নারায়ণপুরে রাষ্ট্রপতি।
ইঞ্জিনিয়ারিং ও টেকনোলজি ইন্সটিটিউটের ভবন উদ্বোধন অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ করা নিয়ে গনি পরিবারের বিরোধ প্রকাশ্যে এসেছে। শুক্রবার দুপুরে নারায়ণপুরে গনি খানের নামাঙ্কিত ওই কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রশাসনিক ভবনের উদ্বোধন করেন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়। কলেজের অন্যতম দুই উদ্যোক্তা হলেন সাংসদ আবু হাসেম খান চৌধুরী ও তাঁর দাদা বিধায়ক আবু নাসের খান। তাঁরা কেউই তাঁদের ভাগ্নী তথা উত্তর মালদহের কংগ্রেস সাংসদকে অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ করেননি বলে অভিযোগ। এমনকী, অনুষ্ঠানের কার্ডেও সাংসদ হিসেবে মৌসমের নাম ছাপা হয়নি কেন, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ মৌসম বলেছেন, “গনি খান চৌধুরী নামাঙ্কিত ইন্সটিটিউটটি মামা আবু নাসের খান চৌধুরী ব্যাক্তিগত সম্পত্তি নয়। এই ইন্সটিটিউট কেন্দ্রীয় মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রের অধীন। যে এলাকায় এই ইন্সটিটিউটটি গড়ে উঠছে সেটি আমার সাংসদ এলাকায় পড়ে। আমার এলাকায় আমার বড় মামা গনি খান চৌধুরীর নামে ইন্সটিটিউটের উদ্বোধন হচ্ছে অথচ সাংসদ হিসাবে আমার নাম অনুষ্ঠানের কার্ডে না ছাপিয়ে আমাকে অপমান করা হয়েছে। আমাকে আমন্ত্রণই জানানো হয়নি। আমাকে অপমান করা হয়েছে। প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের মন্ত্রীর কাছে নালিশ জানাব।”
ওই কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচালন সমিতির চেয়ারম্যান হলেন আবু নাসের খান চৌধুরী। তিনি ও তাঁর ভাই আবু হাসেম খান একযোগে দাবি করেন, “আমরা মৌসমকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম। ও কেন আসে তা জানি না। ও সেটা বলতে পারবে।” কার্ডে নাম না ছাপানোর প্রশ্ন শুনে আবু হাসেম খান বিরক্তি প্রকাশ করেন। তাঁর অভিযোগ, “আমাদের পরিবারের মধ্যে ঝগড়া বাঁধানোর জন্য নানা চেষ্টা হচ্ছে।”
কোতোয়ালির বাড়িতে গনি পরিবারের সদস্যবৃন্দ ও রাজ্যপালের সঙ্গে।
এদিন অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি জানান, প্রয়াত গনি খান চৌধুরীকে তাঁর বন্ধু ছিলেন। তিনি বলেন, “বরকত সাহেবের বহুদিনের স্বপ্ন ছিল মালদহে একটি বিশ্ববিদ্যালয় গড়বেন। ১৯৭৭ সালে আমি এই মালদহে লোকসভার প্রার্থী হয়েছিলাম। বরকত সাহেব ১৯৮০ সাল থেকে আমৃত্যু সাংসদ ছিলেন। শুধু মালদহের নয়, উত্তরবঙ্গ তথা পশ্চিমবঙ্গকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন। তিনি উপলব্ধি করেছিলেন, মালদহ তথা উত্তরবঙ্গের পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গ বিহার ঝাড়খণ্ডে বেকারদের কর্মসংস্থান বাড়াতে গেলে এই ধরনের প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজন।”
এদিন দুপুর ১ টায় জিকেসিআইটি-র উদ্বোধন করে রাষ্ট্রপতি সড়কপথে কোতোয়ালি যান। সঙ্গে ছিলেন রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী। সেখানে গনি খান চৌধুরীর মাজারে ফুল চড়িয়ে কোতোয়ালিতে গনি পরিবারের সঙ্গে মধ্যাহ্নভোজ সেরে দুপুর আড়াইটে নাগাদ রাষ্ট্রপতি কপ্টারে কলকাতার উদ্দেশে রওনা দেন। এদিন রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে নারায়ণপুরে মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু চৌধুরী রাষ্ট্রপতিকে স্বাগত জানান। আর এক মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্র রাষ্ট্রপতিকে বিদায় জানতে হাজির ছিলেন।
—নিজস্ব চিত্র।