‘অন্য’ ভাই ফোঁটায় মাতল উত্তরবঙ্গ

জলপাইগুড়ির অনাথ শিশু এবং কিশোরদের সরকারি আবাসন কোরক হোমের আবাসিকদের ভাইফোঁটা দিলেন জলপাইগুড়ির মেয়েরা। শনিবার হোম প্রাঙ্গনেই ভাইফোঁটা হয় জেলারই একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন স্পন্দনের উদ্যোগে। উপহার দেওয়া থেকে খাওয়া-দাওয়া, বাদ যায়নি কিছুই। ভাইফোঁটা অনুষ্ঠানে কিছুই বাদ যায়নি। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জলপাইগুড়ির মহকুমাশাসক সীমা হালদার বলেন, “অনাথ শিশু-কিশোরেরা যাতে উত্‌সাহিত হয়, সেজন্য সরকারিভাবে আমরা এই ধরনের অনুষ্ঠানে সহযোগিতা করব।”

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৬ অক্টোবর ২০১৪ ০০:৫৯
Share:

রায়গঞ্জে হোম চত্বরে ভাইফোঁটায় সামিল মূক-বধির আবাসিকেরা। ছবি: তরুণ দেবনাথ।

জলপাইগুড়ির অনাথ শিশু এবং কিশোরদের সরকারি আবাসন কোরক হোমের আবাসিকদের ভাইফোঁটা দিলেন জলপাইগুড়ির মেয়েরা। শনিবার হোম প্রাঙ্গনেই ভাইফোঁটা হয় জেলারই একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন স্পন্দনের উদ্যোগে। উপহার দেওয়া থেকে খাওয়া-দাওয়া, বাদ যায়নি কিছুই। ভাইফোঁটা অনুষ্ঠানে কিছুই বাদ যায়নি। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জলপাইগুড়ির মহকুমাশাসক সীমা হালদার বলেন, “অনাথ শিশু-কিশোরেরা যাতে উত্‌সাহিত হয়, সেজন্য সরকারিভাবে আমরা এই ধরনের অনুষ্ঠানে সহযোগিতা করব।”

Advertisement

দুই ভাগে ফোটা নেন ৮৪ জন আবাসিক। হোমের আধিকারিক তাপস দাস বলেন, কোরকের আবাসিক সমস্ত সদস্য এদিন ভাইফোঁটা নিয়েছে। কোরকের আবাসিকরা নিজেদের হাতে বানানো কার্ড, এক প্যাকেট ক্যাডবেরি এবং একটি করে কলম উপহার দেন বোনেদের। স্পন্দনের পক্ষ থেকে কোরকের প্রত্যেক আবাসিকের হাতে একটি করে মিষ্টির প্যাকেট এবং কলম দেওয়া হয়। খেলার জন্য ক্রিকেট সেট ও ফুটবলও দেওয়া হয়। স্পন্দনের সম্পাদক অঞ্জন ঘোষ জানান, এই নিয়ে দশ বছরে পড়ল এই অনুষ্ঠান।

কোরক হোমের ৮ বছরের বাসিন্দা বিজিত মিঞ্জ, ৫ বছরের বাসিন্দা সুরেশ দেব বাহাদুররা বলেন, “ভাইফোঁটা আর সরস্বতী পুজোর দিন দু’টোর জন্য সারা বছর অপেক্ষা করি। ভাইফোঁটায় আমাদের বোনেরা ফোঁটা দেয় এবং সরস্বতী পুজো আমরা নিজেরাই করি। খুব মজা হয়।”

Advertisement

রায়গঞ্জেও ৬০ জন মূক ও বধির আবাসিক কিশোর কিশোরীকে এ দিন ভাইফোঁটায় সামিল করেন সমাজকল্যাণ দফতরের অধীনস্থ রায়গঞ্জের সূর্যোদয় মূক ও বধির আবাসিক হোম কর্তৃপক্ষ। সারা দিন ছিল অনুষ্ঠান। হোমের তরফে তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয় নতুন পোশাক ও আতসবাজি। বিশেষ খাওয়া-দাওয়ারও ব্যবস্থা করা হয়। হোমের অধ্যক্ষ পার্থসারথি দাস বলেন, “মূক ও বধির আবাসিকদের সাময়িক আনন্দ দিতেই হোমের নিজস্ব তহবিলের টাকায় ভাইফোঁটার অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।”

হোম সূত্রের খবর, বর্তমানে ওই হোমে ৬০ জন মূক ও বধির কিশোর ও কিশোরী রয়েছে। তাদের পৃথকভাবে রাখা হয়। এদিন সকালে ওই কিশোরদের ফোঁটা দেয় কিশোরীরা। মিষ্টিমুখের পরে দুপুরে খাওয়া দাওয়া হয়। সন্ধ্যায় তারা হোমের মাঠে আতসবাজি ফাটিয়ে উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠে।

এ দিন বিকেলেই রতুয়ার চাঁদপুরে নিজের বাড়িতে বিধায়ক সমর মুখোপাধ্যায়কে ফোঁটা দেন মালদহ জেলা পরিষদের শিক্ষা, সংস্কৃতি, তথ্য ও ক্রীড়া স্থায়ী সমিতির কংগ্রেস কর্মাধক্ষ্য দিলারা খানম। প্রতিবেশী ভাইদেরও ফোঁটা দেন তিনি। সবাইকে লুচি মিষ্টি খাওয়ান তিনি। আড়াইডাঙার প্রধান অমল পাঠক, দলের ব্লক সভাপতি নিমাই বসাকও তাঁর কাছ থেকে ফোঁটা পেয়েছেন। দিলারা বলেন, “সাম্প্রদায়িকতার ঊর্ধ্বে উঠে সবাই যাতে মিলেমিশে থাকতে পারি, তা দেখা প্রত্যেকের দায়িত্ব। এখানেও দুই সম্প্রদায়ের মানুষ মিলেমিশে বসবাস করেন। সে জন্যই হিন্দু দাদা-ভাইদের ভাইফোঁটা দিলাম।” বালুরঘাটের ডাঙি সীমান্তেও এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার উদ্যোগে বিএসএফ জওয়ানদের ফোঁটা দেওয়া হয়। বালুরঘাটের সরকারি হোম শুভায়নের অনাথ ও দুঃস্থ আবাসিক পড়ুয়াদের জন্য ভাইফোঁটার ব্যবস্থা করে স্থানীয় একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা।

মালবাজারে আবার তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের উদ্যোগে ভাইফোঁটা পালিত হয়েছে এ দিন। সারা দিন মালবাজার বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অনুষ্ঠান চলে। সংগঠনের জেলা সভাপতি মিঠু মোহান্ত, সাধারণ সম্পাদক বেথুনবিকাশ দে-রা ছাড়াও ছিলেন জলপাইগুড়ির সাংসদ বিজয়চন্দ্র বর্মন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন