্চন্দ্রপুরের গ্রামীণ হাসপাতালে গিয়ে হুমকি দেওয়ায় অভিযুক্ত তৃণমূলের যুব নেতা জিয়াউর আগে শান্ত, ঘরোয়া স্বভাবের ছিলেন বলেও জানা গিয়েছে স্থানীয় সূত্রে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মালদহ শেষ আপডেট: ২২ জুন ২০১৫ ০৩:৩২
Share:

পড়াশোনায় ভাল ছিলেন জিয়াউর রহমান। প্রথম বিভাগে মাধ্যমিক পাশ করার পরে উচ্চ মাধ্যমিক পড়তে গিয়েছিলেন কলকাতায়। তারপর অবশ্য লেখাপড়া ছেড়ে দিয়েছেন। হরিশ্চন্দ্রপুরের গ্রামীণ হাসপাতালে গিয়ে হুমকি দেওয়ায় অভিযুক্ত তৃণমূলের যুব নেতা জিয়াউর আগে শান্ত, ঘরোয়া স্বভাবের ছিলেন বলেও জানা গিয়েছে স্থানীয় সূত্রে।

Advertisement

হঠাৎ করে বছর তিনেক মধ্যে স্বভাবের পরিবর্তন ঘটে তাঁর। হয়ে ওঠেন বদ মেজাজি—এমনটাই দাবি জিয়াউরের পরিবারের একাংশ এবং দলের। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর যুব তৃণমূল করতে শুরু করেন তিনি। যুব তৃণমূলের কর্মী হওয়ার সুবাদে পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে ছিল তাঁর অবাধ যোগাযোগ। দল ও তাঁর পরিবারের কারও কারও দাবি, ক্ষমতার দম্ভই বদলে দিয়েছে জিয়ার স্বভাবকে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, হরিশ্চন্দ্রপুরের স্টেশন রোড লাগোয়া এলাকায় বসবাস করেন জিয়াউররা। এলাকায় তাঁদের পরিবারকে সবাই এক ডাকে চেনেন। কারণ এলাকায় শিক্ষিত পরিবার হিসেবে পরিচিত তাঁরা। জিয়ার বাবা অবসরপ্রাপ্ত প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক বছর চারেক আগে মারা গিয়েছেন। তাঁরা চার ভাই। সব থেকে ছোট জিয়াই। তাঁর বড়ো দাদা বিদেশে। তিনি ইঞ্জিনিয়ার। এক দাদা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। এক দাদা এখনও চাকরি পাননি। তাঁর সব দাদারাই আলাদা থাকেন। বাড়িতে বলতে একমাত্র বৃদ্ধা মা।

Advertisement

পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বহুবার বলা সত্ত্বেও জিয়াউর উচ্চমাধ্যমিকের পরে আর পড়াশোনা করতে চাননি। বছর সাতেক আগে উত্তর দিনাজপুরে ইটাহারে বিয়ে হয় তাঁর। একটি পাঁচ বছরের ছেলেও রয়েছে। তবে তাঁর ছেলে এবং স্ত্রী থাকেন ইটাহারে। কলেজে না পড়ার দরুন ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না তিনি। তবে রাজ্যে পালাবদলের পর তিনি যুব তৃণমূল করতে শুরু করেন। রাজনীতিতে হাতেখড়ি হরিশ্চন্দ্রপুর ১ ব্লকের প্রাক্তন ব্লক সভাপতি বিকাশ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছ থেকেই। প্রথমে দলের সক্রিয় কর্মী থাকলেও পরে জেলা যুব তৃণমূলের সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হয়। এই দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই জিয়ার মধ্যে পরিবর্তন আসতে শুরু করে বলে দাবি দলের একাংশের। হরিশ্চন্দ্রপুর থানায় যাতায়াত শুরু হয় তাঁর। এমনকি এলাকায় তোলাবাজি করতে শুরু করেন বলেও অভিযোগ। যার জেরে দলের অনেক নেতাই ক্ষুব্ধ। বিকাশবাবু বলেন, ‘‘আগে খুব ভালো ছিল জিয়া। হঠাৎ করে কেন এমন হয়ে গেল আমরা বুঝতে পারছি না।’’

হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতালের মহিলা স্বাস্থ্যকর্মীকে হুমকি দেওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তাঁর এক আত্মীয় তথা জেলা কংগ্রেসের সাধারন সম্পাদক মোস্তাক আলমও। তিনি বলেন, ‘‘জিয়া খুব শান্ত স্বভাবের ছিল। শাসক দলে যোগ দেওয়ার পরেই এমন পরিবর্তন হয় তার। সে যে ঘটনাটি ঘটিয়েছে তা কখনও সমর্থনযোগ্য নয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন