সিপিএমের নতুন দফতরে ‘বিস্মিত’ মালবাজার

দলের খরার সময়, ১৯৮৩ তে তৈরি মালবাজারেরে সিপিএম জোনাল কার্যালয়ের এমন ভোলবদল দেখে সাধারণ বাসিন্দা ও অন্যান্য রাজনৈতিক দলের কর্মীদের চোখ কপালে উঠে গিয়েছে।

Advertisement

সব্যসাচী ঘোষ

মালবাজার শেষ আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০১৭ ০৩:০১
Share:

নবনির্মিত: মালবাজারে এই ভবন নিয়েই জল্পনা। নিজস্ব চিত্র

এ যেন ফিনিক্স পাখির মতো জেগে ওঠার গল্প। ডুয়ার্সের চা বলয়ের প্রধান শহর মালবাজারে জোনাল সিপিএম কার্যালয়ের ভোলবদল দেখে এমন মনে হওয়াটাই স্বাভাবিক। যে দলের দু-দু’জন জোনাল সম্পাদক দল বদলে তৃণমূলে চলে গিয়েছেন, আটকানো যায়নি দলীয় বিধায়ককেও, সেই ক্ষয়িষ্ণূ দলের কর্মীরাই ভাটার টান অগ্রাহ্য করে সাজিয়ে তুলছেন নিজেদের দলীয় কার্যালয়কে। দ্বিতল কার্যালয়টিকে তিন তলা করা হচ্ছে। সংস্কার করা হচ্ছে পুরনো ঘরগুলোর। কর্মীদের সভা করার ঘর, অফিস ঘর, এমন কী ভাল মানের রান্নাঘর ও শৌচাগারও তৈরি করা হচ্ছে।

Advertisement

দলের খরার সময়, ১৯৮৩ তে তৈরি মালবাজারেরে সিপিএম জোনাল কার্যালয়ের এমন ভোলবদল দেখে সাধারণ বাসিন্দা ও অন্যান্য রাজনৈতিক দলের কর্মীদের চোখ কপালে উঠে গিয়েছে। কোথা থেকে হল টাকার জোগাড়, চর্চা চলছে তা নিয়েও। সিপিএমের মালবাজার এলাকার নেতা, যাদের তদারকিতে এই কর্মকাণ্ড চলছে সেই রাজা দত্ত , পার্থ দাসরা বলেন, ‘‘৫ লক্ষ টাকার মতো বাজেট ধরে এই কাজ শুরু হয়েছে। এর পুরোটাই কর্মীদের দানের অর্থে করা হচ্ছে। এমনকি দলের সঞ্চিত তহবিলেও হাত দিতে হয়নি।’’ চা বলয়ের খুব উল্লেখযোগ্য এই কার্যালয়টিকে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই নতুন রূপে খুলে দিয়ে চান তাঁরা। ঘটা করে উদ্বোধনের ইচ্ছে রয়েছে বলেও তাঁরা জানিয়েছেন।

দলীয় কার্যালয় সাজিয়ে তুলতে মালবাজারের কর্মীদের এমন মনোভাবে চা বলয়ের সংগঠনে সদর্থক প্রভাব পড়বে বলেও মনে করেন জলপাইগুড়ি জেলা সিপিএমের সম্পাদক সলিল আচার্য। সলিলবাবুর কথায়, ‘‘যারা মালবাজারে দল ছেড়েছেন তাঁরা যে আমাদের কোন ক্ষতিই করতে পারেননি তা এতেই পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে। চা শ্রমিকেরা যাতে মালবাজারের কার্যালয়ে বসে ভালোভাবে বৈঠক করতে পারেন তার জন্যেই এই নির্মাণ।’’

Advertisement

অন্যদিকে মালবাজারের তৃণমূলের নেতা তথা পুরসভার চেয়ারম্যান স্বপন সাহা বলেন , ‘‘বড় ভবন মানেই বড় সংগঠন ওদের এই ধারণা তো আমরা কবেই ভেঙে দিয়েছি। আলিমুদ্দিন, শিলিগুড়িতে বড় বড় কার্যালয় থাকা সত্ত্বেও তো সিপিএমের ভরাডুবি এড়ানো সম্ভব হয় নি।’’

বিজেপির তরফে অবশ্য সিপিএম তৃণমূল যোগসাজশের অভিযোগ করা হয়েছে। জলপাইগুড়ি জেলা বিজেপির পরিদর্শক দীপ্তিমান সেনগুপ্ত বলেন ‘‘যেখানে বিজেপিকে রুখতে সিপিএম-তৃণমূল এক হয়ে যায়, সেখানে এত বড় ভবনের অর্থও একযোগে আসছে কিনা, তা নিয়ে আমাদের সন্দেহ আছে তবে এ সব করে তৃণমূল বা সিপিএম কেউই আমাদের বিন্দুমাত্র সমস্যায় ফেলতে পারবে না।’’ ভাটার টান কাটিয়ে পঞ্চায়েত ভোটের আগে নতুন এই ভবন দলীয় কর্মীদের কতটা বাড়তি অক্সিজেন যোগাতে পারে সেটাই এখন দেখতে চাইছে সব পক্ষ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন