যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও একাধিক সংস্থাকে গ্রামীণ পরিকাঠামো উন্নয়ন তহবিলের ২৮ কোটি টাকার কাজ পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠায় দরপত্র বাতিল করল কোচবিহার জেলা পরিষদ। মঙ্গলবার ওই সিদ্ধান্ত হয়েছে। পরিষদ সূত্রের খবর, কোচবিহার জেলা পরিষদের টেন্ডার কমিটি ওই দরপত্র পাশ করে জেলাশাসকের কাছে পাঠান। নিয়মানুযায়ী জেলাশাসক তাতে সম্মতি দিয়ে ফের জেলা পরিষদে পাঠানোর কথা এবং পরে অর্থ স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সংস্থাগুলিকে কাজ শুরুর অনুমতি দেওয়ার কথা। কিন্তু জেলাশাসক পি উল্গানাথন, ওই দরপত্র নিয়ম মেনে করা হয়নি বলে জানিয়ে দেন। তিনি লিখিত ভাবে ‘অসন্তোষ’ জানিয়ে কোচবিহার জেলা পরিষদের সভাধিপতি পুস্পিতা ডাকুয়াকে ওই দরপত্র বাতিল করে পুনরায় দরপত্রের জন্য উদ্যোগ নিতে বলেন। এর পরেই জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে তা বাতিল করার সিদ্ধান্ত হয়।
এই ব্যাপারে সভাধিপতি বলেন, “অনিয়মের একাধিক অভিযোগ থাকায় ওই দরপত্র বাতিল করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বৈঠক করে পুনরায় ওই দরপত্রের জন্য প্রক্রিয়া শুরু হবে।” কোচবিহারের জেলাশাসক পি উল্গানাথন সরাসরি ওই দরপত্র নিতে অসন্তোষের কথা জানিয়েছেন। তিনি জানান, ১১ টি কাজের দরপত্র পাশ করানো হয়। তার মধ্যে ১০ টির ক্ষেত্রে কোনও আইন মানা হয়নি। তিনি বলেন, “ওই দরপত্র নিয়ে আমি সন্তুষ্ট নই। সে জন্যই তা বাতিল করে পুনরায় দরপত্র প্রক্রিয়া করতে বলেছি।”
কোচবিহার জেলা পরিষদের টেন্ডার কমিটির চেয়ারম্যান পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ চৈতী বর্মন বড়ুয়া। তাঁর বিরুদ্ধেই মূলত ওই দরপত্রগুলি পাশ করানোর অভিযোগ ওঠে। তিনি বলেন, “নিয়মানুযায়ী কোনও সংস্থা বা ব্যক্তির কাগজপত্র ঠিক রয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখার কথা বাস্তুকারদের। তাঁরা আমাকে জানিয়েছেন সব কাগজ ঠিক রয়েছে। তাই যারা কম দর দিয়েছেন তাঁদের কাগজপত্র পাশ করানো হয়েছে।”
বাস্তুকারদের একজন অবশ্য দাবি করেছেন, তাঁরা সতর্ক করে দেওয়ার পরেও ওই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন টেন্ডার কমিটির চেয়ারম্যান। ফরওয়ার্ড ব্লকের কোচবিহার জেলা সম্পাদক উদয়ন গুহ বলেন, “জেলা পরিষদের কাজের ব্যাপারে বামেদের কিছুই জানানো হয় না। সব চুপি চুপি হয়। এভাবেই টাকা নয়ছয় হচ্ছে।”
বিজেপির কোচবিহার জেলার সাধারণ সম্পাদক নিখিল রঞ্জন দে বলেন, “দায় এড়ালে হবে না। কমিটির চেয়ারম্যান হয়ে তিনি কয়েকজন বাস্তুকারের উপরে দোষ চাপাচ্ছেন। আমরা ঘটনার তদন্ত ও উপযুক্ত শাস্তির দাবি করছি।”